Physical Intimacy: মানসিক কারণেই মহিলারা প্রতারণা করেন? যা বলছে নতুন গবেষণা

Woman's interest in intimacy: যৌন জীবন আমি নিজেও উপভোগ করেছি। তবে আমি বেশিদিন যৌনতা উপভোগ করতে পারি না...

Physical Intimacy: মানসিক কারণেই মহিলারা প্রতারণা করেন? যা বলছে নতুন গবেষণা
বিয়ে মানে কি শুধুই যৌনতা

| Edited By: রেশমী প্রামাণিক

Aug 26, 2022 | 10:45 PM

‘সম্পর্ক’- ছোট্ট শব্দ কিন্তু এর ব্যাপ্তি বিশাল। যে কোনও সম্পর্ককেই নিজের মত গড়ে-পিটে নিতে অনেকখানি সময় লাগে। তা যে যতই কাছের হোক না কেন। যে সম্পর্ক যত বেশি গাঢ় হয় সেখানে ততই বেশি থাকে হারিয়ে ফেলার ভয়। সুখী সম্পর্ক বা সুখী দাম্পত্য কথার মধ্যে ব্যবহার করলেও সেই সম্পর্কে কি ভরপুর বিশ্বাস থাকে? কবির কথা ধার করে খুব সহজেই বলে দেওয়া যায় যে মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। কিন্তু সেই বিশ্বাস সব সময় টিকিয়ে রাখা যায় কি? আপাতদৃষ্টিতে কোনও সম্পর্ক দেখে মনে হতেই পারে যে তা খুব সুখের। কোনও রকম ঝগড়া-ঝামেলা নেই। ঠিক যেন বইতে পড়া সেই নীতিবাক্য- ‘And They Lived Happily Ever After’

কিন্তু যখন সেই চেনা ছন্দে ছেদ পড়ে তখন খুব সহজেই ছেলেটি বা মেয়েটির গায়ে সেঁটে যায় প্রতারকের তকমা। দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে মানুষ খুব তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। সেখান থেকে উত্তোরণের পথ খুঁজে নিতেই অধিকাংশ মহিলার সঙ্গী এখন ‘গোপন প্রেমিক’। সেই প্রেমিকের সঙ্গে শরীরের যোগ যতখানি, তার থেকেও অনেক বেশি যোগ মনের। নিজের মতো করে ভাল থাকা, নিজের শান্তির আশ্রয় তাঁরা খুঁজে নিচ্ছেন এই গোপন প্রেমিকের মধ্যেই। শুনে অবাক লাগছে? বিজ্ঞান প্রতারকের তকমা এঁটে দিয়েছে এই মেয়েদের গায়েই।

সম্প্রতি মেলবোর্ন এবং মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষণা চালান একদল সমাজবিজ্ঞানী। তাঁদের সেই গবেষণা থেকেই উঠে এসেছে এমন তথ্য। বিজ্ঞান বলছে,’অধিকাংশ মেয়েই এখন একগামীতায় (Monogamy) বিশ্বাসী। বলা ভাল মেয়েদের লড়াইটা চলে নিজের সঙ্গেই। কোনও মেয়েই বেডরুমে বেশিদিন খুশি থাকতে পারেন না। কিছুদিন পরেই যৌনতা (Sex) এবং বিছানা (Sex On Bed) তাঁদের কাছে বিরক্তির হয়ে ওঠে। সব পেলেও মনে হয় কোথাও যেমন খামতি থেকে যাচ্ছে। মন থেকে তাঁরা যে যৌনসুখ (Sexual Pleasure)চাইছেন তা পাচ্ছেন না। মহিলারা যৌন বৈচিত্র্য চান। কোনও কোনও মহিলা চান তাঁর যৌন ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখা হোক। যে কারণে সম্পর্কে মহিলারাই প্রতারক হয়ে ওঠেন’।

বিজ্ঞান আরও বলছে, পুরুষদের মধ্যে যৌনতায় স্বতঃস্ফূর্ততার উচ্চমাত্রা থাকে। মহিলারা তা উদ্দীপিত করে তোলেন মাত্র। তাই বলে কি মহিলাদের লিবিডো কম? এর উত্তরেও বিজ্ঞান বলছে না। মহিলাদের লিবিডো পুরুষের মতই শক্তিশালী। কিন্তু তা নির্ভর করে মহিলাদের ইচ্ছেশক্তির উপর। বরং সম্পর্ক, যৌনতা ইত্যাদি নিয়ে মহিলাদের অনেক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

কেন সম্পর্কে মহিলারাই বেশি প্রতারণা করেন?

মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণা বলছে, মানসিক কারণেই মহিলারা প্রতারণা করেন। গবেষক দলের তরফে অ্যাশলে ম্যাডিসন মহিলাদের উপর একটি সমীক্ষা চালান। সেখানেই মহিলারা জানিয়েছেন, বিবাহিত সম্পর্কে তাঁরা সুখী নন। সঙ্গীর যৌন চাহিদা এবং তাঁর যৌন চাহিদার মধ্যে ফারাক রয়েছে। পুরুষদের থেকে শুধুমাত্র যৌন তৃপ্তিই নয়, মানসিক সংযোগও তাঁরা চাইছেন। কিন্তু সঙ্গীর কাছে সম্পর্ক শুধুমাত্র যৌনতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেই দমবন্ধকর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই তাঁরা জেনেবুঝে নিজের জন্য প্রতারণা করছেন।

সিডনির ২৮ বছর বয়সী গ্যাব্রিয়েলা যেমন বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছি। বেশ কিছু সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী ছিল। সেই সব সম্পর্কে যৌনতাও ছিল। যৌন জীবন আমি নিজেও উপভোগ করেছি। তবে আমি বেশিদিন যৌনতা উপভোগ করতে পারি না। যখন আমি তা সঙ্গীদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছি তারা তখন অপমানিত বোধ করেছে। অনেকের মনে হয়েছে আমি স্বাভাবিক নই। সবদিন মহিলারাই যে একরইরকম যৌনতা বা যৌনসুখ উপভোগ করবেন এমনটা নয়। বরং এই ধারণা থেকে ছেলেদের বেরিয়ে আসতে হবে’।

কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতেও মহিলাদের মনোগ্যামি বিষয়ে বিশেষ একটি সমীক্ষা করা হয়। সেখানে একদল মহিলা আর পুরুষকে একসঙ্গে বসিয়ে পর্নোগ্রাফি দেখানো হয়। এবং প্রতিমুহূর্তে তাঁদের শরীরে রক্তপ্রবাহ, শরীরী প্রতিক্রিয়া মনিটর করা হয়। সেখান থেকেই প্রমাণিত হয় যে বেশিরভাগ পুরুষই বিষমকামীতায় আগ্রহী। শুধুমাত্র মহিলাদের সঙ্গে তাঁরা যৌনমিলনই দেখতে চান। বরং মহিলারা চাইছিলেন অন্যরকম বৈচিত্র্য। আরও বেশি সাহসিকতা।

যৌন চাহিদা এবং আকাঙ্খা নিয়ে মহিলারা আরও খোলাখুলি ছেলেদের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু প্রতিক্ষেত্রে উল্টোদিক থেকে সেই সদিচ্ছা থাকে না। সমাধানের কোনও পথ খুঁজে না পেয়েই মহিলারা বিরক্ত বোধ করেন। কিছুক্ষেত্রে সম্পর্ক শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবেন। নইলে নিজের মতো করে সমাধান সূত্র খুঁজে নেন। এই সমস্যার সমাধান যে দম্পতি করতে পারেন তাঁরাই ফের কাছাকাছি আসেন বলেও জানিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।