ভারতীয় জাদুঘর, নেহেরু চিল্ডেন মিউজিয়াম, আলিপুর জেল মিউজিয়াম, বিড়লা তারামন্ডল, সায়েন্স সিটির মতোই এই শহরে আরও এমন অনেক সংগ্রহশালা বা জাদুঘর রয়েছে, যেখানে আপনি বাচ্চাদের সঙ্গে যেতে পারেন। এখানে গেলে বাড়বে আপনার জ্ঞান। তার পাশাপাশি এমন অনেক ইতিহাস জানতে পারবেন, যা অবাক করে দিতে পারে আপনাকে। রইল এমনই ৪ অভিনব জাদুঘরের খোঁজ।
ফ্যানাটিক স্পোর্টস মিউজিয়াম: সন্তানের যদি খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে ঘুরে আসুন ফ্যানাটিক স্পোর্টস মিউজিয়াম। নিউ টাউনের ইকোস্পেস বিজনেস পার্কে অবস্থিত এই মিউজিয়াম। খেলাধূলাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এই মিউজিয়াম। ১৯৩২ থেকে অলিম্পিকের টিকিট থেকে শুরু করে মেসির বুট, সচীনের ব্যাট ও গ্লভস, সৌরভে জার্সি ও ব্যাট, কোহলির ব্যাট, মেরি কমের জার্সি, সানিয়া মির্জার টেনিস র্যাকেট, অভিনব বৃন্দার শ্যুটিং গ্লভস, পিভি সিন্ধুর জার্সি সব কিছুই রয়েছে এই সংগ্রহশালায়। রয়েছে ১৯৮৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বজয়ী ভারতীয় টিমের সদস্যদের স্বাক্ষরিত স্মারক এবং আরও অনেক কিছু। সাংবাদিক ও প্রখ্যাত লেখক বোরিয়া মজুমদারের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে এই মিউজিয়ামে। এখানে খেলাধূলার জগতের নান কিংবদন্তির স্বাক্ষরিত বিভিন্ন সংরঞ্জাম দেখতে পাবেন।
আর বি আই সংগ্রহশালা বা কারেন্সি মিউজিয়াম: ৮, কাউন্সিল হাউস স্ট্রিট, কলকাতা। এই বাড়িতেই ১৯৩৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। অল্প দিনের মধ্যেই আর বি আই-এর স্থায়ী ঠিকানা হয়ে ওঠে মুম্বই নগরী। আর এখন এই ৮, কাউন্সিল হাউস স্ট্রিট হল আর বি আই সংগ্রহশালা। কারেন্সি নোটের জন্ম থেকে মৃত্যু—ভারতীয় মুদ্রার পুরো জীবনচক্রটা দেখা যাবে এই সংগ্রহশালায়। রয়েছে বাতিল নোটের তৈরি নানা সামগ্রী। চাইলে কিনতেও পারেন। রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যচিত্র। পুরনো দশ পয়সার মুদ্রা দিয়ে তৈরি থিমও রয়েছে সেখানে। ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিভিন্ন সময়ের মুদ্রা ও টাকার ইতিহাস জানা যাবে এখানে।
স্মরণিকা ট্রাম মিউজিয়াম: বাঙালির ঐতিহ্যর সঙ্গে যেখানে ট্রাম জড়িয়ে সেখানে এই বিলুপ্তপ্রায় যানবাহনের ইতিহাস জানতে একবার যেতেই হবে স্মরণিকায়। ট্রামের ১৫০ বছরের ইতিহাস আপনার সামনে ফুটে উঠবে এখানে। ধর্মতলা ট্রাম ডিপোয় গেলেই দেখা পাবেন স্মরণিকার। ট্রামের মধ্যেই সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ‘শ্লথ গতির যান’-এর বিবর্তন। দু’কামরার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রামে কলকাতা ট্রামওয়ে কোম্পানির জন্মলগ্নের কথাও জানতে পারবেন। ১৮৭৩ সালে ঘোড়ায় টানা ট্রাম ঠিক কী রকম দেখতে ছিল, তারও রেপ্লিকা দেখতে পেয়ে যাবেন এখানে। বৃহস্পতি বাদে প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বোট মিউজিয়াম: নদীমাতৃক দেশে একসময় নৌকা ছাড়া হাওড়া থেকে কলকাতাও আসা যেত না। এখন শুধু ফেরিঘাটে লঞ্চ চলে ঘড়ি ধরে। নৌকারও তো বিবর্তন হয়েছে। তাছাড়া ভারতের সব অঞ্চলের নৌকার আকৃতির একরকম নয়। আপনি যদি সেই পার্থক্য নিজে চোখে দেখতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে কাঁকুড়গাছির আম্বেদকর ভবনের বোট মিউজিয়ামে। এখানে ৪৬টি স্কেলের মডেল নৌকা এবং জাহাজ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি কেরল, তামিলনাড়ু এবং অন্যান্য রাজ্যের নৌকার মডেল এখানে দেখতে পাবেন। বিশেষ আকর্ষণ সিন্ধু সভ্যতার নৌকা। আর রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নৌকা। ফিশিং বোট থেকে রেসিং বোট কোনওটাই বাদ নেই এই সংগ্রহশালায়। সোম থেকে শুক্র সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা এই সংগ্রহশালা।