লকডাউনের পর যে জিনিসটা মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে তা হল বেড়াতে যাওয়ার ধুম। সত্যি তো আর কতদিন চার দেওয়ালের মধ্যে বন্ধ থাকা যায়। আর বাড়ির বাইরে পা দিলে কড়া করোনা বিধি মেনে চলা আবশ্যক। এই সব কিছুর মধ্যে পাহাড়ের বেশি ভাল গন্তব্য আর কিছু হয় না। আর যেখানে পাহাড় ডাকে, তার ঠিকানা হিমালয় ছাড়া আর কী হতে পারে! তাই ছুটি কাটানোর নতুন গন্তব্য হতে পারে কানাতাল।
উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়ালের কোলে অবস্থিত কানাতাল। যদি দেবদারু, ওকের ঘন জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে যেতে চান, যদি প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে পেতে চান তাহলে কানাতালের কোনও বিকল্প নেই। দেরাদুন থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে ছবির মত ছোট্ট গ্রামের নাম কানাতাল। আর যদি মুসৌরী আপনার রুট ম্যাপে থাকে, তাহলে সেখান থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটারের রাস্তা এই পাহাড়ি গ্রাম। যদি আপনি দিল্লি দিয়ে সফর শুরু করেন, তাহলে চাম্বা থেকে মুসৌরীর পথেই পড়বে এই ছোট্ট হ্যামলেট।
যাঁরা পাহাড়ের মধ্যে ঘন জঙ্গল, নদী আর একাকীত্ব খুঁজে বেড়ায়, তাঁদের জন্য আদর্শ স্থান হল কানাতাল। এই গ্রামের ঘাস জমি দেখে আপনার মনে হবে, কেউ যেন ভেলভেটের সবুজ চাদর বিছিয়ে দিয়ে গেছে। আর পাহাড়ের আঁকা বাঁকা রাস্তায় আপনারও মন চাইবে হারিয়ে যেতে। আর বাড়ির সঙ্গে লাগোয়া আপেল বাগান আপনার মন কাড়তে বাধ্য। তবে আপেল দেখতে গেলে আপনাকে যেতে হবে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে। তবে আপনি এপিল থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে যে কোনও সময় ঘুরে আসতে পারেন কানাতাল থেকে। আর যদি তুষারপাতের দৃশ্য দেখতে চান, তাহলে যেতে হবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে।
মুসৌরীর মত ব্রিটিশ কলোনির জায়গা যেহেতু কাছেই রয়েছে, সুতরাং কানাতালে ট্যুরিস্ট স্পটের সংখ্যা নেহাত কম নয়। ট্রেকিং করতে চান কিংবা ক্যাম্পিং, অ্যাডভেঞ্চারের জন্য রয়েছে কানাতালের জঙ্গল, যার নাম কোদিয়া। সবুজ অরণ্যের মধ্যে ক্যাম্পিং করার আদর্শ জায়গা হল এই কোদিয়া। এছাড়াও এখানে বনভোজন করতে পারেন। চাইলে ছোটখাটো ট্রেকও করে নিতে পারেন এই কানাতালের এই জঙ্গলে।
এছাড়াও এখানে রয়েছে সুরকন্দ দেবীর মন্দির। এটি হিন্দু দেবী সতীর মন্দির। এটি ভারতের ৫১টি শক্তিপিথা মন্দির গুলির মধ্যে একটি এবং এটি এর আর্কিটেকচারের জন্য জনপ্রিয়। তবে পৌরাণিক কাহিনি তো অবশ্যই রয়েছে। পুরাণে বলা হয়েছে যে এই জায়গাটিই সতীর মাথা পড়েছিল। তবে এর থেকে সুন্দর বিষয়টি হল, মন্দিরটি যেহেতু হিমালয়ের কোলে অবস্থিত, তাই এখান থেকে দেখা যায় পাহাড়ের সেই মনোরম, যা আপনি কোনওদিন ভুলবেন না।
আরও পড়ুন: মরসুমের আগেই বরফে ঢাকা পড়ল উত্তরাখণ্ড; দেখুন ছবিতে!