এই পৃথিবী থেকে শুরু করে, এরই মধ্যে থাকা যে কোনও পশু-পাখি, মানুষ অথবা উদ্ভিদ, নদী-নালা, পাহাড় অথবা সমুদ্র সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার পথে ফেলে আসা এ রূপের সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ। একটি নদীর গতিপথে ফেলে আসা রূপ দেখার জন্য বারবার ফিরে যাই তারই গতিপথে। মানব সভ্যতা নদীকেন্দ্রিক হওয়ায় আদিম যুগ থেকে তারই পাশে বসতি স্থাপন করে চলেছে মানুষ। এর সঙ্গে কর্মব্যস্ততার মাঝে প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় তারই অভিমুখে। তাই আজ চলুন কিছুটা সময় বের করে সারা সপ্তাহের কর্ম-ক্লান্তি দূর করতে বেরিয়ে পড়ি এমন একটি নদীর ধারে, যার রূপ দেখে সমস্ত সপ্তাহের ক্লান্তি দূর হয়ে যাক। বেরিয়ে পড়ি বাইক নিয়ে কলকাতা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দামোদর নদের উপরের একটি স্থান যার নাম বেগোর মুখ, এখান থেকেই মুণ্ডেশ্বরী নদীর উৎপত্তি। এরই সঙ্গে রয়েছে কিছু ইকো পার্কের ঠিকানা, যেখানে আপনি প্রচুর সময় কাটাতে পারবেন। এর সঙ্গে এখানে রয়েছে বাঁশ এর তৈরি সাঁকো দামোদর নদী পারাপারের জন্য।
এর সঙ্গে বাইকপ্রেমীদের জন্য রয়েছে এমন একটি অনুষ্ঠানের ঠিকানা, যার জন্য আমি অথবা আমাদের ভিলেজ বাইকের পরিবার এই অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করার জন্য এক বছর ধরে অপেক্ষা করি। যার নাম WBRM (ওয়েস্ট বেঙ্গল রাইডার্স মিট ২০২৪)। অনুষ্ঠিত হবে ৭ জানুয়ারি রবিবার দামোদর নদের একটি বাঁকে, যার নাম ‘বরদা ফুটবল গ্রাউন্ড সংলগ্ন তরুছায়া পার্ক’ বা বরদা পার্ক।
রবিবার সকাল-সকাল ব্রেকফাস্ট করে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন ডানকুনি হয়ে সিঙ্গুর, মহেশ্বরপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে বাঁ দিক নিয়ে সোজা চলে আসুন রুদ্রানী, ধনিয়াখালি হয়ে বেগোর মুখে যেখানে মুণ্ডেশ্বরী নদীর উৎস মুখ। এই জায়গাটি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বিখ্যাত একটি স্থান, যার ভৌগলিক অবস্থান এবং চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য। এই অঞ্চলটিতে রয়েছে দামোদর নদের সবথেকে চওড়া এবং বিস্তীর্ণ বালুরাশির পাড়; তার সঙ্গে এখানে রয়েছে বিস্তীর্ণ গাছপালার মাঝে বাঁশের তৈরি সাঁকো এবং খোলা আকাশের নীচে দামোদর নদের নীল জল আপনাকে মুগ্ধ করবে। এরই সঙ্গে এখানেই মুণ্ডেশ্বরী নদীর উৎসস্থল হওয়ার কারণে ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরই সঙ্গে এখানে রয়েছে বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক সবুজে মোড়া গালিচা, যা দেখতে খুবই ভাল লাগে এবং নদের ধারা সৃষ্ট বালুরাশির ল্যান্ডস্কেপ সত্যিই আপনাকে ভাবিয়ে তুলবে। অসংখ্য ছবি এবং তার সঙ্গে নৌকা নিয়ে দামোদর নদের উপর সময় কাটাতে পারেন।
এখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে তারপর বাইক নিয়ে চলে আসুন দামোদর নদের পাশ দিয়েই ৫০ কিলোমিটার দূরে গড় ভবানীপুর অঞ্চলের বরদা পার্কে। এখানেই আমাদের ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। একদিনের এই অনুষ্ঠানে নানা ধরনের গুণী মানুষের মধ্যে থাকছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, রিক্সা। এছাড়াও কিছু মানুষের শুধু পায়ে হেঁটে বিশ্বজয়ের ভ্রমণের কাহিনী, তাদের নিজেদের মুখে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, যা আপনার জ্ঞানের সঙ্গে সঙ্গে ভ্রমণের ইচ্ছেও জাগিয়ে তুলবে। এছাড়াও আমাদের এই অনুষ্ঠানে খেলার মধ্যে থাকছে জিপ লাইন, বার্মা ব্রিজ, কায়াকিং, ওয়াটার রোলার এবং আরচার প্রতিযোগিতা। সবই অনুষ্ঠিত হবে দামোদর নদের ওপরেই। সবার আমন্ত্রণ রইল এছাড়া এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য চলে আসুন wbrm.in এ।
দামোদর নদের বাঁকে ওপর গড়ে ওঠা এই পার্কে সময় কাটিয়ে চলে আসুন পরবর্তী গন্তব্য, যার নাম সন্তোষনগর ইকোপার্ক। মন্দারিয়া ব্রিজের নীচে অবস্থিত এই পার্কে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ। শীতকালে নানা ধরনের ফুলের চাষ থেকে আরম্ভ করে, পরিযায়ী পাখির সমাগমও দেখা যায় এখানে। একপাশের বয়ে চলা দামোদর নদ এবং তারই পাশে বিস্তীর্ণ ধানের জমি এবং অন্য পাশে লালমাটির রাস্তার উপর গড়ে ওঠা এই ইকো পার্কের সৌন্দর্য সত্যিই অসাধারণ। এছাড়াও এরই এক পাশে ঝাউ বাগানও আছে। এখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে আমতা হয়ে চলে আসুন কলকাতায়।