পাণ্ডবরা নির্বাসনের সময় তৈরি করেছিলেন নানা শিব মন্দির, জানেন সেই প্রাচীণ মন্দিরগুলি কোথায় অবস্থিত?

ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর তিন দেবতার মধ্যে মহাদেব ধ্বংসকারী। মহাভারতে নজর রাখলে দেখা যায় পাণ্ডবরা তাঁদের ১২ বছরের বনবাসের সময় শিবের পূজা করেছিলেন। তাঁরা সেই সময় যেখানে যেখানে থাকতেন, সেই সময় সেখানে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের দেশে পাণ্ডবদের দ্বারা স্থাপিত শিব মন্দির গুলি কোথায় কোথায় রয়েছে।

Jun 11, 2025 | 5:12 PM

1 / 8
অনেকেই যখন সমস্যার সম্মুখীন হন, সেই সময় প্রথমেই মহাদেবের কথা মনে করেন। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, কেউ যদি ভক্তি ভরে ভোলেবাবার কাছে প্রার্থনা করেন, তা হলে মহাদেব সেই ইচ্ছেপূরণ করে।

অনেকেই যখন সমস্যার সম্মুখীন হন, সেই সময় প্রথমেই মহাদেবের কথা মনে করেন। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, কেউ যদি ভক্তি ভরে ভোলেবাবার কাছে প্রার্থনা করেন, তা হলে মহাদেব সেই ইচ্ছেপূরণ করে।

2 / 8
পাণ্ডবরা যে সময় নির্বাসনে ছিলেন, সেই সময় একাধিক শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেগুলির বেশ কয়েকটি এখনও রয়েছে। নানা পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে পাণ্ডবদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়া বহু মন্দিরের মধ্যে থেকে ৫টি শিব মন্দিরের কথা নিম্নে আলোচনা করা হল।

পাণ্ডবরা যে সময় নির্বাসনে ছিলেন, সেই সময় একাধিক শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেগুলির বেশ কয়েকটি এখনও রয়েছে। নানা পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে পাণ্ডবদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়া বহু মন্দিরের মধ্যে থেকে ৫টি শিব মন্দিরের কথা নিম্নে আলোচনা করা হল।

3 / 8
হিমাচল প্রদেশের মমলেশ্বর মহাদেব মন্দির, হিমাচলেই আঘঞ্জর মহাদেব মন্দির, গুজরাটের গঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির, উত্তরপ্রদেশের ভাইহারান মহাদেব মন্দির ও উত্তরাখণ্ডের লখামণ্ডল মন্দির নির্মাণ করেছিলেন পাণ্ডবরা।

হিমাচল প্রদেশের মমলেশ্বর মহাদেব মন্দির, হিমাচলেই আঘঞ্জর মহাদেব মন্দির, গুজরাটের গঙ্গেশ্বর মহাদেব মন্দির, উত্তরপ্রদেশের ভাইহারান মহাদেব মন্দির ও উত্তরাখণ্ডের লখামণ্ডল মন্দির নির্মাণ করেছিলেন পাণ্ডবরা।

4 / 8
মমেলেশ্বর মহাদেব মন্দির, হিমাচল প্রদেশ: পাণ্ডবরা তাঁদের বনবাসের সময় হিমাচল প্রদেশে কিছু সময় কাটিয়েছিলেন। তখন ওই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানেই ভীমের সঙ্গে হিড়িম্বার দেখা হয়েছিল। তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এই মন্দিরটি ৫০০০ বছরেরও বেশি পুরনো বলে জানা যায়। এই মন্দিরে ভীমের ঢোল এবং ২০০ গ্রাম গমের দানা রয়েছে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, এই গমের দানা পাণ্ডবরা সংগ্রহ করেছিলেন। এই মন্দিরে একটি শিখাও রয়েছে। যা মহাভারতের সময় থেকে অবিরাম জ্বলছে।

মমেলেশ্বর মহাদেব মন্দির, হিমাচল প্রদেশ: পাণ্ডবরা তাঁদের বনবাসের সময় হিমাচল প্রদেশে কিছু সময় কাটিয়েছিলেন। তখন ওই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানেই ভীমের সঙ্গে হিড়িম্বার দেখা হয়েছিল। তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এই মন্দিরটি ৫০০০ বছরেরও বেশি পুরনো বলে জানা যায়। এই মন্দিরে ভীমের ঢোল এবং ২০০ গ্রাম গমের দানা রয়েছে। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, এই গমের দানা পাণ্ডবরা সংগ্রহ করেছিলেন। এই মন্দিরে একটি শিখাও রয়েছে। যা মহাভারতের সময় থেকে অবিরাম জ্বলছে।

5 / 8
আঘঞ্জর মহাদেব মন্দির, হিমাচল প্রদেশ: এই মন্দিরটি হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার খানিয়ারা গ্রামে অবস্থিত। কথিত আছে যে, অর্জুন বনবাসের সময় ভগবান কৃষ্ণের নির্দেশনায় এই স্থানে একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। এরপর পঞ্চ পাণ্ডবের তৃতীয় পাণ্ডব অর্থাৎ অর্জুনের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শিব তাঁকে এখানে পশুপতি অস্ত্র দিয়েছিলেন।

আঘঞ্জর মহাদেব মন্দির, হিমাচল প্রদেশ: এই মন্দিরটি হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার খানিয়ারা গ্রামে অবস্থিত। কথিত আছে যে, অর্জুন বনবাসের সময় ভগবান কৃষ্ণের নির্দেশনায় এই স্থানে একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। এরপর পঞ্চ পাণ্ডবের তৃতীয় পাণ্ডব অর্থাৎ অর্জুনের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শিব তাঁকে এখানে পশুপতি অস্ত্র দিয়েছিলেন।

