
আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই শুরু হবে বাঙালির সেরা ও সবচেয়ে বড় উত্সব। পুজোর শপিং থেকে প্যান্ডেল, এই মুহূর্তে চলছে প্রস্তুতি তুঙ্গে। মহালয়ার মাধ্যমে পিতৃপক্ষের অবসান, তারপরই সূচনা হবে দেবীপক্ষের।

হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, আগামী ১৫ অক্টোবর, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের প্রতিপদ তিথি থেকে শুরু হতে চলেছে শারদীয়া নবরাত্রি। এদিন থেকে দেবী দুর্গার নয়টি রূপ রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয়। ঘরে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য বহু ভক্ত উপবাস পালন করা হয়।

বিশ্বাস করা হয়, নবরাত্রির সময় উপবাস পালন করে রীতি অনুযায়ী দুর্গার আরাধনা করা হয়। যাঁরা দেবীকে তুষ্ট করতে উপবাস ও পুজো করেন, তাঁরা দেবীর অপার আশীর্বাদ পান ও ইচ্ছেও পূরণ করেন। দুর্গাপুজোর সময় বিশেষ ৫ কাজ না করলেদেবীপক্ষের উপবাস ও পুজো অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

হিন্দু ধর্মমতে,নবরাত্রির প্রথম দিনে দুর্গা বাহনে চড়ে সপরিবারে কৈলাস থেকে মর্ত্যে আগমন করেন। যদি নবরাত্রির সময় উপবাস পালন করেন, তাহলে পুজো করার আগে দেবী দুর্গাকে আহ্বান করা উচিত। রীতি মেনে তাঁকে স্বাগত জানানো উচিত।

নয়দিন উপোস করলে প্রথমা ও অষ্টমীতে উপবাস রেখে কলশ স্থাপন করা হয়। দেবী পুরাণ অনুসারে, দেবী ভগবতী পুজো করা র আগে কলশ প্রতিষ্ঠা করা আব্যশিক। পুজোর সময়, দেবীর শক্তির প্রতীক ও তীর্থস্থান হিসাবে কলশ স্থাপন করা হয়। এই কলশ হল সম্পদ, সুখ, সমৃদ্ধির প্রতীক। হিন্দু মতে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব ও দিব্য মাতৃশক্তি বাস করেন এই কলশে।

কন্যা পুজো না করলে নবরাত্রি অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। দুর্গাষ্টমী ও মহানবমীর দিনে কন্যা পুজো করার নিয়ম রয়েছে। এই সময় কন্যাদের প্রথানুযায়ী দেবী দুর্গার রূপ বলে মনে করা হয়। এই কারণে নবরাত্রির সময় এক থেকে নয়জন কন্যাকে পুজো করে ভোজন করানো হয়ে থাকে। সাধারণত ২ বছর থেকে ১০ বছর বয়সিদের মধ্যে কন্যাদের পুজো করা হয়ে থাকে।

নবরাত্রিতে যজ্ঞেরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মহামায়ার পুজোয় যজ্ঞ ছাড়া পূজাপুজো সবসময় অসম্পূর্ণ থকে যায়। যজ্ঞের সময় যে যে উপকরণগুলি অর্পণ করা হয়, তা হল নবগ্রহ। এই নবগ্রহ দেব-দেবীরা গ্রহণ করে থাকে। হিন্দুমতে, যজ্ঞ করা মানসিক শান্তি ও ইতিবাচক শক্তি প্রদান করে বলে মনে করা হয়।

নবরাত্রিতে দেবী দুর্গা ও কন্যার পুজো আবশ্যিক। দুর্গা আদিশক্তি। তিনিই প্রকৃতি, তিনিই গোটা মহাবিশ্বের স্রষ্টা। আবার তিনিই হলেন জীবন ও বায়ুর স্রষ্টা। তাঁর মাধ্যমেই শিব পূর্ণতা পান। শিব-শক্তির আধার হলেন দেবী মহামায়া। তাই তিনি অর্ধনারীশ্বর। নবরাত্রির সময় থেকেই শুরু দেবীপক্ষ। তাই এই সময় নারীদের সম্মানের উৎসব বলেও পরিচিত।