একদিকে ঘন সবুজ অরণ্য। অন্যদিক দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা রঙ্গিত। তার মাঝে গড়ে উঠেছে বিজনবাড়ি। বাঙালি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই বিজনবাড়ি। কিন্তু বিজনবাড়িতে রাত কাটানোর জায়গা সীমিত। বিজনবাড়িতে একটি মাত্র হোমস্টে রয়েছে। তাই আগে থেকে বুক না করে গেলে ঘর পাওয়া বেশ কঠিন। কিন্তু বিজনবাড়িতে হোমস্টে পাননি বলে দার্জিলিং ফিরে যাবেন? একদম নয়। এই বিজনবাড়ির খুব কাছেই রয়েছে আরও একটি অফবিট স্পট। জায়গায় নাম ঝেপি। দার্জিলিংয়েও যাঁরা রাত কাটাতে পছন্দ করেন না, তাঁরাও ঘুরে আসতে পারেন এই ঝেপি থেকে।
দার্জিলিং জেলায় ২০৭৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম ঝেপি। বিজনবাড়ি ব্লকেই রয়েছে এই ঝেপি। অর্থাৎ এবার বিজনবাড়ির পাশাপাশি আপনি লিস্টে যোগ করে নিতে পারেন ঝেপির নাম। দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই ঝেপি। তবে, এই ঝেপিকে পাহাড়ি গ্রাম বললে একটি ভুল হবে। ঝেপি হল পাহাড়ের কোলে একটা ফার্ম হাউস। এখানে চাষাবাদ হয়। এখানে মূলত স্কয়াশের চাষ হয়। সেখানেই পাহাড়ের কোলে রাত কাটানো যায়। আর খুব সুন্দর মুহূর্ত চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যায়। আর এই ফার্ম হাউসে থাকা-খাওয়ার খরচ জনপ্রতি প্রতদিন ১৮০০ টাকা।
প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য সেরা ডেস্টিনেশন এই ঝেপি। যাঁরা শহুলে কোলাহল ছাড়িয়ে প্রকৃতির কোলে দু’দিন কাটাতে চান, তাঁরা এই গরমে ঘুরে আসতে পারেন ঝেপি থেকে। ঝেপির ফার্ম হাউসের নাম চেতনা। এই ফার্ম হাউসের ভিতরে ঢুকে পড়লে আর মনে পড়বে না ক্রংকিটের শহরের কথা। তখন শুধু কানে আসবে ফার্ম হাউসের পাশ দিয়ে বয়ে চলা রঙ্গিতের শব্দ। এখানে রঙ্গিত খরস্রোতা নয়। কিন্তু পাথরের উপর দিয়ে খরস্রোতা শব্দে বয়ে চলেছে সে। ইচ্ছা হলে এই রঙ্গিতে মাছ ধরতে পারেন, স্নান করতে পারেন। রঙ্গিতের শব্দের পাশাপাশি শুনতে পাবেন পাখিদের কলরবও।
ঝেপির একধারে দার্জিলিং আর একদিকে দক্ষিণ সিকিম। এখানে কাঞ্চনজঙ্ঘার এক ঝলক দেখাও মিলতে পারে। তবে, খুব বেশি নয়। উচ্চতা বেশি না হওয়ায় খুব বেশি ঠান্ডা এখানে থাকে না। বরং সারা বছরই ঝেপিতে আবহাওয়া মনোরম। এই গরমে যদি ঝেপি যান, তাহলেও নিরাশ হবে না। আর যেহেতু বিজনবাড়ি থেকে ১১ কিলোমিটার গেলেই এই ঝেপি পেয়ে যাবেন, তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের খুব বেশি উনিশ-বিশ হবে না। দার্জিলিং থেকে যদি ঝেপি যান, তাহলে খুব বেশি হলে আপনার দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে, গাড়িতে ভাড়া নিয়ে নিতে পারে প্রায় ৫০০০টাকা। অন্যদিকে, নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঝেপির দূরত্ব ১১৫ কিলোমিটার। যেতে সময়ও লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা।
ঝেপি থেকে আশেপাশের পাহাড়ি গ্রামও ঘুরে দেখতে পারেন। ঝেপি থেকে বিজনবাড়ি তো যেতেই পারেন, তার সঙ্গে ঘুরে নিতে পারেন মেগাটার, শ্রীখোলা, লোধোমা, রিম্বিক। এমনকী ঝেপি থেকে একদিনের মধ্যে ঘুরে আসতে পারেন সামালবং, রেলিং, জওহর পর্বতে গ্রামগুলো। চাইলে দার্জিলিংয়ের সাইটসিনগুলো ঝেপি রাত কাটিয়ে ঘুরে নিতে পারেন। তাই সময় নষ্ট না করে, আজই বুক করে ফেলুন ঝেপির টিকিট। গরমের ছুটিতে পাবেন প্রশান্তি।