
সাধারণত প্রখর গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহে ত্বকের সমস্যা যেন আরও বেড়ে গিয়েছে। ত্বকের যত্নের পদ্ধতিগুলি মনে করে না মেনে চললে তার সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। সানস্ক্রিন, ময়েশ্চারাইজার নয়, ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি প্রদান করাও উচিত। এই গরমে ত্বকের সমস্যা যাতে না হয়, সূর্যের তাপকে ভেল্কি দেখিয়ে ত্বককে হাইড্রেটেড ও সোনার মতো উজ্জ্বল রাখতে রয়েছে বেশ কিছু সহজ উপায়, সেগুলি কী কী, তা জেনে নিন…
ত্বকের যত্নের জন্য সবচেয়ে জরুরী হল মুখ পরিষ্কার করা বা ক্লিনিজং। গ্রীষ্মকালে সাবধানে মুখ ধোওয়া উচিত। তাপপ্রবাহ থেকে রেহাই পেতে, আরাম পেতে মুখে বারবার জলের ঝাপটা দেওয়ার মত কাজ অধিকাংশই করে থাকি। যদি তৈলাক্ত ত্বক হয়, তাহলে ফোমিং ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। আর যদি শুষ্ক ও কম্বিনেশন স্কিন হয়, তাহলে ফোম নয় এমন ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য জেল-ভিত্তিক ফেসওয়াশ সেরা। এছাড়া এই গরমে দিন দুবার থেকে তিনবার মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করা দরকার।
ছিমছাপ মেকআপ
বৈশাখ পড়তে না পড়তেই বিয়ের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই শুভ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও মেকআপ করুন খুব সিম্পল। চরম গরমে মুখের ত্বককে শ্বাস নিতে মেকআপ করুন খুব কম। ভালো মানের সানস্ক্রিন ও একটি ময়েশ্চারাইজারের পাশাপাশি ফাউন্ডেশন লাগাতে পারেন। লিপস্টিকের থেকে লিপবাম ব্যবহার করলে ঠোঁট থাকবে হাইড্রেটেড। অতিরিক্ত গরমে চোখের মেকআপ থেকে এড়িয়ে চলাই উচিত। তাই ত্বকের যত্ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই সিম্পল টিপস ফলো করতে পারেন।
এক্সফোলিয়েশন
মৃতকোষ জমে থাকলে তা পরিষ্কার করে ত্বককে হাইড্রেটেড ও গভীরভাবে পরিষ্কার করে তোলে। তাতে ত্বক স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারে। অক্সিজেনের সরবরাহও আগের তুলনায় বৃদ্ধি পায়। গরম হাওয়া ত্বক নিস্তজ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে। স্নান করার আগে মুখ ও হাত-পায়ের ত্বকে পছন্দের স্ক্রাব ব্যবহার করে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। প্রাকৃতিকভাবে যদি এক্সফোলিয়েশন করতে চাইলে মুলতানি মাটি, কফি, সি বা রক সল্ট, তেল দিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে ত্বককে এক্সফোলিয়েট করতে পারেন। সপ্তাহে দুই বা তিনবার এই প্যাক প্রয়োগ করতে পারেন।
সানস্ক্রিন ছাড়া গতি নেই
কাঠফাটা রোদ বলেই নয়, সারাবছর ঘর থেকে বাইরে বের হলেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। আর গরমকালে তো সানস্ক্রিন ছাড়া বাইকে বের হওয়াই উচিত নয়। ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে, ট্যান থেকে দূরে রাখতে ভালো মানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত দরকারী। তবে আজকার তো বাড়ির ভিতরেও সানস্ক্রিন প্রয়োগ করার পরামর্শ দেন চর্মবিশেষজ্ঞরা। মুখ নয়, হাত, পা, কান, ঠোঁটেও এসপিএফ ৩০-এর সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত। দীর্ঘক্ষণ বাইরে থাকলে সঙ্গে সানস্ক্রিন রেখে দিন।
টোনার ব্যবহার
টোনার হল সব ধরণের ত্বকের জন্য টোনার ব্যবহার করা প্রয়োজন। ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল বের করে দিতে ও ত্বকের ছিদ্রপথগুলি ছোট করতে, ত্বককে আরাম দিতে টোনার ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে মুখের টি জোনের অংশে টোনার লাগাতে পারেন। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে গোটা মুখেই টোনার লাগাতে পারেন। গ্রীষ্মকালে টোনার ব্য়বহার করলে ত্বক থাকে হাইড্রেটেড। তাই শসা ও অ্যালোভেরার নির্যাস প্রয়োগ করলে আরাম পাবেন বেশি।
হাইড্রেটিং
যে কোনও ঋতুর চেয়ে এই কড়কড়ে গরমে ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করা সবচেয়ে বেশি। তবে এই সময় হালকা লোশন ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত। তাহলেই ত্বক থাকবে হাইড্রেটেড ও সুস্থ। শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতেও জলের ঘাটতি কখনও করা দরকার নেই। এছাড়া হাইড্রেটিং মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর ও ময়েশ্চারাইড ত্বককের জন্য সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার
ত্বকের সমস্যা জন্য শুধু প্রশাধনী পণ্য নয়, ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে ডিনার পর্যন্ত খেতে হবে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার। মুখে ব্রেকআউট থেকে রেহাই পেতে ডায়েটে একটি ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। এছাড়া এমন খাবার খান, যেগুলিতে রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রেহাই পেতে মরসুমি ফলের রস খেতে পারেন। নারকেল জল, ফলের জুস খেতে পারেন।