এই বিশ্বাসেই মানুষ দেবতাদের কাছে বলিদান দেন, দেবতাদের খুশি করার জন্য জীবেনর মূল্যবান সম্পদ দিতেও প্রস্তুত। কোনও কোনও মন্দিরে ফল-মূল, মিষ্টি দিয়ে পুজো দেওয়ার চল রয়েছে, তেমনি অনেক মন্দির রয়েছে, যেখানে আমিষ ভোগ নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হয়।
মুনিয়ান্দি স্বামী মন্দির, তামিলনাড়ু: তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের ভাদাক্কামপট্টি নামে এক ছোট গ্রামে ভগবান মুনিয়াদিকে সন্মান জানাতে ৩দিনের বার্ষিক উত্সব পালন করা হয়। যেটি মুনিশ্বর উত্সব বলা হয়। মুনিশ্বর আসলে শিবেরই অন্য অবতার হিসেবে পরিচিত। এই মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে চিকেন ও মাটন বিরিয়ানি পরিবেশন করা হয়।
বিমলা মন্দির, ওড়িশা: দুর্গার অন্য এক অবতার হল বিমলা। এই মন্দিরটি ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির চত্বরেই অবস্থিত। এটিকে শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম হিসেবে মানা হয়। দুর্গাপুজোর সময়, পবিত্র মার্কন্দা মন্দিরের ট্যাঙ্ক থেকে মাছ রান্না করে দেবী বিমলাকে নিবেদন করা হয়। শুধু তাই নয়, এই দিনগুলিতে ভোরের আগে যে 'সে ছাগল' বলি দেওয়া হয় তা রান্না করে তাকে নিবেদন করা হয়। উভয় খাবারই তারপর 'বিমলা পরুসা' বা প্রসাদ হিসাবে বিতরণ করা হয়। এই সব ঘটে ভগবান জগন্নাথের মন্দিরের প্রধান দরজা খোলার আগে।
তারকুলহা দেবী মন্দির, উত্তরপ্রদেশ: উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে অবস্থিত এই মন্দিরটি প্রতি বছর বার্ষিক খিচুরি মেলার আয়োজন করা হয়। মানুষের ইচ্ছা পূরণের জন্য এই মন্দিরটি বেশ বিখ্যাত। চৈত্র নবরাত্রিতে দেশ-বিদেশের মানুষ এই মন্দিরে ভিড় করেন। মনোবাসনা পূরণের জন্য দেবীকে ছাগ নিবেদন করা হয়। এই মাংস মাটির পাত্রে রান্না করা হয়, তারপর ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে প্রদান করা হয়।
প্যারাসিনিক কাদাভু মন্দির, কেরালা: মনে করা হয়, কলিযুগে ভগবান বিষ্ণু ও শিবের অবতার রূপে প্রভু মুথাপ্পান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দক্ষিণ ভারতে বিভিন্ন নামে তিনি পরিচিত। বিশেষত টডির সঙ্গে পোড়া মাছ নিবেদন করা হয়। মনের ইচ্ছা পূরণ করলে এই প্রসাদ চড়ানো হয়। ভক্তদেরও সেই প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়।
কালীঘাট, কলকাতা: ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম হল এই কালী মন্দির। প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এই মন্দিরে দেবী কালীকে খুশি করার জন্য এখানে বেশিরভাগ ভক্তই ছাগলকে বলিদান করে। সেই বলির মাংসই রান্না করে কালীকে দেওয়া হয়।
তারাপীঠ, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ: বীরভূমের তারাপীঠ মন্দিরটিও শক্তিপীঠের অন্যতম একটি বলে মানা করা হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী এই মন্দিরের দেবী দুর্গার একটি রূপ। এখানে ভক্তরা ছাগল বলি দেয়, সেই সঙ্গে মদ ভোগ হিসেবে নৈবেদ্য দেওয়া হয়।
দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, পশ্চিমবঙ্গ: শক্তিপীঠের আরেক পীঠ হল দক্ষিণেশ্বরের ভবতাড়িনী কালী মন্দির। এই মন্দির বেশ বিখ্যাত। দেবীকে ভোগ হিসেবে মাছ নিবেদন করা হয়। যা পরে দেবী কালী পুজো করতে আসা ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। তবে এই মন্দিরের কোনও পশুবলি দেওয়া হয় না।