
মাওবাদী দমন অভিযানে আবারও বিরাট সাফল্য। ৭২ ঘণ্টার গুলির লড়াই শেষে ২৭ মাওবাদীকে নিকেশ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। যার মধ্যে ছিলেন বড় মাওবাদী কমান্ডার নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ। ছত্তিশগঢ় ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড ফোর্স বুধবার বস্তার অঞ্চলে আবুমারহের জঙ্গলে এনকাউন্টার করে হত্যা করে বাসবরাজকে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এক্স মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন নিরাপত্তাবাহিনীকে। তিনি লেখেন, "নকশালবাদ নির্মূলের যুদ্ধে এক যুগান্তকারী সাফল্য। ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুরে এক অভিযানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ২৭ জন ভয়ঙ্কর মাওবাদীকে নিস্ক্রিয় করেছে। যার মধ্যে আছেন নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজ। যিনি সিপিআই মাওবাদীর সাধারণ সম্পাক, শীর্ষ নেতা এবং নকশাল আন্দোলনের মেরুদণ্ড।"

তিনি আরও লেখেন, "নকশালবাদের বিরুদ্ধে ভারতের তিন দশকের লড়াইয়ে এই প্রথমবারের মতো আমাদের বাহিনী একজন সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদার নেতাকে নিষ্ক্রিয় করেছে। এই বড় সাফল্যের জন্য আমি আমাদের সাহসী নিরাপত্তা বাহিনীকে সাধুবাদ জানাই।"

অভিযান শেষে একে-৪৭, এসএলআর-আইএনএসএএস কারবাইন এবং আরও অনেক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী। মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এক ডিআরজি জওয়ানের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। মাওবাদীদের বিরুদ্ধে এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে 'অপারেশন কাগার'। কী এই অভিযান? কী ভাবে খতম হল মাওবাদী নেতা?

১৯ মে ছত্তিশগড় পুলিশ এবং ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড যৌথভাবে 'অপারেশন কাগার' লঞ্চ করে। বিশেষ এই অপারেশনের অংশ ছিল স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সও। টানা ৭২ ঘন্টা ধরে চলে এই অপারেশন।

এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, বাসবরাজ আরও কয়েকজন উচ্চ পদস্থ মাওবাদী ক্যাডার নিহত হয়েছেন এই অভিযানে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহরাষ্ট্রে ৫৪ জন নকশালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮৪ জন আত্মসমাপর্ণ করেছে।

নিহত এবং আহতদের মধ্যে অনেকেই দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটি এবং পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির সদস্য। অভিযান এখনও চলছে। বাসবরাজ মাওবাদী সংগঠনে যোগদান করে ১৯৮০ দশকে গোড়ার দিকে। সেই থেকেই এই পথে তাঁর হাঁটা। বাসবরাজের মরদেহ ডিআরজি হেডকোয়ার্টারে নিয়ে আসা হয়েছে।

২০১০ সালে দান্তেওয়ারা কাণ্ড, যখন ৭৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান করা হয়েছিল, সেই ঘটনায় বাসবরাজ যুক্ত ছিল। এছাড়াও ২০১৩ সালে জীরাম ঘাটি অ্যাম্বুশে সিনিয়র কংগ্রেস নেতা সহ প্রাণ হারান প্রায় ২৭ জন মানুষ। ২০০৩ সালে নারা চন্দ্রবাবু নায়ডুকে হত্যা করার জন্য আলিপিরি বিস্ফোরণের ঘটনাতেও যুক্ত ছিলেন বাসবরাজ। ২০১৮ সালে সিপিআই, মাওবাদীর সাধারণ সম্পাদকের পদ গ্রহণ করেন বাসবরাজ। তাঁর আগে ওই পদে ছিলেন মুপ্পালা লক্ষণ রাও ওরফে গণপতি। (সব ছবি - PTI)