
সুস্থ থাকতে হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। কেউ বলেন ৬-৬-৬ নিয়ম মেনে হাঁটার কথা। কেউ বলেন প্রতিদিন ১০ হাজার পা হাঁটলেই দূরে থাকে বহু কঠিন ব্যধিও। কিন্তু সত্যিটা কী? নতুন গবেষণা কিন্তু বলছে ১০,০০০ নয় মাত্র ৭ হাজার পা সঠিক নিয়ম মেনে হাঁটতে পারলেই হয়ে যায় কাজ। থাকা যায় সুস্থ। ল্যানসেট পাবলিক হেলথে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে উঠে আসছে তেমনই তথ্য।
ভারত সহ বিশ্বের ১.৬ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপর করা হয় এই গবেষণা। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ৭,০০০ পা হাঁটা একাধিক জটিল অসুখের ঝুঁকি কমায় এমনকি আগেভাগে মৃত্যুর সম্ভাবনাও কমাতে পারে।
এই গবেষণা অনুসারে প্রতিদিন হাঁটার কেবল হার্ট ভাল থাকা নয় রয়েছে আরও একাধিক স্বাস্থ্যগুণ, যা হয়তো আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। হৃদরোগ ছাড়াও ডায়াবেটিস, ডিপ্রেশন, ডিমেনশিয়া, ক্যানসারের মতো রোগের সঙ্গে লড়াই করতেও গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে এই হাঁটা।
প্রতিদিন ৭০০০ পা হাঁটলে কী কী উপকার হয়?
১। যে কোনও কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে। গবেষণার দাবি মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যেতে পারে প্রায় ৪৭ শতাংশ।
২। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় প্রায় ২৫ শতাংশ।
৩। ডিমেনশিয়ার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে প্রায় ৩৮ শতাংশ।
৪। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে ১৪ শতাংশ।
৫। ক্যানসারের ঝুঁকি কমে প্রায় ৬ শতাংশ।
৬। ডিপ্রেশন বা অবসাদের ঝুঁকি কমে প্রায় ২২ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বর্তমানে ভারতে লাইফস্টাইল ডিজিজ, যেমন – উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। অফিসে দীর্ঘ সময় বসে থাকা, শহরের যানজটের মধ্যে দীর্ঘ সময় যাতায়াত, এবং অনিয়মিত রুটিনের কারণে শারীরিক চলাফেরা অনেক কমে গেছে।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারাণা এই গবেষণা ভারতের কোটি কোটি মানুষের জন্য আশার খবর। আজকের অত্যন্ত ব্যস্ত লাইফস্টাইলে নিয়মিত দীর্ঘ সময় ব্যায়াম করা বা জিমে যাওয়ার সময় জোটে না সকলের। সেই ক্ষেত্রে ম্যাজিক সলিউশন হতে পারে মাত্র ৭০০০ পা হাঁটা।
গবেষকেদের দাবি, ১০,০০০ পা হাঁটার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এই গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৪,০০০ থেকে ৭,০০০ পা হাঁটলেই সুস্থ থাকার জন্য যথেষ্ট সুফল মেলে।
দিনে কত পা হাঁটলেন তাও ট্র্যাক করা সহজ। বর্তমান সময়ে প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোন বা ফিটনেস ব্যান্ডেই দৈনিক কত পা হাঁটলেন তা গোনা যায়। তাই নিজের ব্যয়াম ট্র্যাক করতে বা পর্যবেক্ষণ করতে দ্বিতীয় কাউকে প্রয়োজন নেই। গবেষকদের দাবি, এই ধরণের স্টেপ কাউন্টিং ব্যবস্থা আগামী দিনে পাবলিক হেলথ ক্যাম্পেইন, হেলথ ইন্স্যুরেন্স ইনসেনটিভ, এমনকি স্কুল বা অফিসের ওয়েলনেস প্রোগ্রামেও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।