
সামনেই বড়দিন। শহরজুড়ে শীতের মরশুম, উৎসবের মেজাজে সেজে উঠছে কলকাতার অলিগলি। আলোর রোশনায় ঝলমল করছে পার্কস্ট্রিট, অ্যালেন পার্ক, ক্যাথেড্রাল রোড। এর পাশাপাশি সেজে উঠেছে বো ব্যারাকও। ক্রিসমাসের সময় কলকাতাবাসীর অন্যতম ডেস্টিনেশন হয়ে ওঠে এই বো ব্যারাক। এ বছর সেখানে জ্বলে উঠবে থিমেটিক আলো। প্রায় দু’বছর পর আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ক্রিসমাস কার্নিভাল। চলবে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। অ্যালেন পার্কে ১২তম ক্রিসমাস কার্নিভালের উদ্বোধন করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই বছর বো ব্যারাকও ক্রিসমাস কার্নিভালের অংশ। হেয়ার স্ট্রিট থেকে বউবাজার থানার মাঝে এক সরু গলি, ঢুকলেই দেখা যাবে রাস্তার দু’পাশে সারি সারি লাল বাড়ি। আলোর রোশনায় সেজে উঠেছে বো ব্যারাক। তার সঙ্গে রয়েছে ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজ। সরু গলির এক পাশে বিক্রি হচ্ছে কেক আর রেড ওয়াইন। আর কয়েকদিন পর যে বড়দিন। আর ২১ ডিসেম্বর থেকে যে শুরু ক্রিসমাস কার্নিভাল।
বো ব্যারাকের আলোগুলো রিমোট কন্ট্রোল। অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের এই জায়গার সৌন্দর্য তুলে ধরতেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বো ব্যারাকের কেক ও ওয়াইনের পাশাপাশি ক্রিসমাস কার্নিভালে খাবারের স্টলও থাকবে। খাবারের স্টলগুলির দায়িত্বে থাকবেন খ্রিস্টান, অ্যাংলো ইন্ডিয়ান, নেপালি এবং গোয়ান সম্প্রদায়ের মহিলারা।
ক্রিসমাস কার্নিভালে নজর কাড়তে চলেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে গানবাজনা। কলকাতা পুলিশ ২৬ ডিসেম্বর একটি বিশেষ অনুষ্ঠান করবে। চার্চের গায়করা ইংরেজি হিন্দি ও বাংলা গান পরিবেশন করবেন। এছাড়াও ক্যামাক স্ট্রিটে আয়োজিত হবে বাসকারস মিউজিক্যাল প্রোগ্রাম।
পার্কস্ট্রিট কিংবা বো ব্যারাক নয়, কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় এই ক্রিসমাস কার্নিভাল হবে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, কৃষ্ণগর এবং বারুইপুরের চার্চেও ক্রিসমাস কার্নিভাল পালিত হবে। এর পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার, আসানসোল, হাওড়া, বিধাননগর এবং ঝাড়গ্রামের পুলিশ কমিশনারেটগুলিতেও ২১ ডিসেম্বর থেকে ক্রিসমাস কার্নিভাল শুরু হবে। তবে এটি চলবে আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই রাজ্যের চার্চগুলো সেজে উঠেছে ক্রিসমাসের জন্য।
বড়দিনের উদযাপন পার্কস্ট্রিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। শহরের একাংশ বড়দিনের সময় পার্কস্ট্রিট চত্বরে ভিড় করে। পাশাপাশি শহরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোতেও ভিড় করে। বড়দিনের ছুটিতে আলিপুর চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম, ভারতীয় জাদুঘর, নিকো পার্ক ইত্যাদিতেও জনসুনামি লক্ষ্য করা যায়। তাই ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মানুষের ভিড় সামলে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। সব কিছু নিয়ে জমজমাট ২০২২-এর শীতের মরশুম।