
দিনভর কাজের ক্লান্তি শেষে শরীর ও মনকে বিশ্রাম দেয় ঘুম। কিন্তু অনেকেই বলে থাকেন যে, ঘুম তো আসে, কিন্তু একটু আওয়াজ বা আলো জ্বলে উঠলেই তা কেটে যায়। এই পাতলা ঘুম বা লাইট স্লিপ-এর সমস্যা আজকাল ক্রমেই অনেকের মধ্যে বাড়ছে। ঘুম ঠিকমতো না হলে ক্লান্তি, বিরক্তি, মনোসংযোগের অভাব থেকে শুরু করে হরমোনের ভারসাম্য পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। তাই ঘুমের গুণমান বজায় রাখা জরুরি।
১. অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ – মানসিক চাপ থাকলে মস্তিষ্ক পুরোপুরি রিল্যাক্স হতে পারে না।
২. অনিয়মিত রুটিন – কখনও দেরিতে ঘুম, কখনও তাড়াতাড়ি, এর ফলে শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লক বিগড়ে যায়।
৩. ক্যাফেইন বা নিকোটিন গ্রহণ – চা, কফি বা সিগারেটের নিকোটিন ঘুমের গভীরতা কমায়।
৪. স্ক্রিন টাইম বেশি হওয়া – মোবাইল, টিভি বা ল্যাপটপের নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন কমিয়ে দেয়।
৫. শরীরের সমস্যা – থাইরয়েড, স্লিপ অ্যাপনিয়া বা অতিরিক্ত ওজনও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
প্রতিদিন ঘুমানোর আগে এক নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন – যেমন হালকা আলোযুক্ত স্থানে থাকা, বই পড়া বা ধ্যান করা। এতে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে ঘুমের মোডে চলে আসে।
চা, কফি বা কোলা জাতীয় পানীয় সন্ধ্যার পর এড়িয়ে চলুন। ক্যাফেইনের প্রভাব শরীরে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকে। যা ঘুমকে হালকা করে দেয়।
ঘুমের ঘর হোক ঠান্ডা, অন্ধকার ও নিরিবিলি। বিছানার গদি ও বালিশ যেন আরামদায়ক হয়।
ঘুমনোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে স্ক্রিন বন্ধ করুন। প্রয়োজনে “নাইট মোড” ব্যবহার করুন।
গরম দুধের সঙ্গে সামান্য জায়ফল গুঁড়ো বা ক্যামোমাইল চা ঘুম গভীর করতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন রাতে ৫ মিনিট ডিপ ব্রিদিং বা ধ্যান করলে মন শান্ত হয়, স্ট্রেস কমে।
দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটলে ঘুমের মান উন্নত হয়, শরীরের ক্লান্তিও বাড়ে না।
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোতে যান ও উঠুন। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি ঠিক থাকে।
ভারী, তেল-মশলাযুক্ত খাবার ঘুমে বিঘ্ন ঘটায়। রাতে হালকা, সহজপাচ্য খাবার খান।
পাতলা ঘুম কোনও ছোটখাটো বিষয় নয়, এটি শরীরের ভারসাম্য ও মানসিক স্থিতি দুটোই নষ্ট করতে পারে। নিয়ম মেনে চললে ও কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। আর যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।