Photo Gallery: সৌন্দর্যে পাগল করে বাধ্য করত যৌনকর্মে, বানাত নিজের গোলাম
Instagram Model Kat Torres: প্রাক্তন ব্রাজিলিয়ান মডেল তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর 'ওয়েলনেস ইনফ্লুয়েন্সার', ক্যাট টোরেস। সম্প্রতি তাঁকে মানব পাচার এবং মহিলাদের দাস বানিয়ে রাখার অপরাধে, ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত। একদিকে সৌন্দর্যে পাগল করে দিতেন ফলোয়ারদের, তার উপর করতেন কালো জাদুও।
1 / 8
ইনস্টাগ্রামের সুন্দরী মডেল। তাঁরই জঘন্য অপরাধ কাঁপিয়ে দিল নেট-দুনিয়কে। অভিযোগ, নিজের সৌন্দর্য, যৌন আবেদন দিয়ে তাঁর ফলোয়ারদের প্রলুব্ধ করতেন এই মডেল। তারপর তাদের যৌনকর্মে বাধ্য করতেন। শুধু তাই নয়, মডেল সুন্দরী তাদেরকে নিজের গোলাম বানিয়ে রেখেছিল। ইনি হলেন প্রাক্তন ব্রাজিলিয়ান মডেল তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর 'ওয়েলনেস ইনফ্লুয়েন্সার', ক্যাট টোরেস। সম্প্রতি তাঁকে মানব পাচার এবং মহিলাদের দাস বানিয়ে রাখার অপরাধে, ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মার্কিন আদালত।
2 / 8
এফবিআই-এর তদন্তে তিন মহিলার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ডিসায়ার এবং লেটিসিয়া নামে দুই মহিলা টোরেসের সঙ্গেই থাকতেন। ২০২২ সাল থেকে তাঁরা 'নিখোঁজ' ছিলেন। আরেক মহিলার নাম অ্যানা। তিনিও ২০১৯ থেকে টোরেসের সঙ্গেই থাকতেন। তবে, ২০২২-এ সুযোগ বুঝে পালিয়েছিলেন। তবে এই তিনজনই নয়, এই ঘটনা সামনে আসার পর, অন্তত ২০ জন মহিলা অভিযোগ করেছেন, ক্যাট টোরেস হয় তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। নয়তো, তাঁদের শোষণ করেছেন। এই মহিলাদের অনেকেরই এখনও মানসিক থেরাপি চলছে।
3 / 8
টোরেসের নির্যাতনের শিকার হওয়া মহিলারা দাবি করেছেন, ইনস্টাগ্রামে ক্যাট টোরেসের গরিব থেকে বড়লোক হওয়ার জাদু কাহিনিই তাঁদের আকৃষ্ট করেছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-কে তাঁরা বলেছেন, ক্যাট টোরেসের জন্ম হয়েছিল ব্রাজিলের এক দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলে। সেখান থেকে একসময় তিনি হলিউড তারকাদের সঙ্গে পার্টি করা শুরু করেন। এমনকি, হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর সঙ্গে তিনি প্রেম করছেন বলেও গুঞ্জন ছিল। বিভিন্ন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাঁর ছবি বের হত। ব্রাজিলিয়ান টিভি শোগুলিতেও তাঁকে নিয়মিত দেখা যেত। এমন এক ব্যক্তিত্ব, প্রতারণা করতে পারেন, তা কেউ ভাবতেই পারেনি।
4 / 8
একসময় টোরেসের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকতেন, এমন এক মহিলা জানিয়েছেন, হলিউডের বন্ধুদের সঙ্গে মেশার পর, 'আয়াহুয়াস্কা' নামে এক মাদকের নেশা করা শুরু করেছিলেন কাট টোরেস। এই নেশা করা শুরুর পরই এই প্রাক্তন মডেল নিজেকে, 'লাইফ ট্রেইনার এবং সম্মোহনবিদ' হিসেবে দাবি করা শুরু করেছিলেন। 'ওয়েলনেস'-এর বিষয়ে একটি ওয়েবসাইট এবং সাবস্ক্রিপশন পরিষেবা চালু করেছিলেন। সেখানে গ্রাহকদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, 'যে ভালবাসা, অর্থ এবং আত্মসম্মানের স্বপ্ন তাঁরা দেখেন', তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে।" সম্পর্ক, সুস্থতা, ব্যবসায়িক সাফল্য, সম্মোহন, ধ্যান, যোগব্যায়াম বিষয়ক ভিডিয়ো তৈরি করা শুরু করেন। সেই সঙ্গে ১৫০ ডলারের বিনিময়ে এ সকল বিষয়ে ভিডিয়ো পরামর্শ দেওয়ার পরিষেবাও চালু করেন।