6 / 8
গঙ্গেশ্বর মন্দির, গুজরাট: গঙ্গেশ্বর মন্দিরটি গুজরাটের দয়ু শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে পদুমা গ্রামে অবস্থিত। গঙ্গেশ্বর নামটি গঙ্গা এবং ঈশ্বরের সংমিশ্রণ। গঙ্গেশ্বর অর্থ গঙ্গার দেবতা। এই মন্দিরটি সমুদ্র সৈকতের পাথরের মধ্যে একটি গুহায় অবস্থিত। এখানে পাঁচটি শিব লিঙ্গ রয়েছে। পাণ্ডবরা তাঁদের প্রতিদিনের উপাসনার জন্য তা স্থাপন করেছিলেন। এই শিব লিঙ্গগুলি জোয়ারের সময় সমুদ্রে ডুবে থাকে। এগুলি শুধু ভাটার সময়ই দেখা যায়। এই মন্দিরটি 'সমুদ্র মন্দির' নামেও পরিচিত।

গঙ্গেশ্বর মন্দির, গুজরাট: গঙ্গেশ্বর মন্দিরটি গুজরাটের দয়ু শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে পদুমা গ্রামে অবস্থিত। গঙ্গেশ্বর নামটি গঙ্গা এবং ঈশ্বরের সংমিশ্রণ। গঙ্গেশ্বর অর্থ গঙ্গার দেবতা। এই মন্দিরটি সমুদ্র সৈকতের পাথরের মধ্যে একটি গুহায় অবস্থিত। এখানে পাঁচটি শিব লিঙ্গ রয়েছে। পাণ্ডবরা তাঁদের প্রতিদিনের উপাসনার জন্য তা স্থাপন করেছিলেন। এই শিব লিঙ্গগুলি জোয়ারের সময় সমুদ্রে ডুবে থাকে। এগুলি শুধু ভাটার সময়ই দেখা যায়। এই মন্দিরটি 'সমুদ্র মন্দির' নামেও পরিচিত।

7 / 8
উত্তরপ্রদেশের ভাইহারান মহাদেব মন্দির: কথিত রয়েছে যে ভীম উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় বনবাসের সময় ভাইহারান মহাদেব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই মন্দিরে প্রার্থনা করলে ভক্তরা ভয় এবং বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি পান। শিব লিঙ্গের পাশাপাশি এই মন্দিরে হনুমান, শিব-পার্বতী, সন্তোষী মাতা, রাধা-কৃষ্ণ, বিশ্বকর্মা, বৈজু বাবা ইত্যাদি মূর্তিও রয়েছে। শ্রাবণ মাসে ও মহাশিবরাত্রিতে প্রচুর ভক্ত এই মন্দিরে আসেন। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ভীম বকাসুরকে বধ করতে যাওয়ার আগে এখানে এই শিব লিঙ্গটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং পুজো করেছিলেন।

উত্তরপ্রদেশের ভাইহারান মহাদেব মন্দির: কথিত রয়েছে যে ভীম উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় বনবাসের সময় ভাইহারান মহাদেব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই মন্দিরে প্রার্থনা করলে ভক্তরা ভয় এবং বিভ্রান্তি থেকে মুক্তি পান। শিব লিঙ্গের পাশাপাশি এই মন্দিরে হনুমান, শিব-পার্বতী, সন্তোষী মাতা, রাধা-কৃষ্ণ, বিশ্বকর্মা, বৈজু বাবা ইত্যাদি মূর্তিও রয়েছে। শ্রাবণ মাসে ও মহাশিবরাত্রিতে প্রচুর ভক্ত এই মন্দিরে আসেন। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ভীম বকাসুরকে বধ করতে যাওয়ার আগে এখানে এই শিব লিঙ্গটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং পুজো করেছিলেন।

8 / 8
লখামণ্ডল মন্দির, উত্তরাখণ্ড: লখামণ্ডল মন্দির মন্দিরটি দেরাদুন থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। কিংবদন্তি অনুসারে, পাণ্ডবরা লক্ষাগৃহ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং দীর্ঘ সময় এখানে বসবাস করেছিলেন। ওই সময় পাণ্ডবরা এখানে একটি শিব লিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। বিভিন্ন রঙ এবং আকারের দুটি শিব লিঙ্গ রয়েছে। শিব লিঙ্গটি স্ফটিকের মতো জ্বলজ্বল করে। এই মন্দিরের ভিতরের পাথরে দেবী পার্বতীর পদচিহ্ন দৃশ্যমান। বিশ্বাস করা হয় যে মহাশিবরাত্রির দিনে এই শিবের দর্শন করলে প্রতিটি ভক্তের ইচ্ছেপূরণ হয়।

লখামণ্ডল মন্দির, উত্তরাখণ্ড: লখামণ্ডল মন্দির মন্দিরটি দেরাদুন থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। কিংবদন্তি অনুসারে, পাণ্ডবরা লক্ষাগৃহ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন এবং দীর্ঘ সময় এখানে বসবাস করেছিলেন। ওই সময় পাণ্ডবরা এখানে একটি শিব লিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। বিভিন্ন রঙ এবং আকারের দুটি শিব লিঙ্গ রয়েছে। শিব লিঙ্গটি স্ফটিকের মতো জ্বলজ্বল করে। এই মন্দিরের ভিতরের পাথরে দেবী পার্বতীর পদচিহ্ন দৃশ্যমান। বিশ্বাস করা হয় যে মহাশিবরাত্রির দিনে এই শিবের দর্শন করলে প্রতিটি ভক্তের ইচ্ছেপূরণ হয়।