
আজকালকার দিনে স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকা, দূষণ আর স্ট্রেসের কারণে চোখের ওপর চাপ ক্রমশই বেড়ে চলেছে। কিন্তু জানেন কি, আপনার হেঁশেলেই লুকিয়ে আছে চোখ ভাল রাখার দারুণ সব উপাদান? সঠিক ফল ও সবজি নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ থাকে, চোখের রোগ প্রতিরোধ করা যায় এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যাও এড়ানো যায়। চোখের যত্নে প্রতিদিনের পাতে কী থাকা একেবারে জরুরি, জেনে নিন সেই ‘সুপারফুড’গুলোর হদিস।
ফল মানেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খনি, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে চোখকে রক্ষা করে। নিম্নে আলোচনা করা হল কোন ফলগুলি খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভাল থাকে —
এই ফলগুলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা চোখের রক্তনালীগুলিকে সুস্থ রাখে। এটি ছানি বা ক্যাটারাক্টের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি কমলা বা অর্ধেক পাতিলেবু খেতেই পারেন।
বেরিতে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন (Anthocyanin) নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি বিশেষত রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমায় এবং চোখের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। মরসুম অনুযায়ী যে কোনও বেরি খেতে পারেন।
এগুলিতে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চোখের রেটিনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যা সুস্থ দৃষ্টির জন্য অপরিহার্য।
ফলের পাশাপাশি সবজি এমন শক্তিশালী উপাদান দিয়ে ভরা যা রেটিনা ও ম্যাকুলার স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। এ বার জেনে নিন তেমন কিছু সবজি, যা চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখ —
চোখ ভাল রাখার জন্য সবথেকে জরুরি হলো লুটেইন (Lutein) ও জিয়াজ্যান্থিন (Zeaxanthin) নামক দুটি ক্যারোটেনয়েড। এই দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পালং শাকের মতো গাঢ় সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এগুলি সূর্যের নীল আলো থেকে চোখকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যজনিত ম্যাকুলার অবক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাবারে অন্তত এক বেলা এই শাক রাখুন।
চোখের যত্নে গাজর দারুণ কার্যকরী। এর কারণ, এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এটি কর্নিয়াকে সতেজ রাখতে এবং শুষ্ক চোখ বা ‘ড্রাই আই’-এর সমস্যা কমাতে দারুণ কার্যকরী।
গাজরের মতোই এই সবজিগুলিতেও রয়েছে উচ্চ মাত্রায় বিটা-ক্যারোটিন ও ভিটামিন এ। স্ন্যাকস হিসেবে বা তরকারিতে এগুলো নিয়মিত রাখুন।
এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা চোখের রক্তনালীকে শক্তিশালী করে। আপনি সালাড বা স্যান্ডউইচে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
চোখ ভাল রাখতে শুধুমাত্র এই ফল ও সবজিগুলিই যথেষ্ট নয়, এর সঙ্গে প্রয়োজন নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (মাছ, আখরোট, ফ্ল্যাক্স সিড)-যুক্ত খাবার খাওয়া। ফল ও সবজি রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সম্ভব হলে কাঁচা সালাড বা হালকা স্টিম করে খান, তাতে পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।