খুব শীঘ্রই হরিয়ানায় বিশ্বের বৃহত্তম জঙ্গল সাফারি পার্ক হতে চলেছে। এতটাই বিশাল যে খোদ আফ্রিকাতেও সেই আয়তনের পার্ক নেই। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার সম্প্রতি সংযুক্ত আরব এমিরটসের শারজাহ জঙ্গল সাফারি পরিদর্শন করেছেন, আফ্রিকার বাইরের বৃহত্তম পার্ক হিসেবে বর্তমানে পরিচিত।
বুধবার দুবাই সফরে গিয়ে সংযুক্ত আরব এমিরটসের শারজাহ জঙ্গল সাফারি পরিদর্শন করে অনুপ্রাণিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আরব ও আফ্রিকার জঙ্গলে সাফারির মত এবার দেশেও সেই অনুভূতি ও সুযোগ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি। এমন একটি সাফারি পার্ক গড়তে চান যা বর্তমানে আফ্রিকার এমন বৃহত্তম কিউরেটেড পশু পার্ক নেই। বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে আসার পর, তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে হরিয়ানা আরাবল্লীর ১০ হাজার একর জমি জুড়ে একটি জঙ্গল সাফারি পার্ক গড়ে তোলা হবে। সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, হরিয়ানার এনসিার অঞ্চলে একটি জঙ্গল সাফারির বিকাশের অপার সম্ভবনা রয়েছে। গুরুগ্রাম ও নুহ জেলার কিছু অংশ এই পার্কের অন্তর্গত হতে পারে। আর এই প্রকল্পটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকল্প বলে মনে করা যেতে পারে।
আরাবল্লী পর্বতমালায় রয়েছে হরেক প্রজাতির পাখি, বন্য প্রাণী ও প্রজাপতির আবাসস্থল। ওই রাজ্যের সরকারের বিবৃতি অনুসারে, কয়েক বছর আগে একটি সমীক্ষা অনুসারে আরাবল্লী রেঞ্জে প্রায় ১৮০ প্রজাতির পাখি, ১৫ প্রজাতির স্তন্।পায়ী, ২৯ ধরনের জলজ প্রাণী ও সরীসৃপ, ৫৭ প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্রীয় বন , পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব ও হরিয়ানার মুখ্মন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার এই বিষয়ে শারজাহ সাফারি পরিদর্শন করেছেন। জঙ্গল সাফারির প্রকল্পটি শুধুমাত্র দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্য়া বৃদ্ধি হবে তাই নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানেরও বিশাল সুযোগ খুলে যাবে।
ওই আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর পার্কে কী কী অন্তর্ভুক্ত থাকবে?
সরকারি বিবৃতি অনুসারে, প্রস্তাবিত আরাবল্লী পার্কটি হবে শারজাহ পার্কের আকারের থেকেও পাঁচগুণ বেশি। এই পার্কে যে যে প্রাণীকে সাফারিতে দেখা যাবে, তা দেখে নিন একবার…
– একটি বড় হারপেটেরিয়াম,
– এভিয়ারি বা পাখির পার্ক,
– বড় ও বন বিড়ালের চারটি এলাকা,
– তৃণভোজীদের জন্য একটি বড় এলাকা
– বহিরাগত পশু-পাখিদের জন্য একটি পৃথক এলাকা,
– জলের নীচের পৃথিবীকে চেনার জন্য সংরক্ষিত এলাকা,
– প্রকৃতির মধ্যে পথচলা,
– দর্শক ও পর্যটন অঞ্চল।
– বিরল ও দেশি উদ্ভিদ সংক্রান্ত বাগান।
– নিরক্ষীয়, গ্রীষ্মপ্রধান, উপকূলীয় ও মরুভূমি, বিভিন্ন পরিবেশের একটি সংরক্ষনালয়
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, হরিয়ানার জঙ্গল সাফারি প্রকল্পটি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনে মন্ত্রক ও হরিয়না সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করা হবে। প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের জন্য হরিয়ানাকে তহবিল হিসেবে প্রদান করবে।
এমন অভিনব ও রোমাঞ্চে ভরপুর প্রকল্পের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকের কাছে আগ্রত তৈরি হবে। এই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও ডিজাইন করা জন্য ইতোমধ্য়ে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দুটি সংস্থাকে শর্টলিস্টেড করা হয়েছে। ওই বিদেশি সংস্থাগুলি বর্তমানে পার্কের ডিজাইনিং, তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার জন্য একটি আন্তর্জাতিক ডিজাইন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। প্রকল্পটি পরিচালনার জন্য একটি আরাবল্লী ফাউন্ডেশম স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।