
বিশ্বে এমন অনেক হ্রদ, নদী রয়েছে যার রঙ নীল, সবুজ ইত্যাদি। কিন্তু হ্রদের জল হঠাৎ করে গোলাপি হয়ে যায়—এমনটা দেখেছেন কখনও? সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে ভারতে। মহারাষ্ট্রের লোনার হ্রদের রঙ সবুজ থেকে বদলে হয়ে গিয়েছে গোলাপি। কিন্তু এমনটা হল কীভাবে? চলুন জেনে নেওয়া যাক…
শোনা যায়, প্রায় ৫০,০০০ বছর আগে উল্কাপিণ্ডের আঘাতের ফলে সৃষ্টি হয়েছিল মহারাষ্ট্রের এই লোনার হ্রদ। তবে এত দিন পর্যন্ত এই হ্রদের জলের রঙ সবুজই ছিল। ফলে খুব একটা জনপ্রিয় ছিল না পর্যটকদের কাছে। কিন্তু রাতারাতি বদলে যায় লোনার হ্রদের জলের রঙ। এবং সেই রঙ নীল বা স্বচ্ছ সবুজ নয়, হ্রদের জল হয়ে যায় গোলাপি। আর এই ঘটনাই আলোড়ন ফেলে দেয় নেট দুনিয়ায়।
মুম্বই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে বুলধনা জেলায় অবস্থিত এই লোনার হ্রদ। সবুজ অরণ্যে ঘেরা এই হ্রদ বরাবরই একটি পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে সেইরূপে ছিল না। কিন্তু জলের রঙ হঠাৎ করে গোলাপি হয়ে যাওয়ায় পর্যটকদের ভিড় জমতে শুরু করেছে লোনার হ্রদে।
এই লবণাক্ত জলের হ্রদ এখন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। কোভিড লকডাউনের সময় হঠাৎ করে লোনার হ্রদের জলের রঙ গোলাপি হয়ে যায়। এটা দেখতে পর্যটকদের ভিড় যেমন বাড়ে, তেমনই কীভাবে এমনটা হল তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয় বিজ্ঞানীদের মনে।
প্রথম দিকে, অনেকে ভেবেছিলেন জলের নীচে থাকা জলজ উদ্ভিদের কারণে হয়তো এমনটা ঘটেছে। আবার অনেকের মত, লকডাউনে দূষণ কমে যাওয়ার কারণেও এটা ঘটতে পারে। তবে এমনটা ঠিক কী কারণে ঘটল তা এখন অধরা। তবে এই হ্রদকে নিয়ে রহস্যের শেষ নেই।
প্রায় ১.২ কিলোমিটার বিস্তৃত এই হ্রদ আদতে লবণাক্ত জলের। কিন্তু জলের রঙ পরিবর্তনের পর এর স্বাদ আর মিষ্টি নেই। বরং এখন এই হ্রদের দুই ধরনের অম্লত্বের জল পাওয়া যায় এবং এই দুই জল পরস্পর মিশ্রিতও হয় না। অন্যদিকে, এই হ্রদের মাটিতে যে ধরনের খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় তার সঙ্গে মিল রয়েছে চাঁদের মাটিতে পাওয়া খনিজের। সুতরাং, লোনার হ্রদ প্রাকৃতিক রহস্যে ঘেরা। প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টি দেখতে আপনিও ভিড় করতে পারেন মহারাষ্ট্রের লোনার হ্রদে।