Mussoorie: পাহাড়ের রানি হলেও জনপ্রিয়তা বেড়েছে মুসৌরির আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা এই অফবিটগুলির
যদিও মুসৌরির মল হেঁটেই সময় কেটে যাবে, তবু আশেপাশে লুকিয়ে থাকা এই জায়গাগুলোয় একবার ঢুঁ মারতে পারেন। আর তাতেও যদি মন না ভরে, তাহলে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে রয়েছে ধনৌলটি ও কানাতাল।
যে জায়গাটার প্রসঙ্গ বার বার উঠে এসেছে রাস্কিন বন্ডের গল্পে, এটা সেই শৈলশহরের গল্প। এই শহরও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ভাবছেন কোন পাহাড়ি শহরের গল্প বলছি। এটা ভারতের কুইন অফ হিলস মুসৌরির গল্প। যদিও ভারতের কুইন অফ হিলস হিমাচলের সিমলা এবং দক্ষিণ ভারতের উটিকেও বলা হয়ে থাকে, তবে উত্তরাখণ্ডের রানি মুসৌরি।
দেরাদুনের মতই আরেকটি শৈলশহর হল মুসৌরি। দেরাদুন থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই শৈলশহর। উত্তরাখণ্ডের পশ্চিম গাড়োয়ালে অবস্থিত এই হিল স্টেশনটি। ১৮২৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ অফিসার ক্যাপ্টেন ফ্রেডরিক ইয়ং এবং তাঁর অধীনস্থ সহযোগী অফিসার এফ. জে. শোর সেই সময় দুন উপত্যকায় আসেন বেড়াতে। তখনই তাঁদের নজরে আসে একটি পার্বত্য অঞ্চল, যা বর্তমানে মুসৌরি নামে জনপ্রিয়।
অন্যান্য পাহাড়ি শহরের মতই এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বেশ সুন্দর। আর এই কারণেই সারা বছর দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটকেরা ভিড় করেন এই হিল স্টেশনে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, হিমালয়ের দৃশ্য, মনোরম জলবায়ু ছাড়াও বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে এই মুসৌরির জনপ্রিয়তার। তার মধ্যে একটি হল এখানকার সাইটসিন।
মুসৌরি লেক এখানে বেশ জনপ্রিয়। দেরাদুন থেকে যখন মুসৌরি ঢুকবেন, তখনই নজর কাড়বে এই লেক। এখানে আপনি বোটিংও করতে পারেন। এছাড়া শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কেম্পটি জলপ্রপাত। পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল এই জলপ্রপাত। এছাড়াও মুসৌরিতে রয়েছে ভাট্টা জলপ্রপাত। এখানে তুলনামূলক ভাবে পর্যটকদের ভিড় কম।
তবে হিমালয়ের প্যানারমিক ভিউ দেখার জন্য আপনাকে মুসৌরি মল থেকে ৫ কিলোমিটার যেতে হবে। তবেই খুঁজে পাবে লালতিব্বা। এখান থেকে হিমালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অন্বেষণ করতে পারবেন আপনি। এর আরেকটি প্যানারমিক ভিউ দেখতে পাবেন গান হিল থেকে। দুন উপত্যকার সৌন্দর্য দেখার জন্য রোপওয়ে করে আপনাকে পৌঁছাতে হবে গান হিলে। তারপর যে দৃশ্য দেখবেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যদিও মুসৌরির মল হেঁটেই সময় কেটে যাবে, তবু আশেপাশে লুকিয়ে থাকা এই জায়গাগুলোয় একবার ঢুঁ মারতে পারেন। আর তাতেও যদি মন না ভরে, তাহলে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে রয়েছে ধনৌলটি ও কানাতাল।
ধনৌলটি এখন পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। আর হবে না কেন। লকডাউনের বিষণ্ণতা কাটাতে মানুষ এখন এই অফবিটগুলোকেই বেছে নিচ্ছে। মুসৌরি থেকে ঘণ্টা দেড়েকের রাস্তা ধনৌলটি। আপনি যদি প্রকৃতির মাঝে নির্জনতায় কিছুটা সময় কাটাতে চান, ধনৌলটিতে এক রাত কাটিয়ে যেতে পারেন। ওক, পাইন, দেবদারুর সমাহার এখানে। তারই মাঝে ধরা দেয় নন্দাদেবী রেঞ্জ।
এই একই গল্প কিছুটা কানাতালেরও। মুসৌরি থেকে দেড় ঘণ্টার পথ কানাতাল। ধনৌলটি হয়েই পৌছাতে হয় এই অফবিটে। সাধারণত পর্যটকরা মুসৌরি থেকে একদিনেই ঘুরে আসে এই সব অফবিটগুলি থেকে। যাঁরা পাহাড়ের মধ্যে ঘন জঙ্গল, নদী আর একাকীত্ব খুঁজে বেড়ায়, তাঁদের জন্য আদর্শ স্থান হল কানাতাল। এই গ্রামের ঘাস জমি দেখে আপনার মনে হবে, কেউ যেন ভেলভেটের সবুজ চাদর বিছিয়ে দিয়ে গেছে। আর পাহাড়ের আঁকা বাঁকা রাস্তায় আপনারও মন চাইবে হারিয়ে যেতে। আর বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া আপেল বাগান আপনার মন কাড়তে বাধ্য। এমন জায়গায় রাত না কাটালে চলে বলুন তো? তাই ট্যুর প্ল্যান করার সময় এই দুটি জায়গাকে অবশ্যই রাখবেন লিস্টে।
আরও পড়ুন: যেমন জনপ্রিয় তেমনই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর! দু’দিন কাটিয়ে আসুন উত্তরাখণ্ডের এই শহরে