
শীতকাল মানেই বাজার ভরে ওঠে টাটকা সবজিতে। গাজর, মুলো, টমেটো, ফুলকপি প্রতিটি সবজি নিজের ঝলক দেখায়। কিন্তু এই রঙিন ভিড়ের মাঝেই এক নীরব নায়ক আছে, নাম তার পালং শাক (Spinach)। আয়রনসমৃদ্ধ এই শাককে অনেকে ‘সবজির রাজা’ বলে থাকেন। কারণ পুষ্টিগুণে এবং রান্নার নানাভাবে ব্যবহারের জন্য এটি সত্যিই অনন্য। সাধারণত পালং শাক খাওয়া হয় তরকারি, ডাল, বা বিভিন্ন কারিতে। কিন্তু আপনি কি কখনও পালং শাকের আচার খেয়েছেন? এই অনন্য রেসিপি শীতের টেবিলে আনতে পারে একেবারে নতুন স্বাদ।
শীতের সময় পালং শাক সবচেয়ে বেশি টাটকা ও পুষ্টিকর থাকে। কম দামে সহজলভ্য হওয়ার পাশাপাশি এই শাকে আছে আয়রন, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন A, C, K এবং ফাইবার। নিয়মিত পালং খেলে বাড়ে ইমিউনিটি, হজম শক্তি ও রক্তস্বল্পতার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। তাই শীতে পালং শাককে “সবজির রাজা”র পর্যায়ে রাখার যথেষ্ট কারণই রয়েছে।
আচার মানলেই মাথায় আসে কাঁচা লঙ্কা, লেবু, লাল লঙ্কা বা মিক্স ভেজিটেবল। পালং শাকের আচার অবশ্য খুব প্রচলিত নয়, কিন্তু স্বাদে ও গন্ধে একেবারে অন্যরকম। ভাত, রুটি বা খিচুড়ির সঙ্গে জমে যায় দুর্দান্তভাবে। আর সবচেয়ে বড় কথা এটি বানানো যায় খুব কম সময়ে।
পালং শাক ২০০ গ্রাম (ভাল করে ধুয়ে শুকনো করে নিন), সর্ষের তেল হাফ কাপ, রসুন ৮-১০ কোয়া, শুকনো লাল লঙ্কা ৪–৫টি, সর্ষে ও মেথি দানা ১ চা চামচ করে, হলুদ গুঁড়ো হাফ চা চামচ, লাল লঙ্কাগুঁড়ো ১ চা চামচ, নুন স্বাদ অনুযায়ী, ভিনিগার ২ টেবিল চামচ, চিনি ১ চা চামচ (ইচ্ছে হলে)।
পালং শাক ধুয়ে সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিন। জল থাকলে আচার নষ্ট হতে পারে। একটি প্যানে সর্ষের তেল ভালোভাবে ফোড়ন দিন। তেল গরম হলে রসুন, শুকনো লঙ্কা, সর্ষে ও মেথি দিন। সমস্ত মশলা ফাটতে শুরু করলে পালং শাক দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। এ বার হলুদ, লঙ্কাগুঁড়ো, নুন ও চিনি দিয়ে নেড়ে দিন। পালং শাক ভালভাবে মেশানো হলে গ্যাস বন্ধ করে ৫ মিনিট ঠান্ডা হতে দিন। শেষে ভিনিগার মিশিয়ে শুকনো কাচের বোতলে ভরে রাখুন। দুই দিন রোদে রাখলে আচারটি আরও স্বাদ বাড়াবে।
শীতের রসনাতৃপ্তির তালিকায় পালং শাকের আচার যুক্ত করতে আর দেরি কেন? সবজির রাজার মতোই পালং শাক পুষ্টিগুণে জিতে নেয় মন, আর আচার হয়ে ওঠে স্বাদের রাজা। এই সহজ রেসিপি শুধু নতুন স্বাদই দেবে না, বরং শীতের রান্নাঘরে এনে দেবে নতুনত্বের ঝলক।