
সায়েন্স কমিউনিকেশন কোর্স এমন একটি শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম যা বিজ্ঞানকে সহজে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। এই কোর্সে শিক্ষার্থীরা শেখে কীভাবে জটিল বৈজ্ঞানিক ধারণা, গবেষণা বা আবিষ্কারকে সংবাদ, আর্টিকেল, ভিডিয়ো, সোশ্যাল মিডিয়া বা প্রদর্শনীর মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে বোধগম্যভাবে উপস্থাপন করা যায়।
কোর্সটির মধ্যে বৈজ্ঞানিক লেখালেখি, মিডিয়া ব্যবহারের কৌশল, পাবলিক স্পিকিং, এবং বিজ্ঞানের নৈতিক দিক নিয়ে আলোচনার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এটি বিজ্ঞানীদের, শিক্ষাবিদদের, সাংবাদিকদের এবং বিজ্ঞানপ্রেমী শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
সায়েন্স কমিউনিকেশন কোর্স সমাজে বিজ্ঞান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে এবং নীতি নির্ধারণে জনমতের গঠনকে প্রভাবিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর যুগে এটি একটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা।
এবার সেই সায়েন্স কমিউনিকেশন নিয়ে পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়াম। শুরু হয়েছে ভর্তির প্রক্রিয়া। ক্লাস হবে কলকাতা ক্যাম্পাসে। স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা।
আবেদনকারীদের টেকনোলজি কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার যে কোনও বিষয়ে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। তবে, যাঁরা বিজ্ঞান, টেকনোলজি কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার কোনও বিষয়ে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁরা এই বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। তবে, প্রার্থীদের বয়স ৩০ বছরের মধ্যে হওয়া প্রয়োজন।
আবেদনমূল্য হিসাবে কোনও টাকা জমা নেওয়া হবে। তবে, অ্যাডমিশন ফি হিসাবে ২,০০০ টাকা এবং প্রতি মাসে টিউশন ফি হিসাবে ২,০০০ টাকা জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের তরফে প্রতি মাসে ১২,০০০ টাকা ফেলোশিপ হিসাবে দেওয়া হবে। জুলাই মাসে কোর্সের ক্লাস শুরু হবে। আগ্রহীরা অনলাইনে আবেদন জমা দিতে পারবেন।
প্রশ্ন হল কেন পড়বেন এই কোর্স? এই কোর্স পড়ে চাকরির জগতে কী কী সুবিধা পেতে পারেন?
বিজ্ঞানের তথ্য ও গবেষণা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া এখন অনেক সংস্থারই গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে যে সব সেক্টরে চাকরির সুযোগ তৈরি হয় তা হল –
১। বিজ্ঞান সাংবাদিকতা (Science Journalism) – সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, টেলিভিশন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞান সম্পর্কিত লেখা বা প্রতিবেদন তৈরি করা।
২। সায়েন্স রাইটার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর – গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় বা বিজ্ঞান ভিত্তিক এনজিও-র জন্য সহজ ভাষায় প্রবন্ধ, ব্লগ, স্ক্রিপ্ট বা রিপোর্ট লেখা।
৩। সায়েন্স কমিউনিকেশন অফিসার বা মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর – সরকারি গবেষণা সংস্থা (যেমন DRDO, ISRO, CSIR), বিশ্ববিদ্যালয় বা বিজ্ঞান সংগঠনে বিজ্ঞান কমিউনিকেশন ও জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা।
৫। ডিজিটাল কনটেন্ট প্রোডিউসার (ভিডিও, পডকাস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া) – ইউটিউব চ্যানেল, ইডুটেক কোম্পানি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিজ্ঞানের সহজবোধ্য ভিডিও বা অডিও কনটেন্ট তৈরি করা।
সায়েন্স পলিসি অ্যানালিস্ট বা অ্যাডভোকেট – বিজ্ঞানভিত্তিক নীতি প্রণয়নে সহযোগিতা করা ও সরকার/সংস্থা পর্যায়ে প্রভাব তৈরি করা।