
বাঙালির হেঁশেলে ঘিয়ের দেখা মিলবে না, এমনটা স্বপ্নেও ভাবা কঠিন। রান্নায় স্বাদ বাড়ানো ছাড়াও ঘিয়ের গুণ অনেক। তাই তো আয়ুর্বেদে ঘিয়ের ব্যাপক ব্যবহার। কখনও সর্দি-কাশি কমাতে, আবার কখনও বদহজম দূর করতে। ভিটামিন এ, ডি, এ এবং কে-এর মতো পুষ্টিতে ভরপুর ঘি। এছাড়াও ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে ঘিয়ের মধ্যে। এসব পুষ্টিগুলো ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে, হাড়কে মজবুত রাখে, ত্বকে ভাল রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়। ঘিয়ের মধ্যে শারীরিক প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা রয়েছে। আয়ুর্বেদে কোন-কোন ক্ষেত্রে ঘি ব্যবহার হয়, দেখে নিন।
হজম স্বাস্থ্য: পাচনতন্ত্রের লুব্রিকেট হিসেবে পরিচিত ঘি। এই হজম স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। রোজ এক চামচ করে ঘি খেলে, এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
ক্ষত সারায়: ঘিয়ের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে, যা ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে। ছোটখাটো কাটাছেঁড়া, পোড়ার উপর ঘিয়ের প্রলেপ লাগাতে পারেন। এতে ত্বকের ক্ষত দ্রুত সেরে উঠবে এবং আরাম মিলবে।
জয়েন্টের স্বাস্থ্য: ঘিয়ের মধ্যে বুটিরিক অ্যাসিড রয়েছে, যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে। এটি হাড় ও গাঁটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ঘি খেলে আরথ্রাইটিসের ঝুঁকি কমে। এছাড়া আপনি ঘি গরম করে জয়েন্টের উপর মালিশ করতে পারেন। এতে গাঁটের কঠোরতা (স্টিফনেস) ও অস্থিরতা থেকে মুক্তি পাবেন।
ত্বকের স্বাস্থ্য: ঘিয়ের মধ্যে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে রয়েছে, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখে। এতে শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রোজ রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মুখে ঘি মালিশ করুন। এতে ত্বকের টেক্সচার ও টোন উন্নত হবে। এছাড়া বলিরেখার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
ফুসফুসের স্বাস্থ্য: আয়ুর্বেদে কিছু মশলা ও ভেষজ উপাদান দিয়ে ঘি তৈরি করা হয়। এতে ঘিয়ের গুণাগুণ আরও বেড়ে যায়। এই ধরনের ঘি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সর্দি-কাশির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এছাড়া হলুদ বা আদার সঙ্গে ঘি মিশিয়েও খাওয়া যায়। এতে ফুসফুসের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দূর হয়।
ডার্ক সার্কেল: ঘি খেলে দৃষ্টিশক্তি উন্নত হয়। তার থেকেও বেশি ঘি উপযোগী ডার্ক সার্কেল দূর করতে। অল্প ঘি চোখের চারপাশে মালিশ করুন। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখে। পাশাপাশি চোখের নিচের ফোলাভাব দূর করে।