
মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় রিজার্ভ ফরেস্টের গহীন অরণ্যে মিলল সম্পদের খোঁজ। সম্প্রতি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তরফে চালোনো হয়েছিল খননকার্য। তাতেই সন্ধান মিলল নবম শতাব্দীর এক বিস্ময়কর সম্পদের!

ভারত এক প্রাচীন দেশ। এদেশের নানা কোণে লুকনো আছে গুপ্তধন। এই গুপ্তধন প্রাচীন ও লুকনো ইতিহাসের গুপ্তধন। নানা সময়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে এএসআই-এর তরফে করা হয়েছে জরিপ। চালানো হয়েছে খননকার্য। এর ফলে কিছু ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন জায়গা আবিষ্কার হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন অসংখ্য জায়গা এখনও রয়ে গিয়েছে অনাবিষ্কৃত। সম্প্রতি ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা সংস্থার তরফে বান্ধবগড় রিজার্ভ ফরেস্টে প্রাচীন গুহা, মন্দির, বৌদ্ধস্তূপগুলি খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রায় ৮৫ বছর পরে ফের এমন বড়মাপের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

বিভিন্ন পুঁথিতে উল্লেখিত তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রায় ২৬টিরও বেশি মন্দির, ২৬টি গুহা,২টি স্তূপ, ৪৬ ভাস্কর্য, ১৯ টি জলাধার, ২টি মঠের খোঁজ মিলেছে। এই খোঁজ চলাকালীন সময়ে পাওয়া গিয়েছে বিরল চৈত্য আকৃতির দরজার সন্ধান।

আবিষ্কারগুলি ইতিহাস সম্পর্কে জানার নতুন এক জানলা খুলে দেবে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মোট কথা ইতিহাসের নতুন এক পাতা খুলে দিল বান্ধবগড়।

এই আবিষ্কার ভীমসেন, মহারাজা পোথাসিরি, মহারাজা ভট্টদেবের সময়কাল সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য জানতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন ইতিহাসবিদরা।

সংস্থাটি মথুরা, কৌশাম্বি, ভেজাভরদা এবং সাপটনাইরিকার মতো শহরের নাম সম্বলিত শিলালিপির অবশেষও খুঁজে পেয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক অবশেষগুলি বাঘেলখণ্ডের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করেছে।

মধ্যপ্রদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর প্রদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলগুলিকে বাঘেলখণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার দলটি বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের অধীনে প্রায় ১৭০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কয়েক মাসব্যাপী জরিপ করে ইতিহাসের স্পর্শ সংবলিত জায়গাগুলি আবিষ্কার করেছেন।

গুপ্ত আমলে ধ্বংস হওয়া সভ্যতাগুলি সম্পর্কে এই আবিষ্কার নতুন তথ্য জানাতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান জব্বলপুর থেকে ১৯৭ কিলোমিটার দূরে স্থিত। এই উদ্যানে রয়েছে ৬০ থেকে ৭০টি বাঘ! এমন রোমাঞ্চকর ও বিপদসঙ্কুল অরণ্যে এআসআই-এর করা সমীক্ষা নিশ্চিতরূপে সাধুবাদযোগ্য।