
তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি এই বই। তাই বারেবারে সতর্ক থেকেছেন বইয়ের কাজে নিয়োজিত দেবজ্যোতি ও সৌরভ। কিন্তু অশীতিপর শিল্পী যেন ছিলেন আরও সমাহিত শান্ত। একাধিকবার এই বইয়ের প্রুফ সংশোধন করেছেন শান্তিনিকেতনের বাড়িতে বসে। প্রদর্শনীতে রাখা আছে সেই খসড়ার মূল কপিও। সেসব দেখলে রোমাঞ্চ জাগে। শিল্পের অনুরাগীরা বুঝতে পারেন কেন যোগেন এই প্রজন্মের অন্যতম এক স্রষ্ঠা!

শুধুমাত্র পুস্তক প্রকাশই নয়। কালো অ্যাক্রেইলিকে সাদা ক্যানভাসে প্রদর্শনীর মুখপাতও এঁকে দিলেন শিল্পী। সাদা ক্যানভাসে সচেতন ভাবে ঝরে পড়ল কালো রঙের ধারা।

ছোট ছোট কাজ। একই ধৈর্য, মমত্ব আর নিখুঁত পারদর্শিতায় যোগেন চৌধুরীর স্বাক্ষর বহন করে।

যোগেন চৌধুরীর চিত্রকলা বিশ্বের দরবারে সমাদৃত তাঁর চিত্রশিল্পী সত্ত্বা ছাড়াও রয়েছে আর একটি পরিচয়। যোগেন কবিতা লেখেন। পোস্টকার্ড সাইজের এই ছোট্ট কাজটিতে উঠে এসেছে তাঁর কাব্যিক সত্ত্বা। যেখানে অঙ্গাঙ্গি ভাবে আছে মহামারি।

অতিমারি, মহামারি দুনিয়াকে ওলটপালট করেছে। কিন্ত বর্ষীয়ান শিল্পীর কোথাও যেন দায় ছিল সময়ের প্রতি, অশান্ত এই সময়টার দলিল ধরে রাখার। যোগেন সেই কাজটা করলেন সিদ্ধহস্তে।

জন্ম বাংলাদেশে, কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে বেরনোর পর চিত্রকলার টানেই চলে যান প্যারিস, কাটান দীর্ঘ সময়। যোগেন চৌধুরীর জীবন আন্তর্জাতিক। তাই শান্তিনিকেতনের বাড়িতে বসেও তাঁর তুলি কালিতে উঠে আসে বালির দেবীমূর্তি।

এখন বয়স ৮০ পারতপক্ষে জনসমক্ষে আসেন না শিল্পী। তবুও ‘সাক্ষাতকার’এর উন্মোচনের সময়ে এই বই তৈরির দুই কাণ্ডারি দেবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় ও সৌরভ দে-র ডাক ফেরাতে পারেন নি যোগেন। দেবভাষা গ্যালারিতে বই উন্মোচনের মুহূর্ত।