
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য অনেকেই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকেন। আরও ভাল ভাবে বললে বিভিন্ন সেলিব্রিটিদের দেখে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর দিকে ঝুঁকছেন নতুন প্রজন্মের অনেকেই। অথচ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদদের সঙ্গে কোনও পরামর্শ করার মধ্যে যান না। কতক্ষণ অন্তর খাবার খাবেন, কী খাবেন সেদিকেও মন দেন না। যা কিন্তু আখেড়ে ক্ষতি করে আপনার। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে শরীরে কী কী হয় জানেন?
১। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া –
দীর্ঘক্ষণ না খেলে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যায়। এর ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা, হাত কাঁপা, ঝিমুনি বা এমনকি অজ্ঞান হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
২। পেশি ক্ষয় –
শরীর দীর্ঘ সময় খাবার না পেলে প্রথমে গ্লুকোজ, পরে জমা ফ্যাট ব্যবহার করে শক্তি পায়। কিন্তু অতিরিক্ত উপোসে শরীর প্রোটিন ভেঙে পেশি থেকে শক্তি নিতে শুরু করে, ফলে পেশি ক্ষয় হয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি শরীরকে দুর্বল ও নিস্তেজ করে ফেলে।
৩। বিপাকীয় হার ধীর হয়ে যাওয়া –
বারবার অতিরিক্ত সময় উপোস রাখলে শরীর শক্তি সঞ্চয়ের জন্য বিপাকীয় হার কমিয়ে দেয়। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমা কঠিন হয়ে পড়ে এবং সামান্য খাবার খেলেও দ্রুত ওজন বাড়তে পারে।
৪। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট –
দীর্ঘ সময় না খাওয়ার ফলে কর্টিসল, ইনসুলিন এবং থাইরয়েড হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকের অনিয়ম, চুল পড়া, ত্বক শুষ্ক হওয়া এবং হরমোনজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫। গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা –
খালি পেটে দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়, যা গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, বুক জ্বালা এবং পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
৬। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া –
প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ না পেলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৭। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি –
দীর্ঘক্ষণ উপোসে ব্লাড সুগার কমে যাওয়ার কারণে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, মনোযোগ কমে যায় এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অবসাদ অনুভূত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এমন অবস্থা থাকলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগও বেড়ে যায়।