পাহাড় ও সমুদ্র একসঙ্গে ঘুরে দেখতে চান? এই বছর পুজোয় যেতে পারেন ভারকালা। ঈশ্বরের নিজের দেশ বলা হয় কেরলকে। সেই কেরলেই আরব সাগরের তীরে অবস্থিত ভারকালা। তিরুঅনন্তপুরম শহরে শেষ প্রান্তে রয়েছে ভারকালা। যদিও এই পর্যটন কেন্দ্র সমুদ্র সৈকত নামের পরিচিত। কিন্তু সমুদ্র সৈকতের পার ঘেঁষে রয়েছে বড়-বড় ঢিলা। সেখানেই লাইন দিয়ে রয়েছে সারি-সারি দোকান-পাট, রেস্তোরাঁ-ক্যাফে, পানশালা ও হোটেল। আর সব জায়গাতেই রয়েছে পশ্চিমি দুনিয়ার ছাপ। যে কারণে আপনি যদি পাহাড়ের উপর কোনও হোটেলে রাত কাটান সেখান থেকে দেখতে পাবেন গোটা সমুদ্র সৈকত।
ভারকালার সমুদ্র সৈকতে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় বেশি। গাঢ় নীল সমুদ্র, সোনালি বালুচর, আর সবুজের ছোঁয়া। তার সঙ্গে লালচে পাহাড়। সমুদ্র সৈকতের একদম গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পাহাড়। সকালবেলা একদম ভিড় দেখা যায় না এখানে। বেলা বাড়লে রোদ পোহাতে আসেন পর্যটকেরা। ভিড় জমে সমুদ্রতটে থাকা স্যাকগুলোতেও। তবে, ভারকালার সমুদ্র সৈকত সেজে ওঠে সূর্য ডুব দেওয়ার পর। পাহাড়ের উপর থাকা রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, দোকানগুলোতে আলো জ্বলে ওঠে। তার সঙ্গে চলে গান-বাজনা। সব ধরনের সি-ফুড পাওয়া যায় এখানকার রেস্তোরাঁতে। বিদেশি পর্যটকদের ভিড় বেশি হওয়ায় এখানে কন্টিনেন্টাল খাবারের চল বেশি।
ভারকালার সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত হল পাপনাশম বিচ। এখানেই সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। শান্ত ও নির্জন সমুদ্র সৈকত। এই পাপনাশম বিচ থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে একটি ঝরনা বেলাভূমি। বলা হয়, এই ঝরনা জলে রয়েছে ওষুধি গুণ। তাই পাপনাশম বেলাভূমির জলে স্নান করলে সমস্ত পাপ, শারীরিক ক্লান্তি ধুয়ে চলে যায়। এছাড়া ভারকালা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কাপ্পিল সমুদ্র সৈকত। এই সমুদ্র সৈকতে বসে সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। ভারকালার খুব কাছেই রয়েছে আনজেনগো লাইট হাউস।
তিরুঅনন্তপুরম শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে ভারকালা। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও এই শহরে আরও এমন জায়গা রয়েছে, যা সহজেই ঘুরে দেখা যায়। সংস্কৃতি ও শিল্পে সমৃদ্ধ এই শহর। এই শহরে রয়েছে ২০০ বছরের পুরনো জনার্ধন স্বামী মন্দির। এই মন্দিরের স্থাপত্য দেখার মতো। এই মন্দির ভারকালা সমুদ্র সৈকতের খুব কাছেই।
ভারকালার নিকটতম বিমানবন্দর হল তিরুঅনন্তপুরম। শহর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই বিমানবন্দর। ট্রেনে গেলে আপনাকে নামতে হবে ভারকালা-সিভাগিরি। ত্রিবান্দ্রমের মতো শহরে যেতে গেলেও ভারকালা স্টেশনে নামতে হয়। এছাড়া কোচিন, তিরুঅনন্তপুরম ইত্যাদি জায়গা থেকে গাড়ি পেয়ে যাবেন ভারকালা যাওয়ার।