
হিন্দু পঞ্জিকা মতে, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত শারদীয়া দুর্গাপুজো পালিত হয় গোটা বাংলায়। আশ্বিন মাসের এই পক্ষকে বলা হয় দেবীপক্ষ। মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয় দেবীপক্ষ বা মাতৃপক্ষ।

দেবীপক্ষের প্রথম অমাবস্যার দিন তর্পন ও পিণ্ডদান করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান পালন করা হয়। আর পিতৃপক্ষের সময় যেমন কিছু নিয়ম মেনে চলা আবশ্যিক, তেমনি দুর্গা আশীর্বাদ পেতে হলে দেবীপক্ষের সময়ও মানতে হবে বেশ কিছু নিয়ম।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেবীপক্ষের ৯দিন ধরে উমার নয় রূপের আরাধনা করা হয়। তাই নবরাত্রিতে নয়দেবীর পুজো করলে ভক্তরা দুর্গার আশীর্বাদে মনের সব ইচ্ছে পূরণ হয়। তাই মহালয়ার পর থেকে বিজয়া পর্যন্ত বেশ কিচু কাজ করা এড়িয়ে চলা উচিত।

দেবীপক্ষের প্রথম অমাবস্যার দিন থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত পালিত হয় নবরাত্রি উত্সবষ আর শেষ পাঁচদিন দুর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় বাড়িতে বেশ খুশির ও শুভ প্রভাব বিরাজ করে। এই সময় সাত্ত্বিক খাবার খাওয়া, চামড়ার জিনিস ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত। উল্লেখ্য, এ বছর দুর্গা আসছেন হাতিতে চড়ে আর ফিরে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে।

জ্যোতিষবিশেষজ্ঞদের মতে, নবরাত্রির সময়, দুর্গা আরাধনার পাশাপাশি, নখ বা চুল কাটার মতো বেশ কিছু জিনিসেরও যত্ন নেওয়া উচিত। যদি চুল বা নখ কাটতে চান, তাহলে দেবীপক্ষ পড়ার আগেই কেটে ফেলুন। শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে, এই নয়দিন নখ ও চুল কাটা একেবারেই উচিত নয়। এর জেরে জীবনের উপর একটি অশুভ প্রভাব ফেলতে পারে , রুষ্ট হতে পারেন উমাও।

সাধারণত দেবীপক্ষের নয়দিন দেবী দুর্গাকে উৎসর্গ করা হয়। এই কদিন ভক্তরা উপবাস পালন করে থাকেন। দেবীর আশীর্বাদ পেতে আচার মেনে পুজো করে থাকেন। নয় দিনের জন্য আমিষ জাতীয় খাবার কখনও গ্রহণ করবেন না। এর সঙ্গে রসুন ও পেঁয়াজও নিষিদ্ধ বলে। এই নিষিদ্ধ কাজ করলে ঘরে অশুভ প্রভাব পড়ে বলে মনে করা হয়।

নবরাত্রির নয় দিন চামড়ার জিনিস কেনা বা ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সাধারণত চামড়ার জিনিস বা পণ্য তৈরিতে বিভিন্ন পশুর চামড়া ব্যবহার করা হয়। এজন্য নবরাত্রির সময় চামড়ার তৈরি পণ্য ব্যবহার করা নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়।

দেবীপক্ষের প্রথম অমাবস্যার পর দিন থেকে বাড়িতে লেবু ব্যবহার করা এড়িয়ে চলা উচিত। লেবুকে অশুভ শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে একটি লেবু কাটা হল একটি বলির সমান। তাই নবরাত্রির সময় লেবু ব্যবহার করবেন না। সেই সঙ্গে খাবারে আচার বা টক জাতীয় খাবার খাওয়াকে অশুভ মনে করা হয়।