গ্রীষ্মপ্রধান দেশে শীতকালই বেড়াতে যাওয়ার সেরা সময়। শুধু মনোরম আবহাওয়ার জন্য নয়। আপনার যদি পরিযায়ী পাখি নিয়ে আগ্রহ থাকে, তাহলে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এই সময় সাইবেরিয়া, ইউরোপ, রাশিয়া, চিন ও তিব্বতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভারতের জলাভূমিতে ঝাঁক-ঝাঁক পাখি আসে। শীতকাল ছাড়া পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে না। শীত কমতে শুরু করলে এই পাখিদের দল আবার পুরনো পথ ধরে আবার পাড়ি দেয় নিজের দেশে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে এখন নভেম্বরে পরিযায়ী পাখিদের দেখা মেলে না। তবে, ডিসেম্বর এলেই জলাভূমিগুলোতে ধীরে ধীরে ভিড় জমায় পরিযায়ী পাখি।
রাজস্থানের কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান, তামিলনাড়ুর পয়েন্ট ক্যালিমের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, গুজরাতের কচ্ছের রণ ও নালসরোবর পাখিরালয়, কেরলের কুমারাকম পাখিরালয়, অরুণাচল প্রদেশের ঈগলনেস্ট বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও পুলিকাট লেক বার্ড স্যাঞ্চুয়ারি, কর্ণাটকের রঙ্গনাথিট্টু পাখিরালয়, গোয়ার সালিম আলি বার্ড স্যাঞ্চুয়ারি, দিল্লির ওখলা বার্ড স্যাঞ্চুয়ারির ইত্যাদি জায়গায় বেড়াতে গেলে আপনি পরিযায়ী পাখি দেখতে পাবেন। যদি হাতে কম দিনের ছুটি থাকে এবং বাজেটও সীমিত থাকে, সেখানেও প্ল্যান করতে পারেন পরিযায়ী পাখি দেখার। এমন ২টি জায়গার খোঁজ রইল, যেখানে সহজেই আপনি পরিযায়ী পাখি দেখতে পাবেন।
সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান- শীতকাল এলে অনেকেই সুন্দরবন বেড়াতে যান। নদীর পাড়ে রয়্যাল বেঙ্গলের রোদ পোহানো দেখবেন, এই আশায়। সুন্দরবনে বাঘ দেখতে পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। কিন্তু শীতে এখানে গেলে পরিযায়ী পাখির দেখা মিলবেই মিলবে। সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানে প্রায় ২৪৮ প্রজাতির পাখি দেখা যায়, যার অর্ধেকেরও বেশি পরিযায়ী পাখি। হেরন, সারস, কমন রেডশ্যাঙ্ক, করমোরেন্ট, স্যান্ড পাইপার, সিগাল, ইউরেশিয়ান কারলিউ, পিনটেল, হুইমব্রেল, ইস্টার্ন নট, কার্লিউ, প্যাসিফিক গোল্ডেন প্লোভার, সাদা চোখ যুক্ত পোচার্ড, টেরেক স্যান্ডপাইপার, গ্রে হেডেড ল্যাপউইং, টেমেনিঙ্ক স্টিন্টেরের মতো পরিযায়ী পাখি দেখা যায় সুন্দরবনে।
চিল্কা হ্রদ- পুরী গিয়েছেন আর চিল্কা হ্রদ ঘুরে দেখেননি, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। শীতকালে ওড়িশার চিল্কায় বহু পরিযায়ী পাখি আস্তানা গড়ে। চিল্কার নলবানা পাখির অভয়ারণ্য, মঙ্গলাজোড়িতে গেলে আপনি পরিযায়ী পাখি দেখতে পাবেন। শীতের মরশুমে চিল্কা হ্রদে ১৬৫ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। গতবছর শীতে ১,১৩১,৯২৯ পাখি এসেছিল চিল্কা হ্রদে, যার মধ্যে ১৮৪টি পরিযায়ী পাখির প্রজাতি ছিল। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে এ বছর অক্টোবর থেকেই পরিযায়ী পাখিরা চিল্কা হ্রদে চলে এসেছে।