
বর্ষাকাল মানেই আর্দ্রতা, ভেজাভাব আর কখনও ঠান্ডা, কখনও গরম—এই আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে শরীরেও নানা পরিবর্তন দেখা যায়। তার মধ্যে অন্যতম বিরক্তিকর সমস্যা হলো—ঘামে দুর্গন্ধ (Body Odor)। অনেকেই লক্ষ্য করেন, গ্রীষ্মের তুলনায় বর্ষাকালে ঘামের গন্ধ যেন আরও তীব্র হয়। কেন এমন হয়? আর কীভাবে এই অস্বস্তিকর গন্ধ থেকে মুক্তি পাবেন? চলুন জেনে নিই।
বর্ষাকালে ঘামে গন্ধ বেশি হওয়ার কারণ:
১. বাতাসে আর্দ্রতার আধিক্য:
বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে ঘাম সহজে শুকায় না। ফলে শরীরে ঘামের সঙ্গে থাকা প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মৃত কোষে ব্যাকটেরিয়া সহজে জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়াই গন্ধের মূল কারণ।
২. শরীরের বায়ু চলাচল কম:
বর্ষায় অনেকেই আঁটসাঁট বা সিনথেটিক জামা-কাপড় পরেন, যা শরীরের বায়ু চলাচল ব্যাহত করে। এর ফলে ঘাম বেশি হয় ও তাড়াতাড়ি শুকায় না।
৩. ফাঙ্গাল সংক্রমণের প্রবণতা:
বর্ষাকালে পা, বগল, গলা, কোমর, কুচকির মতো জায়গায় ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বেশি জন্মায়, যার ফলে দুর্গন্ধ হয়।
৪. স্নান না করা বা ঘন ঘন জামাকাপড় না বদলানো:
বর্ষায় অনেকেই ঠান্ডার ভয়ে কম স্নান করেন বা ভেজা জামাকাপড় পরে থাকেন। এতে শরীরে ব্যাকটেরিয়া জমে দুর্গন্ধ বাড়ে।
দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়:
১. নিয়মিত স্নান করুন:
প্রতিদিন অন্তত একবার (বিশেষ করে বাইরে থেকে এসে) অ্যান্টিসেপটিক সাবান বা ফেনাইল জল মিশিয়ে স্নান করুন।
২. তুলোর হালকা জামা পরুন:
সিনথেটিক নয়, বরং হালকা রঙের সুতির জামা পরুন। এতে শরীরের বায়ু চলাচল সহজ হয়।
৩. বগল, পা ও কোমরের অংশ শুকনো রাখুন:
এই অংশগুলো বেশি ঘামে। দিনে ২ বার পাউডার বা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করুন।
৪. ডিওডোরেন্ট বা ন্যাচারাল রেমেডি ব্যবহার করুন:
অ্যালুমিনিয়াম-ফ্রি ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করুন। ঘরোয়া উপায়ে বেকিং সোডা বা পাতিলেবুর রসও বগলে মাখতে পারেন।
৫. ভেজা জামাকাপড় না পরে থাকুন:
ভেজা জামা যত দ্রুত সম্ভব পাল্টে ফেলুন। এতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ হয়।
বর্ষাকালে ঘামের দুর্গন্ধ হওয়া স্বাভাবিক, তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললে সহজেই এই সমস্যার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিজেকে সুগন্ধী ও সতেজ রাখতে হলে সতর্কতা ও যত্নই যথেষ্ট।