Career Tips: মাছ চাষ নিয়ে পড়াশোনা করলেই রয়েছে মোটা টাকার আকর্ষণীয় কেরিয়ার! কী ভাবে জানুন

Career Tips: সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই বছর থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রমে এই বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবেন?

Career Tips: মাছ চাষ নিয়ে পড়াশোনা করলেই রয়েছে মোটা টাকার আকর্ষণীয় কেরিয়ার! কী ভাবে জানুন

May 05, 2025 | 3:05 PM

ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়া কালচার (Fisheries and Aquaculture) এমন একটি কৃষি ভিত্তিক ক্ষেত্র যা মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে জড়িত। ফিশারিজ বলতে বোঝায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে মাছ চাষ করা, যেমন পুকুর, জলাশয় বা কৃত্রিম জলাধারে। অপরদিকে, জলচাষ বা অ্যাকুয়াকালচার একটি বিস্তৃত প্রক্রিয়া যা শুধুমাত্র মাছ নয়, বরং শামুক, সামুদ্রিক শৈবাল, ঝিনুক ইত্যাদি প্রাণীর চাষকেও অন্তর্ভুক্ত করে।

বর্তমানে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির জন্য মৎস্য ও জলজ সম্পদের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। এখানকার মানুষের জীবিকা ও খাদ্য চাহিদার একটি বড় অংশ এই খাতের ওপর নির্ভরশীল। সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মৎস্যচাষে উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ফলে এই খাতটি কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই বছর থেকে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যক্রমে এই বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন এই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবেন? উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে কী কী বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন? পরবর্তীতে পেশা বেছে নিতে কী সুবিধা পাবেন?

উচ্চ শিক্ষায় কোন কোন বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন?

১। Fisheries বা মৎস্যবিজ্ঞান – এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ অনার্স ও মাস্টার্স করতে পারবেন আপনি। এখানে মাছের জীবনচক্র, প্রজনন, খাদ্য, রোগ, পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি শেখানো হয়।

২। Aqua culture বা অ্যাকোয়া কালচার – এটি ফিশারিজের একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত হয়। জলাশয়ে মাছ, শামুক, ঝিনুক ও চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ নিয়ে পড়াশোনা হয়। কী ভাবে জল জীবন এবং জলের তলার বাস্তুতন্ত্র গড়ে ওঠে সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

৩। Marine Biology বা সামুদ্রিক জীববিদ্যা – সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য, ইকোলজি এবং রিসোর্স ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণামূলক বিষয় এই সামুদ্রিক জীববিদ্যা।

৪। Environmental Science বা পরিবেশ বিজ্ঞান – জলজ পরিবেশ সংরক্ষণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এই বিষয়।

৫। Zoology বা প্রাণীবিদ্যা – মাছ সহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর শারীরতত্ত্ব, শ্রেণিবিন্যাস এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।

উপরিক্ত সব কটি বিষয় নিয়েও স্নাতক এবং স্নাতকত্তোর স্তরে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। করতে পারবেন ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স ডিগ্রি। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে রয়েছে বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্সও। নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য সেই সব কোর্সও করতে পারবেন।

পড়াশোনা শেষ করে কী কী পেশায় যেতে পারেন?

সরকারি খাতে চাকরির সুযোগ –

১। মৎস্য অফিসার (Fisheries Officer) – জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে মাছ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা তদারকি করেন এমন পদে নিয়োগ পেতে পারেন।

২। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ইত্যাদিতে বিভিন্ন পদে চাকরির সুযোগ রয়েছে।

৩। জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বা গবেষণা প্রকল্পগুলিতেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে –

১। Fish Farm Manager – নিজস্ব বা অন্য বাণিজ্যিক মাছ/চিংড়ি খামার পরিচালনার দায়িত্ব পেতে পারেন।

২। NGO বা প্রকল্প কর্মকর্তা – ব্র্যাক, ওয়ার্ল্ডফিশ, FAO-এর মতো সংস্থায় উন্নয়ন প্রকল্পে কাজের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন NGO-তে কাজের সুযোগ থাকে।

৩। Quality Control Officer (এক্সপোর্ট ও ফুড সেক্টরে) – প্রক্রিয়াজাত মাছ ও সামুদ্রিক পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষা। এই বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানেও চাকরি পেতে পারেন।

এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নরওয়ে, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতে মাছ চাষ ও সামুদ্রিক পণ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। Skilled Fisheries Technologist ও Aquaculture Expert হিসেবে নিয়োগও পাওয়া যায়।

চাইলে নিজেও ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। মাছ চাষের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আপনার জানা থাকলে, সেই ব্যবসা দাঁড় করানোটা অনেক সহজ হয়ে উঠবে। নিজে পুকুর বা আধুনিক বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ বা চিংড়ি চাষ করে ব্যবসা করতে পারবেন।

এছাড়াও রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়ে পড়ানোর সুযোগ। অর্থাৎ শিক্ষকতা করতে পারবেন। তা ছাড়া উচ্চতর গবেষণার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।