
মিনিটম্যান ৩ ইন্টারকন্টিনেনটাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, ফের একবার এই বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সফল উৎক্ষেপণ করল আমেরিকা। ইউএস এয়ার ফোর্স গ্লোবাল স্ট্রাইক কম্যান্ড ২১ মে ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যান্ডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেসে এই পরীক্ষা করে। সবচেয়ে বড় কথা হল এই মিসাইলে ছিল সিঙ্গেল এমকে-২১ হাই ফিডেলিটি রেন্ট্রি ভেহকিল। যা আমেরিকার পরমাণু ক্ষমতাকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের অংশের।

যদি শিবের ত্রিশূল, বিষ্ণুর চক্রের সম্মিলিত তেজে কোনও অস্ত্র উৎপন্ন হয় তার যা ক্ষমতা হবে এও যেন ঠিক তাই। গোটা বিশ্বে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে আঘাত হানতে পারবে না এই মিনিটম্যান মিসাইল। বিশ্বের যে কোনও কোণায় টার্গেটকে নির্ভুলভাবে আঘাত করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় হল, এই মিসাইলকে আটকানো প্রায় অসম্ভব। বিশ্বের আধুনিকতম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকেও চমকা দিয়ে টার্গেটকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে এই ক্ষেপণাস্ত্র।

এক বিবৃতিতে, মার্কিন বিমান বাহিনী ব্যাখ্যা করেছে যে ভ্যান্ডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেস হল বিমান বাহিনীর গ্লোবাল স্ট্রাইক কমান্ডের প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রাথমিক পরীক্ষার ক্ষেত্র। তারা স্পষ্ট করেই জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটি নিয়মিত অভিযানের অংশ ছিল। বর্তমান কোনও ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, অতীতে ৩০০ টিরও বেশি অনুরূপ পরীক্ষা পরিচালিত হয়েছে। এই সর্বশেষ উৎক্ষেপণের উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন পারমাণবিক প্রতিরোধকটি সুরক্ষিত, নির্ভরযোগ্য এবং আধুনিক হুমকি মোকাবেলায় সক্ষম এবং মিত্রদের তার শক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করা। বাস্তবে আমেরিকার শক্তি মনে করাতেই যে এই পরীক্ষা তাই স্পষ্ট করা হয়েছে।

বিমান বাহিনীর গ্লোবাল স্ট্রাইক কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল থমাস বুসিয়ে এই পরীক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, "এই উৎক্ষেপণ দেশের পারমাণবিক প্রতিরোধক এবং পারমাণবিক ত্রিভুজের আইসিবিএম অংশের প্রস্তুতি তুলে ধরে।" ক্ষেপণাস্ত্র অপারেটর, ডিফেন্ডার, হেলিকপ্টার ক্রু সহ বাকিদের এই ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণের জন্য এবং আমেরিকা এবং তার সহযোগী দেশগুলির জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ভ্যান্ডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেসের ৩৭৭তম টেস্ট অ্যান্ড ইভালুয়েশন গ্রুপ এই পরীক্ষাটি তত্ত্বাবধান করে। এই ইউনিটটি আমেরিকার একমাত্র আইসিবিএম পরীক্ষামূলক সংস্থা, যা আমেরিকার স্থল-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ক্ষমতা উভয়ই মূল্যায়ন করে।

মিনিটম্যান ৩ এর মোট ওজন প্রায় ৩৬,০৩০ কিলোগ্রাম। এই শক্তিশালী অস্ত্র হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে টার্গেটকে নষ্ট করতে পারে। মার্কিন পারমাণবিক প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এই মিসাইল। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির জন্য রয়েছে তিনটি রকেট।

প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে এই মিসাইল। এর স্পিড পৌঁছতে পারে প্রতি ঘন্টায় ২৪,০০০ কিলোমিটার অবধি। একসঙ্গে তিনটি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করার ক্ষমতা রাখে মিনিটম্যান ৩। অর্থাৎ একবারে তিনটি ভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। একটি মিনিটম্যান ৩ ক্ষেপণাস্ত্রের দাম প্রায় ৭০ লক্ষ মার্কিন ডলার।