5 / 8
এই সকল পরিষেবার মাধ্যমেই বেশ কিছু মহিলার মাথা খেয়েছিলেন তিনি। অ্যানাও সেই রকমই এক মহিলা ছিলেন। ২০১৯ সালে, ক্যাট টোরেসের লিভ-ইন অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে তিনি তাঁর নিউইয়র্কের বাড়িতে থাকা শুরু করেছিলেন। তাঁকে পোষ্যদের যত্ন নেওয়া, রান্না করা, কাপড় ধোয়া এবং ঘর পরিষ্কারের কাজের বিনিময়ে প্রতি মাসে ২০০০ ডলার করে বেতন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ক্যাট। কিন্তু, টোরেসের বাড়িতে গিয়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ঘর ছিল অত্যন্ত নোংরা। অ্যানাকে শুতে দেওয়া হয়েছিল একটি সোফায়, যেটায় বিড়ালের প্রস্রাবের দাগ ছিল। অবশ্য তিনি ঘুমোতে পারতেন মাত্র কয়েক ঘণ্টা। বাকি সময় কাজ করতে হত। তাঁকে কোনও বেতনও দেওয়া হত না। গোপনে বাড়ির জিমে গিয়ে কয়েক ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতেন তিনি।
6 / 8
অ্যানা পালিয়ে যাওয়ার পর, ডিজায়ার এবং লেটিসিয়াকে ভাড়া করেছিল ক্যাট টোরেস। তারা উঠেছিল ক্যাটের টেক্সাসের বাড়িতে। দ্রুত তাঁদের জীবনও নরক হয়ে গিয়েছিল। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই, ডিসায়ারকে 'স্ট্রিপ ক্লাবে' কাজ করতে পাঠানো হয়। টোরেস তাঁকে সন্মোহিত করেছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে। ডিসায়র এবং লেটিসিয়ার নিজেদের মধ্যে কথা বলাও বারণ ছিল। ঘর থেকে বের হতে গেলে অনুমতি নিতে হত। এমনকি বাথরুমে যেতে গেলেও ক্যাটের অনুমতি লাগত। এরপর ডিজায়ারকে বেশ্যাবৃত্তিও করতে হয়। ক্যাট তাঁকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জনের লক্ষ্য দিত। তা পূরণ করতে না পারলে, রাতে বাড়ি ফেরার অনুমতি ছিল না তাঁর। এর জন্য অনেকদিন তাঁকে রাস্তায় ঘুমিয়েও কাটাতে হয়েছে।
7 / 8
গত সেপ্টেম্বরে, ডিজায়ার এবং লেটিসিয়ার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারবর্গ তাঁদের খোঁজ করা শুরু করেছিলেন। সোশ্য়াল মিডিয়ায় দুজনের ছবি দিয়ে প্রচার শুরু করা হয়। সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি এড়াতে, ক্যাট টোরেস তাদের টেক্সাসের বাড়ি থেকে মেইনের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে, দুজনকে দিয়ে ইনস্টাগ্রামে ভিডিয়োও পোস্ট করিয়েছিলেন ক্যাট। ভিডিয়োয় তারা বলেছিল, তাদের বন্দি করা হয়নি। তাদের পরিবার-পরিজনদের তাঁদের খোঁজ করা বন্ধ করতে বলেছিলেন।
8 / 8
কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। শীর্ষস্থানীয় ব্রাজিলিয়ান মডেল, ইয়াসমিন ব্রুনেট এরপর আঙুল তোলেন টোরেসের দিকে। তিনিই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এরপর, সাও পাওলোর ফেডারেল আদালত টোরেসের বিরুদ্ধে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। ২০২২-এর সালের নভেম্বরে, তাঁকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাজিলে ফিরিয়ে এনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। চলতি বছরের ২৮ জুন, টোরেসকে মানব পাচার এবং মহিলাদের ক্রীতদাস হতে বাধ্য করার দায়ে তাঁকে আট বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়।