কোলেস্টেরল বেড়েছে, এরপরও কি সর্ষের তেলে মাছ ভেজে খাওয়া যাবে?

Mustard Oil for Cholesterol: খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত কোনও খাবার খাওয়া চলে না। তাই সবার প্রথমে ডায়েটে তেলে বদল আনতে বলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা পরামর্শ‌ দেন, কম তেলে রান্না করার। সাদা তেল ব্যবহার না করার। কিন্তু একবারও সর্ষের তেল বন্ধ করার কথা বলেন না। কেন জানেন?

কোলেস্টেরল বেড়েছে, এরপরও কি সর্ষের তেলে মাছ ভেজে খাওয়া যাবে?

|

Jan 15, 2024 | 2:07 PM

বেগুন ভাজা থেকে মুসুর ডাল সাঁতলানো, ব্যবহার হয় শুধু সর্ষের তেল। বাঙালির হেঁশেলে সর্ষের তেলের কদরই বেশি। কিন্তু একবার কোলেস্টেরল ধরা পড়লেই মাথায় হাত পড়ে যায়। তখন সবচেয়ে বেশি চিন্তা কোন তেলে রান্না করব? মাছ ভাজা থেকে চিকেন কষা, সর্ষের তেল ছাড়া চলে না। সেখানে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে সর্ষের তেল কি আদৌ খাওয়া যাবে? নাকি এবার থেকে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত কোনও খাবার খাওয়া চলে না। তাই সবার প্রথমে ডায়েটে তেলে বদল আনতে বলেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা পরামর্শ‌ দেন, কম তেলে রান্না করার। সাদা তেল ব্যবহার না করার। কিন্তু একবারও সর্ষের তেল বন্ধ করার কথা বলেন না। কেন জানেন? অন্যান্য ভোজ্য তেলের থেকে সর্ষের তেল সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর। সর্ষের তেলের মধ্যে একদম সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড ও ন্যাচারাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।

কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হৃদপিণ্ডের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। কিন্তু সর্ষের তেল খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। সর্ষের তেলের মধ্যে ৬০% মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ২১% পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট আর মাত্র ১২% স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। অন্যদিকে, ওমেগা-৩ ও ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এগুলো আপনি অন্য কোনও ভোজ্য তেলের মধ্যে পাবেন না। এই তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমায় থাকায় এবং আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিডের মতো উপাদান বেশি থাকায়, এটি কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। অর্থাৎ, সর্ষের তেলে তৈরি খাবার খেলে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

যে সব তেলের মধ্যে ট্রান্স-ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, সেগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। কিন্তু সর্ষের তেলের মধ্যে আপনি ট্রান্স-ফ্যাট পাবেন না। বরং, সর্ষের তেলে থেকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এলডিএল-এর পাশাপাশি যদি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়ে, তাহলেও সর্ষের তেল খেতে পারেন।

ট্রান্স-ফ্যাট নেই, স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম, সর্ষের তেল কোলেস্টেরল ও হার্টের রোগীদের জন্য একদম উপযুক্ত। অলিভ অয়েলের দাম আকাশছোঁয়া। তার উপর ভাজাভুজি রান্নার জন্য এই তেল ব্যবহার করা যায় না। সে দিক থেকে বাঙালির হেঁশেলে ও কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য সর্ষের তেলই যথেষ্ট। উচ্চ আঁচে রেখে সর্ষের তেলে রান্না করলেও এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। তাই আপনি নিশ্চিন্তে সর্ষের তেলে রান্না করা খাবার খেতে পারেন। শুধু দু’পলা সর্ষের তেলের বদলে এক পলা দিয়েই রান্না করুন। কম তেলে রান্না করা খাবারই স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত।