
দীপাবলির পরেই পালিত হয় দেব উত্থানী একাদশী। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষ তিথিতে পালন করা হয় দেব উত্থানী একাদশী। এই পবিত্র একাদশীকে উত্থান যেমন বলা হয়, তেমনি দেবুথানী বা প্রবোধোনী একাদশী নামেও পরিচিত।

হিন্দুধর্ম মতে, আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীতে নিদ্রায় যান ভগবান বিষ্ণু। নিদ্রাভঙ্গ হয় কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের এই একাদশীতে। পৌরাণিক কাহিনি মতে, এই একাদশীর দিন ৪ মাস পর ক্ষীরসাগর থেকে নিদ্রাভঙ্গ করেন বিষ্ণুদেব। এই চারমাস তাই কোনও শুভ কাজ পালন করা হয় না। দেবস্থানে একাদশীর পর থেকেই শ্রীহরি জেগে উছলে সমস্ত ধর্মীয় ও শুভ কাজ শুরু হয়। এদিন তুলসী বিবাহও হয়ে থাকে।

এদিন সকালে উবাসের ব্রত পালন করে ভগবান বিষ্ণুর নাম উচ্চারণ করা নি.ম। এদিন ঘর পরিষ্কার করে ও স্নান করার পর উঠোনে আলপনা আঁকা হয়। নৈবেদ্য হিসেবে ফল, মিষ্টি, আখ, মরসুমি ফল জদিতে পারেন। এরপর সন্ধ্যের সময় বাড়ির সামনে ও ঠাকুরঘরে প্রদীপ জ্বালাতে হয়। ঘণ্টা ও শঙ্খ বাজিয়ে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করা উচিত।

দেবুথানী একাদশীর দিনে বেশ কিছু নিয়ম পালন করা উচিত। তাতে একসঙ্গে লক্ষ্মী ও নারায়ণের আশীর্বাদ মেলে। এদিন কোন কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত, তা জেনে নেওয়া ভাল। ভুলেও কী কী কাজ করবেন না, তা জেনে নিন এখানে...

একাদশীর দিন ভাত খাবেন না। উপবাস চলাকালীন চালের কোনও খাবার মুখে তুলবেন না। সাধারণত একাদশীর দিন ভাত খাওয়ার কোনও রীতি নেই। তাই এদিন ভুলেও ভাত ও চালের কোনও খাবার খাবেন না।

দেবুথানী একাদশীর দিন উপবাস পালন করলে বাড়িতে কোনও ধরনের বিবাদ বা ঝগড়া করা উচিত নয়। নেগেটিভ মনোভাব মনের মধ্যে পুষে রাখবেন না। কাউকে খারাপ কথাও বলবেন না। মনে খারাপ চিন্তা আনাও পাপ। তাই সকলের সঙ্গেই ভালোবেসে কথা ও আচরণ করুন।

এদিন ভুলেও আমিষ খাবার খাবেন না। পেঁয়াজ, রসুন, মাংস, মাছ এমনকি মদও ছুঁয়ে দেখবেন না। একাদশীর দিন এই খাবারগুলি খাওয়াও উচিত নয়। বিষ্ণু তাতে অত্যন্ত রুষ্ট হন। তাই আমিষ নয়, সুস্বাদু নিরামিষ খাবার খেতে পারেন।

এ দিনে দুপুরে যাতে ঘুম না হয় সেদিকেও বিশেষ খেয়াল রাখুন। এদিনে ভগবান বিষ্ণু দীর্ঘ ৪ মাস পর যোগ নিদ্রা ভঙ্গ করেন। তাই এই দিনে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুন ও ঈশ্বরকে কখনও অশ্রদ্ধা করবেন না।