
ভরা বর্ষায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ে পুরুলিয়ায়। এসময় সবুজে ভরে ওঠে গ্রাম বাংলায়। তাছাড়া কম দিনের ছুটিতে, কাছে-পিঠের মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার সেরা ঠিকানা পুরুলিয়া। সামনেই রয়েছে অগস্টে লং উইকএন্ড। এই সময়ে অনেকেই পুরুলিয়া বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করতে পারেন। কিন্তু এবার আর পুরুলিয়া চেনা-পরিচিত জায়গায় যাবেন না, বরং বেছে নিন অফবিটকে। পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়, গড় পঞ্চকোট, বড়ন্তি, অযোধ্যা ইত্যাদি পর্যটকদের মধ্যে খুব জনপ্রিয়। কিন্তু এই অগস্টের ছুটিতে আপনি যেতে পারেন দোলাডাঙা।
কংসাবতী জলাধারের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে সোনাঝুরি, শিমুল, পলাশ, পিয়ালের জঙ্গল। সেখানেই রয়েছে দোলাডাঙা। এই জঙ্গলের ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে ছোট ছোট কটেজ। এই কটেজে বসেই দেখতে পাবেন কংসাবতীর জল, কুমারী নদী। এরই অন্য পাড়ে রয়েছে মুকুটমণিপুরের জলরাশি। বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর ড্যাম থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে দোলাডাঙা।
মাত্র ৯-১০টি ঘর নিয়ে গড়ে উঠেছে দোলাডাঙা। মাত্র ৪০ জন মানুষের বাস দোলাডাঙায়। এই আদিবাসীদের জীবনধারা খুবই সাধারণ। কিন্তু আপনি এই দোলাডাঙায় বেড়াতে গেলে মুখোমুখি হতে পারেন ছোঁ নাচের। আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব গানে নৃত্য পরিবেশন করে এখানে।
দোলাডাঙার অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প গড়ে উঠেছে সোনাঝুরির জঙ্গলের মাঝে। তাই শহুরে কোলাহলের চিহ্ন অবধি নেই এখানে। এখানকার কটেজগুলো অস্থায়ী। তাঁবু খাটিয়ে থাকা যায় দোলাডাঙায়। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কংসাবতীর ধারে বসে সময় কাটিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। অবসর যাপনের জন্য সেরা জায়গা এই দোলাডাঙা।
দোলাডাঙা থেকে অযোধ্যা পাহাড় মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এখান থেকে ঘুরতে যেতে পারেন মার্বেল লেক, খয়রাবেড়া, বামনি জলপ্রপাত, আপার ড্যাম, লোয়ার ড্যাম, মুখোশ গ্রামে। দোলাডাঙা থেকে প্রায় ১০৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে মুরগুমা। অগস্টের লং উইকএন্ডে যেতে পারেন এই মুরগুমারেও।
দোলাডাঙার মতোই মুরগুমা জলাশয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। যদিও এর তিন দিক জলাধার আর তার মাঝে ছোট ছোট সবুজ বন। এখানকার শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে পারেন। মুরগুমায় পাহাড়ের উপর রয়েছে সুইসাইড পয়েন্ট, যেখান থেকে দেখা যায় পুরুলিয়ার নৈসর্গিক দৃশ্য। জলাধার থেকে দেড় কিলোমিটার হেঁটে উপরে উঠতে হয় সুইসাইড পয়েন্টে। দোলাডাঙার সঙ্গে মুরগুমাকেও রাখতে পারেন ভ্রমণের তালিকায়। এছাড়া দোলাডাঙা থেকে যেতে পারেন মুকুটমণিপুর। মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত মুকুটমণিপুর। এছাড়া ৯০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বিষ্ণুপুর। পুরুলিয়া ঘুরে ফেরার পথে ঢুঁ মারতে পারেন বাঁকুড়ার এই দুই পর্যটন কেন্দ্রে।