
মুষল ধারায় হচ্ছে বৃষ্টি! ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। এতটুকু পড়ে দৃশ্যটা সাধারণ বলেই মনে হতে পারে। বাকিটা শুনলে চমকে যাবেন। দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি ধারা পড়ার পরেই যে মাটি ধুয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে তার রং রক্তের মতো লাল। যে দৃশ্য দেখলে মনে হচ্ছে যেন রক্তবৃষ্টি হচ্ছে। ভূ-পৃষ্ঠে বয়ে চলেছে রক্তের স্ত্রোত।

সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিয়ো। যা দেখে অনেকেই বিষয়টিকে কলি যুগের চরম দশার সঙ্গে তুলনা করেছেন। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে কলি যুগ যখন তাঁর চরম সীমায় থাকবে, পাপ, অনাচার, হিংসা-প্রতিহিংসা ভরে যাবে বিশ্ব সংসার। পূর্ণ হবে অধর্মের পাপের ঘড়া, তখন এমন 'রক্ত বৃষ্টি' হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ধ্বংস এবং হিংসার প্রতীক সেই রক্ত বৃষ্টি।

ঘটনাটি ঘটেছে ইরানের হরমুজ দ্বীপে। অদ্ভুত এই দৃশ্য দেখে আগ্রহ জন্মেছে নেটিজেনদের মধ্যেও। কিন্তু কেন এই অদ্ভুত ঘটনা? কী মনে করছেন বিজ্ঞানীরা?

ইরানের হরমুজ দ্বীপের রেড বিচে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে লাল বন্যা দেখে নেটিজেনদের অবাক হলেও, বিজ্ঞানীর বিষয়টি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়।

আসলে ওই হরমুজ দ্বীপের মাটিতে আয়রন অক্সাইডের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। যা হরমুজ দ্বীপের সমুদ্র সৈকতকে লাল রঙের করে তোলে। এমনকি সমুদ্রের জল যখন এখানে এসে আছড়ে পড়ে তখন লাল রঙের দেখায়। এই সমুদ্র সৈকতে পাওয়া যায় এক ধরনের লাল রঞ্জক পদার্থ। যা স্থানীয়দের কাছে 'গোলাক' বলে পরিচিত। এই গোলাক বিভিন্ন শৈল্পিক কাজে এবং রান্নায় ব্যবহার করা হয়।

ইরানি দ্বীপে রয়েছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এমন কিছু বিষ্ময়কর গাছে রয়েছে, যা সমুদ্রের জোয়ারের জলে সম্পূর্ণ ডুবে গেলেও তা বেঁচে থাকে। এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে মিষ্টি জলের সরবরাহ না থাকলেও জন্মায় ঘাস।

সর্বোপরি লাল সৈকত এবং লাল সমুদ্রের ঢেউ সবে মিলে এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য তৈরি হয়। অর্থাৎ এই রক্ত বৃষ্টি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, এর মধ্যে কোনও অতিপ্রাকৃতিক ইঙ্গিত নেই বলেই মত বিজ্ঞানীদের।