ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কারণে সিয়াচেন গ্লেসিয়ার বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র। কাছেই লাদাখ, নুব্রা ভ্যালি হওয়া সত্ত্বেও এই সিয়াচেন গ্লেসিয়ার এখনও অবধি পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল। কিন্তু এবার বিনা অনুমতিতেই আপনি সিয়াচেন বেস ক্যাম্পে বেড়াতে যেতে পারবেন। লাদাখের পর্যটন বিভাগের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ভারতীয় পর্যটকেরা কোনও অনুমতি ছাড়াই সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের কাছে থাকা পর্যটক কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখতে পারবেন।
সিয়াচেন গ্লেসিয়ার ভারতীয় সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই হিমাবহ পূর্ব কারাকোরাম রেঞ্জে অবস্থিত। কাছেই রয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের কন্ট্রোল লাইন। এবার বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্রের বেস ক্যাম্পে বেড়াতে যেতে পারবেন, তাও কোন অনুমতি ছাড়াই। সেখানে বেড়াতে যাওয়া আপনাকে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা এনে দিতে পারে। সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের ১২,০০০ ফুট থেকে ১৫,০০০ ফুট পর্যন্ত জায়গাটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলের বাইরে আপনি যেতে পারবেন না।
নুব্রা ভ্যালির কোলে অবস্থিত সিয়াচেন বেস ক্যাম্প বরাবরই পর্যটকদের মূল আকর্ষণ কেন্দ্র ছিল। কিন্তু সেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার লাদাখ বেড়াতে গেলে অনায়াসে ঘুরতে যেতে পারবেন সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের আশেপাশে। যদিও এর আগে সাধারণ মানুষদের জন্য ছিল সিয়াচেক ট্রেকিংয়ের সুবিধা। ভারতের হিমালয়ে যে কয়েকটি ট্রেক করা হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং এবং দুর্গম ট্রেকিং রুট এই সিয়াচেন।
২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সেনা অ্যাডভেঞ্চার সেল-এর পরিচালনায় এই সিয়াচেন ট্রেক করা হত। সেখানে সিভিলিয়ানরা অংশগ্রহণ করতে পারতেন। এই ট্রেক সম্পন্ন করতে সময় লাগত মোট ৩০ দিন। প্রশিক্ষণ এবং শারীরিক দক্ষতা যাচাইয়ের পরই এই ট্রেক করার অনুমতি দেওয়া হত। এমনকী ৪৫ বছরের কম সিভিলিয়ানই শুধুমাত্র এই ট্রেক করতে পারতেন। সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ১১ হাজার ফুট এবং কুমার পোস্টের উচ্চতা প্রায় ১৬ হাজার ফুট। এই দুই জায়গা থাকত সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের ট্রেকিংয়ে। এবার এই ১১ হাজার ফুট উচ্চতায় সিয়াচেন বেস ক্যাম্প আপনি বিনা অনুমতিতেই ঘুরতে যেতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত নুব্রা ভ্যালিতে অবস্থিত তুরতুক, ত্যাকশি গ্রামে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। সময়ের সঙ্গে লাদাখের এই গ্রামগুলোও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ধীরে-ধীরে জনপ্রিয়তাও বাড়তে থাকে। আর এখন নুব্রা ভ্যালি বেড়াতে গেলে তুরতুক গ্রামকে বাদ দেন না কেউই। আগামী দিনে এমনই জনপ্রিয়তা অর্জন করবে সিয়াচেন বেস ক্যাম্পের আশেপাশের অঞ্চলও।