
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের থাইরয়েডের সমস্যা বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এই থাইরয়েডের সমস্যা বেশি দেখা যায়। আর তার প্রধান কারণ হল মহিলাদের হরমনের পরিবর্তন। ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের মতো বিষয়গুলো অনেকটাই প্রভাব ফেলে এই থাইরয়েডের উপর। থাইরয়েডে আসলে মানব শরীরের এমন এক গ্রন্থি যা বিভিন্ন হরমোন তৈরি করে। আর এই হরমোনের পরিমাণ যখন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় বা কমে যায়, তখনই আমাদের থাইরয়েডের সমস্যা দেখা যায়।
থাইরয়েডের সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ, যে ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেখানে নিজেই থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে। এ ছাড়াও আয়োডিনের অভাব, অনিয়মিত রুটিন, মানসিক চাপ ইত্যাদি এই থাইরয়েডের সমস্যাকে আরও খারাপ করে তোলে।
যখন থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে কম হরমোন তৈরি হয় তখন সেটাকে বলে হাইপোথাইরয়েডিজম। এই অবস্থায় ওজন বেড়ে যাওয়া, ক্লান্তি লাগা, ভুল পড়ে যাওয়া, সামান্যতেই ঠান্ড লেগে যাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। অন্যদিকে, থাইরয়েড গ্রন্থি যখন বেশি হরমোন তৈরি করে তখন তাকে বলে, হাইপারথাইরয়েডিজম। এই ক্ষেত্রে ওজন কমে যায়, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, নার্ভাস লাগে, ঘুমের অভাব হয় ও গরু লাগে। তবে সময় মতো থাইরয়েডের সমস্যা শনাক্ত করা গেলে এই সমস্যার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এ ছাড়াও যোগব্যায়ামের সাহায্যেও এই সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বাবা রামদেব বলেন যোগব্যায়াম আসলে পুরো শরীরকে সক্তিয় করে। রক্ত প্রবাহকে আরও ভাল করে। তিনি একাধিক যোগব্যায়াম করার কথা বলছেন। এই সব যোগব্যায়াম করলে থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্রথমেই তিনি বলছেন সূর্য নমস্কারের কথা। নিয়মিত সূর্য নমস্কার করলে মানুষের বিপাক ক্রিয়া তরান্বিত হয়। এরপর তিনি বলছেন, ভস্ত্রিকা প্রাণায়াম করার কথা। এই ক্ষেত্রে থাইরয়েড গ্রন্থিতে আরও অক্সিজেন সরবরাহ হয়। এই প্রাণায়াম ক্লান্তি ও অলসতা দূর করে।
এ ছাড়াও কপালভাতি করলে বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি পায় ও ওজনও নিয়ন্ত্রিত হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও সিংহাসন করলে গলার পেশি শক্তিশালী হয় এবং হরমোনের ভারসাম্য উন্নত করে।
একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, নিয়মিত খালি পেটে যোগব্যায়াম করলে তার সম্পূর্ণ সুফল পাবেন আপনি। এ ছাড়াও ওষুধের বদলে যোগব্যায়াম করা ঠিক নয়। বরং, সহায়ক হিসাবে আপনাকে যোগব্যায়াম করতে হবে। এর পাশাপাশি সুষম খাদ্যাভ্যাস, প্রয়োজনীয় ঘুম ও সঠিক ওষুধ খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।