
অফিস রোম্যান্স (Office Romance) শুনলেই অনেকের মনে নানা স্মৃতি দোলা দেয়। তবে এটা নতুন কিছু নয়। কর্মক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সহকর্মীর প্রতি ভাল লাগা তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু জানেন কি, এই অফিস রোম্যান্সের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে! হ্যাঁ সমীক্ষা তেমনটাই বলছে।
সম্প্রতি ডেটিং প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যাশলে ম্যাডিসন’ (Ashley Madison)-এর পক্ষ থেকে YouGov-এর সহযোগিতায় একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা করা হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, জার্মানি, ভারত, ইতালি, মেক্সিকো, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন যুক্তরাজ্য সহ মোট ১১টি দেশের প্রায় ১৩ হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর এই সমীক্ষা করা হয়। সেই সমীক্ষার ফল সামনে আসতেই উঠে এসেছে বেশ কিছু অবাক করা তথ্য।
সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে প্রেমের সম্পর্ক বা অফিস রোম্যান্স স্বীকার করার ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ভারতের স্থান দ্বিতীয়। এই সমীক্ষায় যে তথ্য বেরিয়েছে, তাতে শীর্ষস্থানে মেক্সিকো। সেখানে প্রায় ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতা স্বীকার করেছেন যে তাঁরা তাঁদের সহকর্মীর সঙ্গে ডেট করেছেন বা বর্তমানে করছেন। ভারতের সাধারণ জনসংখ্যার উত্তরদাতাদের ৪০ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা হয় সহকর্মীর সঙ্গে প্রেম করেছেন অথবা বর্তমানে সম্পর্কে রয়েছেন।
ভারতের এই হার আমেরিকা, ব্রিটেন এবং কানাডার মতো দেশগুলির (যেখানে প্রায় ৩০ শতাংশ) তুলনায় অনেকটাই বেশি। সমীক্ষায় দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা দেখতে গেলে পুরুষরা (৫১ শতাংশ) মহিলাদের (৩৬ শতাংশ) তুলনায় সহকর্মীর সঙ্গে ডেট করার ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহী। মহিলারা পেশাগত জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনকে মেলাতে যাওয়ার ফল সম্পর্কে তুলনামূলকভাবে বেশি সতর্ক। প্রায় ২৯ শতাংশ মহিলা মনে করেন, কর্মক্ষেত্রে প্রেমের সম্পর্ক তাঁদের কেরিয়ারে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। অন্যদিকে, প্রায় ৩০ শতাংশ পুরুষরা ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা বা ব্যক্তিগত ফল নিয়ে মহিলাদের চেয়ে বেশি চিন্তিত।
সমীক্ষার একটি আকর্ষণীয় বিষয় হল, ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ কর্মীরা এই বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৩৪ শতাংশই কেরিয়ারে সম্ভাব্য খারাপ প্রভাবের জন্য কর্মক্ষেত্রে সম্পর্ক তৈরি করা থেকে বিরত থাকেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের কর্মজীবী মানুষের মধ্যে সম্পর্কের এই ক্রমবর্ধমান উদারতা এক ধরনের অ-ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক (Non-traditional Relationships) যেমন ‘ওপেন ম্যারেজ’ এর দিকে ক্রমবর্ধমান উন্মুক্ততার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই সমীক্ষার ফল দেখে বলা যায়, কাজের পরিবেশ এখন শুধুমাত্র পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং অনেকের জীবনের নতুন সম্পর্কের জন্মস্থানও বটে। তবে, পেশাগত সীমানা এবং নীতির বিষয়ে সচেতন থাকাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।