Last Village In South India: দক্ষিণ ভারতের শেষ গ্রামের নাম জানা আছে? জীবনে অন্তত একবার কেন যাবেন, জানুন

Dhanushkodi: এই শহরকে অনেকেই ভূতের শহর বলে চেনে। কোনও ভয়ংকর ঘটনা যদিও ঘটেনি। তবে এখানে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জনবসতি প্রায় নেই বললেই চলে।

Last Village In South India: দক্ষিণ ভারতের শেষ গ্রামের নাম জানা আছে? জীবনে অন্তত একবার কেন যাবেন, জানুন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2022 | 2:45 PM

দক্ষিণ ভারতের (South India) গুপ্ত রত্ন বললেও ভুল হবে। কারণ এই জায়গার নাম অনেকেরই অজানা। জানলেও এতদূরে কেউ যান না। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এক গ্রামকে নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যাবে না, এই ছোট্ট শহরটি ভারতের শেষ শহর (Last Village In South India), ধানুশকোড়ি (Dhanushkodi )। জনবসতি তেমন না থাকলেও পর্যটকদের ভিড় এখন দিন দিন বাড়ছে। প্রাকৃতিক ও রোমাঞ্চকর সৌন্দর্যের টানে, আকর্ষণীয় রাস্তা বেয়ে পর্যটকরা বারে বারে ফিরে আসছেন। প্রযুক্তিগতভাবে ধানুশকোড়ি তামিলনাড়ুর পামবান দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও সুন্দর ট্রাভেল স্পট হিসেবে যেমন আকর্ষণীয়, তেমন এখানে রয়েছে কিছু লোককাহিনি। এমন একটি দর্শনীয় স্থানে বার বার না গেলেও জীবনে অন্তত একবার দর্শন করা যেতেই পারে। এবছর পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন দেশের দক্ষিণ দিকের শেষ শহর ধানুশকোড়িতে।

এই শহরকে অনেকেই ভূতের শহর বলে চেনে। কোনও ভয়ংকর ঘটনা যদিও ঘটেনি। তবে এখানে একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জনবসতি প্রায় নেই বললেই চলে। ১৯৬৪ সালে এক ভয়ংকর ঘূর্ণিঝর এই গ্রামে আছড়ে পড়ে। যার জেরে প্রচুর সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। তার ধ্বংসাবশেষ এখনও রয়েছে। দক্ষিণ ভারতের শেষ গ্রাম কেন বলা হয়, তারও রয়েছে একটি গল্প। এটি পামবান দ্বীপের প্রান্তে অবস্থিত। পাক প্রণালী দ্বারা পৃথক করা ফলে একপাশে রয়েছে বঙ্গোপসাগরের নীল ঘোলাটে জল, অন্যদিকে, খুব কাছেই রয়েছে শ্রীলঙ্কা।

ধানুশকোড়িকে একটি পরিত্যক্ত শহর বলে মনে করা হয়। এর আক্ষরিক অর্থ হল ধনুকের শেষ অংশ। তেমনিই ভারতের শেষ ভূমি। রামায়ণের বিখ্য়াত কিংবদন্তিতে রয়েছে, ভগবান রাম লঙ্কায় যাওয়ার জন্য একটি ভাসমান পাথরে তৈরি একটি সেতু তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই রামসেতু নির্মাণের জন্য একটি স্থানকে চিহ্নিত করেছিলেন তিনি। স্ত্রী সীতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য নির্মিত ওই সেতু এই জায়গা থেকেই তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

ধানুশকোড়িতে গেলে কী কী দেখবেন

পামবান দ্বীপ– গভীর নীল সমুদ্রের অসীম দিগন্তের সঙ্গে এই সুন্দর জায়গাটি হৃদয় জয় করে নেবে নিশ্চিত। ধানুশকোড়ি থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে অবস্থিত এই জায়গাটি মনের কোণের স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই দেবে না। বঙ্গেপসাগর ও ভারত মহাসাগরের সঙ্গম উপেক্ষা করে এই জায়গায় পৌঁছানোর জন্য বিখ্যাত পামবান সেতু অতিক্রম করতে হবে। রামেশ্বরম ও পামবানের জনবসতি ছাড়িয়ে যেতে হবে এই জায়গায়। বিশেষ করে রামায়নের কিংবদন্তিতে এর উল্লেখ অনেক তাত্‍পর্য রাখে।

অ্যাদম ব্রিজ – ৫০ কিমি দীর্ঘ ও ৩ কিমি চওড়া একটি সেতু অতিক্রম করার রোমাঞ্চকর অনুভূতি তৈরি হয় এখানে। অ্যাদমের সেতুটি ভারত থেকে শুরু হয় ও শ্রীলঙ্কার মান্নার দ্বীপে গিয়ে শেষ হয়। প্রাচীন সেতু নামেও পরিচিত এটি। রামের সেনাবাহিনী এই সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। যদিও পৌরাণিক স্থানটিকে গিরে প্রচুর বিতর্ক রয়েছে। তবে দক্ষিণ ভারতে গেলে এই জায়গাটি মিস করবেন না একেবারে।

মান্নার উপসাগর, মেরিন ন্যাশানাল পার্ক

২১টি দ্বীপের দ্বীপপুঞ্জটি আপনার চোখ আর মন দুটোই ভরে যাবে। আরও মজার ব্যাপার হল, এটি হল দেশের প্রথম মেরিন পার্ক। ২১টি দ্বীপকে কভার করে এই মেরিন ন্যাশানাল পার্কটি বিশ্বের মহাসাগরীয় বিভাগের তৃতীয় বৃহত্তম পার্ক। এখানে রয়েছে সবেচেয়ে বেশি জলজ জীবজগতের সংরক্ষণ কেন্দ্র। এখানে রয়েছে তিনটি জলজ বাস্তুতন্ত্র। প্রবাল প্রাচীর, সামুদ্রিক ঘাস ও ম্য়ানগ্রোভ। পার্কের বিভিন্ন মোহনা, সৈকত , বনভূমি ও সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলতে ও প্রকৃতিতে আরও মোহময়ী করে তুলতে এই পার্কের অবদান অনস্বীকার্য।

কীভাবে যাবেন

ফ্লাইটে: আকাশপথে ভ্রমণ করা একটু ক্লান্তিকর হতে পারে কারণ নিকটতম বিমানবন্দরটি মাদুরাই থেকে প্রায় ১৯০-২০০ কিলোমিটার দূরে।

ধনুশকোডিতে সড়কপথে যাওার প্ল্যান করলে দারুণ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন। রামেশ্বরম থেকে নিয়মিত বিরতিতে বাস পাওয়া যায়।

ট্রেনে আবার, নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হবে রামেশ্বরম। এটি ধনুশকোডি থেকে প্রায় ১৮-২০কিমি দূরে। রামেশ্বরম থেকে ফ্লাইট ভ্রমণের পাশাপাশি সংযুক্ত বাসে চড়ে যাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ।