
গোটা বিশ্বের হিন্দুদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান ওড়িষার পুরী মন্দির। সেখানে বাস স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অবতার শ্রী জগন্নাথ দেবের। তাঁর সঙ্গে থাকেন দাদা বলরাম এবং বোন সুভদ্রাও। পুরীর মন্দিরের মহাপ্রসাদের মাহাত্ম্য ছড়িয়ে গোটা বিশ্বে। কিন্তু সেই প্রসাদ গ্রহণ করতে গিয়েই যে মহাফাঁপড়ে পড়তে হবে তা বোধহয় ভাবতেও পারেননি এই ১০ জন।
পরিবারের সঙ্গে পুরীতে গিয়েছিলেন ১০ জনের এক পরিবার। পুরীতে গেলে জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ না খেলে, তীর্থ দর্শনই যেন অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। সেই মতোই একদিন দুপুরে মহাপ্রসাদ খাচ্ছিলেন ওই পরিবার। তখনই বাঁধে যত গোল।
নিজেদের হোটেলে ডাইনিং টেবিলে সকলে একসঙ্গে বসে মহাপ্রসাদ উপভোগ করছিলেন। সেই সময় ওই দৃশ্য দেখে রেগে যান এক ব্যক্তি। কারণ প্রথা অনুসারে, জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ গ্রহণ করতে হয় শুদ্ধ মনে, ভক্তি ভরে, মটিতে পাত পেড়ে বসে। অথচ ওই পরিবার প্রসাদ খাচ্ছিলেন টেবিলে বসে। তাঁদের মহাপ্রসাদ পরিবেশন করে খাওয়াচ্ছিলেন এক পুরোহিত।
ভিডিয়োতে দেখা যায় এক মহিলা বলছেন তাঁরা টেবিলে খাওয়ার আগে জিজ্ঞেস করেছিলেন। এরপরেই ওই ব্যক্তি পুরোহিতকেই প্রশ্ন করেন ‘তিনি কী করে টেবিলে বসে মহাপ্রসাদ খাওয়ার অনুমতি দিলেন?’
এই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নিজেদের ক্ষোভ সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন জগন্নাথ দেবের ভক্তরা। তারপরেই বিষয়টিতে নিজের বক্তব্য জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
শ্রী জগন্নাথ মন্দির অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফিশিয়াল বিবৃতি দিয়ে জানায়, মন্দির কর্তৃপক্ষ ভাইরাল ভিডিয়োটি সম্পর্কে অবগত। যেখানে একটি পরিবারকে টেবিলে বসে জগন্নাথ দেবের মহাপ্রসাদ খেতে দেখা যায়। যা ঐতিহ্য এবং পরম্পরা বিরুদ্ধ। ভক্তরা এই বিষয়ে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন। মাটিতে বসে মহাপ্রসাদ খাওয়া শত শত বছরের পুরনো প্রথা।
কর্তৃপক্ষ বলেন, “মন্দিরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে যে, অন্নব্রহ্ম রূপে ভগবানের ঐশ্বরিক মহাপ্রসাদ পুজো করা হয়। মাটিতে বসে মহাপ্রসাদ খাওয়ার রীতি অনাদিকাল থেকেই চলে আসছে। অতএব, সকল ভক্তদের বিনীতভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে যে তারা ঐতিহ্যের পরিপন্থী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকুন, যেমন খাবারের টেবিলে মহাপ্রসাদ খাওয়া।”
ভক্ত এবং স্থানীয়দের বিশ্বাসের কথা মাথায় রেখে মন্দির কর্তৃপক্ষ সব হোটেলকেও নির্দেশ দিয়েছে, তাঁরা যেন অতিথিদের এই বিষয়ে সাবধান করে দেয়।