থাইরয়েড হল একটি গ্রন্থি যা এন্ডোক্রাইন সিস্টেমের একটি অংশ। সারা শরীরের হরমোন তৈরির জন্য এই গ্রন্থি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। থাইরয়েড গ্রন্থি যদি অতিসক্রিয় বা নিষ্ক্রীয় হয়, তাহলে স্বাস্থ্যের নানা সমস্যা দেখা দেয়। থাইরয়েডের সবচেয়ে সাধারণ দুটি রোগ হল হাইপারথাইরয়েডিজম এবং হাইপোথাইরয়েডিজম।
জীবনাধারা পরিবর্তন করা থাইরয়েডে রোগের সঠিক চিকিত্সা। এর কোনও বিকল্প নেই। একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারাই একজন মানুষকে দীর্ঘমেয়াদী থাইরয়েড সমস্যাগুলি পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এছাড়া দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার জন্যও সহায়ক।
প্রতিবছর জানুয়ারি মাসকে থাইরয়েড সচেতনতা মাস হিসেবে পালন করা হয়। তাই এই মাসটিকে স্মরণে রেখে ও সচতেনতা বৃদ্ধির জন্য পাঁচটি সাধারণ ঝীবনধারা পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করা রইল।
স্বাস্থ্যকর খাবার: থাইরয়েডের উপসর্গগুলি এড়াতে প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা মানেই শক্তির মাত্রা উন্নত করে। দিনের বেলায় ভাতঘুম ও হাইপোথাইরয়েড সম্পর্কিত ক্লান্তিকে হঠাতে সক্ষম। সারা দিনে ছোট ছোট আকারে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে পারেন। তাতে চর্বি জমবে কম। ফাইবারের মাত্রা বেশি, এমন খাবার ও প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি খেতে পারেন।
ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রত্যেক মানুষের প্রয়োজন। যাদের থাইরয়েড রোগ রয়েছে, সপ্তাহে অনন্ত পাঁচদিনে ৩০ মিনিটের জন্য ব্যায়াম করা দরকার। নিয়মিত ব্যায়াম শক্তি বাড়ায়, ওজন কমাতে ও স্ট্রেস লেভেল কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। প্রতি সপ্তাহে অল্প অল্প করে মোচ ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। দ্রুত হাঁটা বা টোনিং ব্যায়াম করা প্রয়োজন। একেবারে একসঙ্গে কি্ছু করবেন না।
ডি-স্ট্রেস: মানসিক চাপের কারণে থাইরয়েড হরমোনের প্রতিটি থাইরয়েড রিসেপ্টর কোষের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে ইমিউন সিস্টেমও দুর্বল হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত চাপের কারণে থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ ক্রমশ কমতে শুরু করে। স্ট্রেস হাইপোথাইরয়েডিজমকে আরও গুরুতর করে তুলতে পারে। থাইরয়েডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য মানসিক নিয়ন্ত্রণ করা অবশ্যই প্রয়োজন।
যোগব্যায়াম করা, হাঁটাহাঁটি করা, বই পড়ার মতো কাজগুলি করলে মানসিক চাপ কমে। থাইরয়েড গ্রন্থিকে প্রশমিত করতে পারে। এমন কিছু কাজ করুন যাতে স্ট্রেস কমতে সাহায্য করে। জীবনধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি যোগা করা, ধ্যান করা, গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন, মেলোডি গান শুনুন, তাতে মানসিক উদ্বেগ কমে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন: শরীর খারাপ হলে তবেই আমরা চিকিত্সার জন্য দৌড়াদৌড়ি করি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে কোনও আপ-টু-ডেট থাকার জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা অবশ্য জরুরি।
গভীর ও পর্যাপ্ত ঘুম: থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাতে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে। প্রতি রাতে কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার। পর্যাপ্ত ভাল মানের ঘুম দিনের বেলায় কম ক্লান্তিবোধ করতে সাহায্য করে। একটি নির্দিষ্ট সময়ে জেগে ওঠা ও শোওয়ার কর্মসূচি মেনে চলুন। শোওয়ার আগে টিভি দেখা, মোবাইল দেখা, কফি খাওয়া এড়িয়ে চলুন।