
শীতকাল মানেই ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। আর এই সমস্যার চটজলদি সমাধানে অনেকেই ভরসা রাখেন গ্লিসারিনের ওপর। গ্লিসারিন (Glycerin) নিঃসন্দেহে একটি দারুণ হিউমেকট্যান্ট। যা পরিবেশ থেকে আর্দ্রতা টেনে এনে ত্বকের ভেতর ধরে রাখে। কিন্তু এই উপকারী উপাদানটিই যদি দেদার বা অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়, তবে লাভের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ, খাঁটি গ্লিসারিন খুব ঘন ও আঠালো হওয়ায় তা সরাসরি লাগালে ত্বক আরও শুষ্ক বা চিটচিটে হয়ে যেতে পারে। তাই ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে ঠিক কতটা পরিমাণে এবং কীভাবে গ্লিসারিন ব্যবহার করা উচিত, তা জানা অত্যন্ত জরুরি।
গ্লিসারিন সরাসরি, অর্থাৎ আনডাইলুটেড অবস্থায় ত্বকে ব্যবহার করা উচিত নয়। এর ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারণে এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা টেনে নিতে পারে, বিশেষ করে যদি পরিবেশের বাতাস খুব শুষ্ক হয়। এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সবসময় একে জলের সঙ্গে বা অন্য কোনও উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে পাতলা করে নিতে হবে।
সবচেয়ে নিরাপদ ও জনপ্রিয় পদ্ধতি হল ১ ভাগ গ্লিসারিনের সঙ্গে ৩ থেকে ১০ ভাগ গোলাপ জল বা সাধারণ জল মিশিয়ে নেওয়া। এই মিশ্রণটি রাতে ঘুমানোর আগে তুলা বা কটন প্যাডের সাহায্যে টোনার হিসেবে বা হালকা ময়েশ্চারাইজার হিসেবে মুখে ও হাতে লাগান। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জলের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন
ফেসপ্যাক তৈরি করার সময় অন্যান্য উপকরণের (যেমন- বেসন, দুধের সর, মধু, অ্যালোভেরা জেল) সঙ্গে মাত্র কয়েক ফোঁটা (২-৩ ফোঁটা) গ্লিসারিন ব্যবহার করুন। এই প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বাইরে থেকে ফিরে মুখ পরিষ্কার করতে ১ চামচ কাঁচা দুধের সঙ্গে ১ চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। মিশ্রণটি তুলোয় নিয়ে আলতো করে মুখে ম্যাসাজ করে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
স্নানের জলে ২-৩ চামচ গ্লিসারিন ও সমপরিমাণ গোলাপ জল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে স্নানের পর ত্বক সহজে শুষ্ক হবে না।
গ্লিসারিন হল শীতকালে ত্বকের জন্য এক জাদু উপাদান, কিন্তু এর কার্যকারিতা নির্ভর করে সঠিক পরিমাণের ওপর। গ্লিসারিন জল বা গোলাপ জলের সঙ্গে সঠিক অনুপাতে মিশিয়ে ব্যবহার করলেই আপনি পাবেন নরম, উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত ত্বক। তাই শীতে ত্বকের যত্ন হোক পরিমিত গ্লিসারিনের ছোঁয়ায়।