ভরা বর্ষায় পাহাড় ভ্রমণ এড়াতে চান অনেকেই। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পিছু পা হতে হয়। যদিও বেশি উচ্চতায়, ধস প্রবণ এলাকায় বর্ষায় বেড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তবে, পাহাড় ভ্রমণের ইচ্ছা দমিয়ে রাখা যায় না। তাই তো বর্ষায় বাড়ে ডুয়ার্সের চাহিদা। কিন্তু বর্ষায় বন্ধ থাকে অভয়ারণ্যগুলো। তাই জঙ্গল সাফারির কোনও সুযোগ নেই। কিন্তু মূর্তি নদীর তীরে বসে কাটাতে পারেন বৃষ্টিতে ভরা একটা উইকএন্ড।
নদীর নামেই গ্রাম। মূর্তি। সারাবছর নদীতে খুব বেশি জল থাকে না। খুব বেশি হলে হাঁটু অবধি। সেটাই ভরা বর্ষায় ফুলে ফেঁপে ওঠে। তবে, নদীর চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট-বড় নুড়ি, পাথরের উপর বসে বসে ডুয়ার্সের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। সবুজে ঘেরা পরিবেশ। পাশ দিয়ে কুলকুল শব্দে বয়ে চলেছে মূর্তি নদী।
মূর্তি নদীর সেতু পার করে চলে যাওয়া যায় গরুমারা জাতীয় উদ্যান। কিন্তু গরুমারা ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ। মনে করা হয়, বর্ষায় বন্যপ্রাণীদের প্রজননের সময়। তাই সেখানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু মূর্তির তীরে বসেও আপনি দেখা পেতে পারেন বন্যপ্রাণী ও পাখির। হাতির দল ও গণ্ডারের পালের দেখা মিলতে পারে মূর্তিতে বসে। তবে, ডুয়ার্সের এই ছোট্ট গ্রামে পাখির দেখা মিলবে ১০০ শতাংশ। হিমালয়ের বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বাস এখানে।
মূর্তি নদীর পাড়ে বসেই কেটে যাবে গোটা সময়। বসে দেখতে পারেন বর্ষায় মূর্তির রূপ বদল। আবার নদীতে মাছও ধরতে পারেন আপনি। যাঁরা শহরের একঘেঁয়ে জীবন ছেড়ে নিরিবিলিতে কিছুটা সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য আদর্শ ডেস্টিনেশন এই মূর্তি। জ্যোৎস্না রাতে আরও মোহময়ী দেখায় মূর্তিকে। পূর্ণিমার আলোয় মূর্তির জল ঝিকমিক করে। নিস্তব্ধ রাতে ঝিঁ ঝিঁর ডাক ছাড়া আর কিছু শোনা যাবে না এখানে। সব মিলিয়ে এক না ভোলা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হবে মূর্তিতে।
মূর্তি থেকে যে সব জায়গা ঘুরতে পারবেন-
মূর্তি থেকে সহজেই ঘুরতে যেতে পারেন সুনতালেখোলা, সামসিং, রকি আইল্যান্ডের মতো ডুয়ার্সের অন্যান্য পর্যটক কেন্দ্রগুলো। এছাড়া মূর্তির খুব কাছেই রয়েছে ভারত-ভুটান সীমান্ত। ভারত-ভুটান সীমান্ত এবং জলঢাকা নদীর উপর জলঢাকা প্রকল্প দেখতে আপনাকে যেতে হবে ঝালং ও বিন্দু। ডুয়ার্সের এই দুই জায়গাও পর্যটকদের বেশ জনপ্রিয়।
কীভাবে যাবেন-
মূর্তি যেতে গেলে আপনাকে নামতে হবে নিউ মাল জংশনে। নিউ মাল জংশন থেকে মূর্তির দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকেও আপনি যেতে পারেন মূর্তি। সেক্ষেত্রে আপনাকে চালসা হয়ে পৌঁছাতে হবে সেখানে। চালসা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটারের পথ মূর্তি।
কোথায় থাকবেন-
মূর্তি নদীর পাশেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের ‘বনানী’ ট্যুরিস্ট লজ। ভাড়া ২,২০০-২,৮০০ টাকা। পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের অফিসিয়াল সাইট www.wbfdc.com এ গিয়ে আপনি রুম বুক করতে পারেন।