
নিউ ইয়র্কের রাজনীতিতে সম্প্রতি সাড়া ফেলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জ়োহরান মামদানি (Zohran Mamdani)। তাঁর অনবদ্য প্রচার শৈলীর পাশাপাশি, তাঁর নিজস্ব ফ্যাশন সেন্সও নজর কেড়েছে সকলের। ক্লাসিক স্যুট এবং ক্রিস্প সাদা শার্টের সঙ্গে তিনি প্রায়শই একটি বিশেষ অ্যাকসেসরিতে নিজেকে সাজিয়ে তোলেন, তা হল তাঁর হাতের তিনটি আংটি। আর তিনটি আংটিই হল রূপোর। এই আংটিগুলি অবশ্য জ়োহরানের কাছে নিছক অলঙ্কার নয়, তাঁর হাতে থাকা আংটিগুলি সংস্কৃতি, পরিবার এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের এক একটি জীবন্ত গল্প। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আংটিগুলির পেছনের ইতিহাস সম্পর্কে জানিয়েছেন।
জ়োহরান মামদানি জানান, ২০১৩ সালে তাঁর ঠাকুরদার মৃত্যুর পর থেকেই তিনি গয়না পরা শুরু করেন। এর মূল কারণ ছিল তাঁর ঠাকুরদার সঙ্গে একটি সংযোগ বজায় রাখা। সেই থেকে আংটিগুলি যেন তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
জ়োহরান মামদানির ডান হাতের তর্জনীতে যে রুপোর আংটিটি রয়েছে, সেটি তাঁর ঠাকুরদার কাছ থেকে পাওয়া একটি উত্তরাধিকার। তাঁর ঠাকুরদা ২০০৭ সালে সিরিয়া ভ্রমণে গিয়ে এই আংটিটি কিনেছিলেন। জ়োহরান এই আংটিকে ঠাকুরদার আশীর্বাদ বলে মনে করেন এবং এটিকে তাঁর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখেন।
জ়োহরানের ডান হাতে যে রুপোর আংটিটি রয়েছে, সেটি কিনেছিলেন তাঁর স্ত্রী, শিল্পী রামা দুয়াজি। তিউনিসিয়ায় তাঁদের ভ্রমণের সময় রামা এটি কিনে তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন। এটি তাঁদের পারস্পরিক সম্পর্কের স্মৃতি বহন করে।
জ়োহরানের বাঁ হাতের অনামিকায় শোভা পায় একটি সাধারণ বিয়ের ব্যান্ড বা ওয়েডিং ব্যান্ড। এটি ম্যানহাটনের সিটি ক্লার্ক অফিসে হওয়া তাঁদের বিয়ের একটি সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্মারক।
জ়োহরান মামদানি সাধারণত এই তিনটি আংটি পরলেও, তাঁর স্ত্রী রামা তাঁকে ডিজাইন করে আরও একটি বিশেষ আংটি উপহার দিয়েছিলেন। সেটি তিনি প্রায়শই পরতেন। কিন্তু আংটিটি আঙুলে লাগার কারণে তিনি সেটি খুলে রেখেছিলেন। আকার পরিবর্তন করার আগেই সেটি অসাবধানতাবশত ড্রেনের মধ্যে পড়ে যায়। এই আংটি হারানোর জন্য তিনি এখনও মাঝেমধ্যে আফসোস করেন।
ভারতীয়-আমেরিকান চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং উগান্ডান-আমেরিকান শিক্ষাবিদ মাহমুদ মামদানির পুত্র জ়োহরান। তাঁর এই আংটিগুলিও যেন তাঁর বৈচিত্র্যপূর্ণ পারিবারিক ঐতিহ্যেরই প্রতিচ্ছবি। এই আংটিগুলি কেবল ফ্যাশন নয়, তাঁর জীবনের বিভিন্ন সংস্কৃতি ও গল্পের এক সুন্দর মিশ্রণ।