
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২১ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, সারা বিশ্বে প্রায় ২.২ মিলিয়ন মানুষ কাছে ও দূরের জিনিস খালি চোখে দেখতে পারেন না। ভারত হল বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ, যেখানে বিশ্বের অন্ধত্বের সমস্যায় ভুগছেন এমন জনসংখ্যার মধ্যে ২০ শতাংশেরও বেশি মানুষ এই দেশে বাস করেন।

দৃষ্টিশক্তির প্রতিবন্ধকতা বৃদ্ধির কারণের পিছনে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, বয়স, জেনেটিক্স ওপরিবেশ। দুর্বল দৃষ্টির জন্য এই কারণগুলিই দায়ী বলে মনে করেন গবেষকরা। এছাড়া দৈনন্দিন অভ্যাসগুলি যদি সঠিক নিয়ম মেনে চলা হয়, তাহলে চোখের স্বাস্থ্যের সমস্যা অনেকটা কম হতে পারে। প্রতিদিনের বাজে অভ্যাসের আকরএও একজনের দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সা না করালে জটিলতা বাড়তে পারে।

অতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম- দীর্ঘক্ষণ ধরে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইলের স্ক্রিনের উপর মুখ গুঁজে কাজ করলে চোখের উপর ব্যপক প্রভাব পড়ে। লকডাউনের কারণে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের জেরে চোখের সমস্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। জীবনযাপনে বদল না করতে পারলে পরীক্ষা করে চোখের সমস্যাগুলি নির্ণয় করা প্রয়োজন। চোখের উপর চাপ কমাতে প্রতি ২০ মিনিটে ২০ সেকেন্ডে ২০ ফুট দূরের কিছু বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জিঙ্ক, ভিটামিন সি ও ই-যুক্ত খাবার খান বেশি করে। সবুজ শাক-সবজি, ডিম, কমলালেবু, সামুদ্রিক মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য থাকে ভাল।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া- ঘুমের অভাব, বিশে, করে নিয়মিত ঘুম কম হওয়া, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, দুর্বল ইমিউন সিস্টেম, ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, মেজাজ পরিবর্তন, স্মৃতিশক্তির সমস্যা থেকেও চোখের উপর প্রভাব পড়ে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে চোখে ঝাপসা দেখা, শুষ্ক হয়ে যাওয়া, মাঝে মাঝে অন্ধকার নেমে আসার সমত সমস্যা তৈরি হয়। প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ভাল ঘুমের প্রয়োজন। তাহলে এই সমস্যা কেটে যাবে।

ঘন ঘন চোখ ঘষা- সারাদিন ঘন ঘন চোখ ঘষলে চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চোখ বার বার ঘষলে চোখের পাতার নিচে থাকা রক্তনালীগুলি ছিঁড়ে যেতে পারে। চোখ জ্বালা করলে বা চোখের সমস্যা হলে চোখ ঘষবেন না, বরং চোখে বার বার জলের ঝাপটা দিন। ঠান্ডা জলের কম্প্রেস প্রয়োগ করতে পারেন।

সানগ্লাস ব্যবহার না করা- বাড়ির বাইরে বের হলে যেমন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক, তেমনি চোখের ক্ষতি এড়াতে সানগ্লাস ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ও বাইরের ধুলো-বালি থকে চোখকে রক্ষা করতে সানগ্লাস পরা আবশ্যিক । নিয়মিত সঠিকসানগ্লাস পরলে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা ছানি পড়া রোধ করা যায়।এছাড়া ড্রাই-আই-সিনড্রোম থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

ডিহাইড্রেটেড থাকুন- চোখের ও শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য জল হল অপরিহার্য উপাদান। সারাদিনে ধুলো-বালি, ময়লা প্রবেশ করে চোখের মধ্য়ে লুকিয়ে থাকে। ডিহাইড্রেশন হলে চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। লাল হয়েফুলে যেতে পারে। এমন সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। চোখ থাকবে হাইড্রেটেড ও সুস্থ।