বয়স (Age) যে কোনও কিছুতেই বাধা হয়ে থাকতে পারে না, তার উজ্জ্বল প্রমাণ দিলেন ৫৬ বছরের এই মহিলা বাইকার (Woman Biker)। বয়সের সংখ্যা হল শুধুমাত্র সংখ্যা। যখন এই বয়সে সকলে শরীরের মধ্যে নানান অসুখ বাসা বাধিয়ে জীবনের অন্তিম পর্যায় নিয়ে চিন্তায় দিন শেষ করেন, তখন এই বীরাঙ্গনা দিল্লি থেকে লেহ পর্যন্ত বাইক চালিয়ে নজির গড়লেন।
৫৬ বছর বয়সি মিনি অগাস্টিন (Mini Augustine)। ১৮ দিনে, দিল্লি থেকে লেহ সার্কিট সম্পন্ন করে তরুণ প্রজন্মকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই সাহসী মহিলা। এই ১৮দিনে তিনি মোট ২৪ হাজার কিমি পথ অতিক্রম করেছেন। পাশাপাশি তিনি এও প্রমাণ করে দিয়েছেন, ভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য বয়স নয়., মানসিকতা ও আবেগটাই যথেষ্ট।
জন্ম কেরালায়। ছোট থেকেই প্রবল ভ্রমণপিপাসু। পাশাপাশি বাইক চালানোর অফুরন্ত তাজা মন। সমাজের সব বাধা ও বস্তা পচা মানসিকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি তাঁর মনের বাসনা পূরণ করতে বাড়ির বাইরে পা রেখেছেন। শুধু পা রেখে উদভ্রান্তের মত ঘুরে বেরিয়েছেন তাই নয়, সকলকে তাক লাগিয়ে খবরের শিরোনামে জায়গা দখল করে নিয়েছেন এই তরুণী। ৫০০ সিসি বুলেট বাইককে সঙ্গী করে দিল্লি থেকে লেহ পর্যন্ত রওনা হয়েছেন শুধুমাত্র মনের জোর ও স্বপ্নপূরণের তাগিদে। ছোটথেকেই ভাইদের সঙ্গে বড় হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে খেলাধুলো, সাইকেল চালানো, পরবর্তীকালে বাইক চেপে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেই থেকে মনের মধ্যে এক দুঃসাহসিক নেশা চেপে ধরেছিল।
তাঁর এই স্বপ্নপূরণে সবসময় পাশে পেয়েছেন পরিবারকে। স্বামী ও সন্তানদের সমর্থন ছাড়া এই ভারী ও বিশাল মাপের বাইক ফের চালানো সম্ভব ছিল না। সে কথা বরাবর তিনি বলে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দিকে তাঁর স্বামীই বুলেট ৩৫০ সিসি চালাতে শিখিয়েছিলেন। তারপর থেকে এমন বাইকের উপর প্রেম জেগে ওঠে। বাইকপ্রেমকে কখনও থামাতে চাননি। আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শুরু করেন বাইক সফর। এই যাত্রায় দিল্লি থেকে লেহ যাত্রা ছিল তাঁর জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। রাস্তা নামার আগে প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। কঠিন রুটিন ও অধ্যাবসায় তাঁর ভ্রমণপথ আরও নিরাপদ করে তোলে।
তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি যে একজন রোল মডেল। সমাজের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে অদম্য সাহস নিয়ে তাঁর স্বপ্নকে সফল করেছেন, এমন বীরাঙ্গনাকে স্যালুট!