Himachal Pradesh: ৬০০ বছর ধরে হিমাচলিরা নেতিবাচক শক্তিকে দূর করে ‘শয়তানের’ মাস্ক পরে
যদিও এখন সমগ্র বিশ্ব মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে এক পা রাখে না, তবে হিমাচলে মাস্ক ফেস্টিভ্যালে ব্যবহার করা হয় 'শয়তান' এর মাস্ক। অর্থাৎ ডেভিল মাস্ক। এই মাস্ক ফেস্টিভ্যালকে হিমাচলি ভাষায় বলা হয় ফাগুলি বা ফাগলি উৎসব।
পাহাড়ে ছুটি কাটানোর প্রসঙ্গ এলেই আমরা সবার আগে বেছে নিন হিমাচলের কুলু, মানালিকে। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, মানালি (Manali) একটি পারফেক্ট ডেস্টিনেশন (Destination)। তবে হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh) হচ্ছে এমন একটি রাজ্য যেখানে হিমাচলি উৎসবগুলো (Festival) খুব একটা জনপ্রিয় না হলেও, এগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। হিমাচল প্রদেশের এমনই একটি উৎসব হল মাস্ক ফেস্টিভ্যাল (Mask Festival)।
যদিও এখন সমগ্র বিশ্ব মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে এক পা রাখে না, তবে হিমাচলে মাস্ক ফেস্টিভ্যালে ব্যবহার করা হয় ‘শয়তান’ এর মাস্ক। অর্থাৎ ডেভিল মাস্ক। এই মাস্ক ফেস্টিভ্যালকে হিমাচলি ভাষায় বলা হয় ফাগুলি বা ফাগলি উৎসব। এই ফাগুলি উৎসব হিমাচল প্রদেশের সিমলা, কুলু, মানালি, কিন্নর এবং লাহুল ও স্পিতি জেলার বিভিন্ন গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়। ৬০০ বছরের পুরনো এই উৎসব, পর্যটক হিসাবে আপনার মন কাড়তে বাধ্য।
সম্প্রতি এই ফাগুলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল কুলু জেলার বাঞ্জার গ্রামে। ফাগুলি উৎসবে ডেভিলের মাস্ক পরে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামবাসীরা এক সঙ্গে নাচ গান করেন। হিমালয়ের ঠান্ডায় হিমাচলি ড্রামের আওয়াজে কেঁপে ওঠে গ্রামের পর গ্রাম। ফাগুলি উৎসবের তাৎপর্য হল মন্দের ওপর ভালোর জয়।
View this post on Instagram
নেতিবাচক শক্তিকে দূর করার জন্য ফাগুলি উৎসবে আগুন জ্বালানো হয়। হিমাচলিরা মনে করেন, এই আগুনের মাধ্যমে তাঁদের জীবন থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর হয়ে যায় এবং ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার ঘটে। যেহেতু এই উৎসব শয়তানের ওপর জয়ের আনন্দকে উপস্থাপনা করে, তাই এখানে সবাই শয়তানের মুখ আঁকা মুখোশ পরে। সেই মুখোশও তৈরি হয় হিমাচলি স্টাইলে। এছাড়াও মজার বিষয় হয় এই উৎসবে যে শয়তানের মুখোশগুলি ব্যবহার করা হয়, তা বারণকে উৎসর্গ করা হয় এবং এগুলি তৈরি করা হয় কাঠ দিয়ে।
এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে নানা রীতি ও কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। আপনি যদি ফাল্গুন মাসে হিমাচল প্রদেশ বেড়াতে চান, তাহলে হয়তো সাক্ষী হতে পারেন এই উৎসবের। মূলত ফাল্গুন মাসে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয় বলে একে ফাগুলি বা ফাগলি উৎসব বলা হয়। তবে বর্তমানে ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে মার্চ মাসের সময় অবধি বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয় এই ফাগুলি উৎসব। কোনও জায়গায় দু দিন তো কোনও জায়গায় ছয় দিন ধরে চলে এই অনুষ্ঠান।
View this post on Instagram
কাঠের তৈরি মুখোশ, হিমাচলি টুপি, ঐতিহ্যবাহী পোশাক, হলুদ ফুলের মালা, সব মিলিয়ে উৎসবের রঙে মেতে ওঠে সবাই। এই লুককে হিমাচলের ভাষায় বলা হয় মান্দালি। এই উৎসবের আরেকটি তাৎপর্য রয়েছে, তা হল নতুন শস্য উঠলে তা ভগবানকে উৎসর্গ করা। এটি রীতি ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত রয়েছে। তবে ফাগুলি উৎসবে যে কাঠ পোড়ানো হয় তাকে বলা হয় সুস্কার হোরিং। এই কাঠের সঙ্গে রোস্ট করা হয় বার্লি। তবে উৎসবের তাৎপর্য যাই হোক না কেন, হিমাচল প্রদেশের ঠাণ্ডা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এখানের খাদ্য, সঙ্গীত, নৃত্য সবই আপনার মন কাড়তে বাধ্য।
আরও পড়ুন: ঋষিকেশকে দ্য ওয়ার্ল্ড ক্যাপিটাল অফ যোগা কেন বলা হয় জানেন?