
গরম পড়তেই বাজার ছেয়েছে তরমুজে। গ্রীষ্মকাল এই ফলের জুড়ি মেলা ভার। গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং দেহে জলের চাহিদা পূরণ করতে তরমুজ দারুণ উপকারী। তাছাড়া গরমকালে লাল, মিষ্টি তরমুজ খেতে কে না ভালবাসে। বিশেষত, গরমের দুপুরে তাজা তরমুজ বা এক গ্লাস ঠান্ডা তরমুজের শরবত শরীরকে চাঙ্গা করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বেশিরভাগ মানুষই ঠান্ডা তরমুজ খেতে ভালবাসেন। অনেকেই তরমুজ কেটে ফ্রিজে রেখে দেন। আবার কেউ কেউ বাজার থেকে কেনা তরমুজ গোটা অবস্থাতেই ফ্রিজে ঢুকিয়ে দেন। কিন্তু জানেন কি, ফ্রিজে তরমুজ রাখা উচিত নয়?
গরমকালে শরীরে জল ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে তরমুজ। যেহেতু এই ফলের মধ্যে ৯২ শতাংশ জল থাকে, তাই গরমে তরমুজ খেলে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি তৈরি হয় না। তাছাড়া ফলের পরিমাণ বেশি থাকায় তরমুজ শরীরে জমে থাকা সমস্ত বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এছাড়া এই মরশুমে তরমুজ খেলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকী আপনি যদি নিয়ম করে তরমুজ খান, আপনার ওজনও কমে যাবে। কারণ এই ফলে ক্যালোরির গুণ কম।
ত্বকের জেল্লা বাড়াতেও তরমুজ দারুণ কার্যকর। তরমুজের মধ্যে লাইকোপেন রয়েছে। এই যৌগ ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। গরমে তরমুজ খেলেই বাড়বে আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। কিন্তু যখনই আপনি তরমুজকে ফ্রিজে রেখে খান, তখনই নষ্ট হয়ে যায় এর পুষ্টিগুণ। কেউ তরমুজ কিউব আকারে কেটে ফ্রিজে রাখেন। আবার অনেকে অধেক তরমুজ কেটেও ফ্রিজে রাখেন। আর এই উৎকট গরমে ঠান্ডা তরমুজের শরবত গলায় ঢালার মজাই আলাদা। কিন্তু এভাবে তরমুজ খেতে ভাল লাগলেও স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল বিষয় নয়।
ফ্রিজে তরমুজ রাখলে এই ফলের পুষ্টিগুণ কমে যায়। ‘জার্নাল অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রি’তে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, ফ্রিজের চাইতে ঘরের উষ্ণতাতে তরমুজ রাখা ভাল। ৭০, ৫৫ ও ৪১ ডিগ্রি ফারেনহাইট উষ্ণতায় ১৪ দিন ধরে তরমুজ রেখে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে তরমুজ রাখলে এই ফলের বেশি পুষ্টিগুণ মেলে। সুতরাং, এরপর আর ভুলেও ফ্রিজে তরমুজ রাখবেন না।
ফ্রিজে তরমুজ রাখলে শুধু যে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়, তা নয়। তরমুজের স্বাদও বদলে যায়। আর যদি কাটা অবস্থায় তরমুজ রাখেন, তাতে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এভাবে তরমুজ খাওয়া একদমই উচিত নয়। তাছাড়া ফ্রিজে অনেকেই সবজির সঙ্গে ফল রাখেন। এটাও ঠিক নয়। এতে কাটা ফলের মধ্যে আনাজের গন্ধ ধরে নিতে পারে। তাই ফ্রিজে তরমুজ সংরক্ষণ করা এড়িয়ে চলুন।