
আজকালকার ব্যস্ত জীবনে আমরা খাওয়াদাওয়াকে অনেক সময়েই কেবল পেট ভরার মাধ্যম ভেবে থাকি। কেউ ফোনে চোখ রেখে খাই, কেউ আবার টিভির সামনে বসে অজান্তেই প্লেট ফাঁকা করে ফেলি। অথচ খাওয়ার সময় একটু সচেতনতা, যাকে বলে মাইন্ডফুল ইটিং (Mindful Eating) তা যদি মাথায় রাখি তা হলে শুধু শরীর নয়, মনেরও স্বাস্থ্যও ভাল হতে পারে।
এটি হল এমন এক অভ্যাস, যেখানে খাওয়ার প্রতিটি মুহূর্তকে মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করা হয়। খাবারের গন্ধ, রং,স্বাদ—সবকিছুকে অনুভব করতে হয়। মূল লক্ষ্য হল খাওয়ার অভ্যাসে সচেতনতা আনা এবং অযথা অতিরিক্ত খাওয়া কমানো।
আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা প্রায় ৩০% পর্যন্ত কমাতে পারে। আবার হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ জানিয়েছে, ধীরে ধীরে ও মনোযোগ দিয়ে খেলে শরীরের মেটাবলিজম সক্রিয় হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে স্থূলতার ঝুঁকি হ্রাস করে।
মাইন্ডফুল ইটিং শুধু শরীরকে হালকা রাখে না, মনকেও শান্ত করে। খাওয়ার সময় এই সচেতনতা আমাদের ধৈর্য বাড়ায়, তাড়াহুড়ো কমায়, আর খাবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জাগায়। একথা মনোবিজ্ঞানীরাও বলেন। খাওয়ার সঙ্গে মনকে যুক্ত করতে পারলেই মানসিক চাপ কমে যায় অনেকটা।
অতএব, মাইন্ডফুল ইটিং মানে কেবল ডায়েট কন্ট্রোল নয়। তা শরীর ও মনের একসঙ্গে যত্ন নেওয়ার সহজ পদ্ধতি। প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝেও কয়েক মিনিট সময় দিন নিজের প্লেটকে, নিজের শরীরকে। মনে রাখবেন, খাবার শুধু পেট ভরায় না, সঠিকভাবে খেলে সেটিই হয়ে ওঠে সুস্থ জীবনযাপনের মূল ভিত্তি।