
এই বছরে বাজেটে মধ্যবিত্তের লক্ষ্মী হয়ে ধরা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ তার অষ্টম কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেন নির্মলা। সেই বাজেট অনুসারে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও কর দিতে হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। বেতনভোগী করদাতাদের জন্য সেই সীমা হবে ১২.৭৫ লক্ষ টাকা, কারণ ৭৫,০০০ টাকা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশনের সুবিধাও পাবেন তাঁরা।

প্রতি বছর, যখন কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হয়, তখন যে বিষয়টি জানার জন্য সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে বসে থাকে তা হল, আয়করে ছাড় এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের কী দাম হতে চলেছে। যেহেতু আয়কর সরাসরি বেতনভোগী কর্মচারী, ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত জনগণ সকলকে প্রভাবিত করে, জনগণের আর্থিক পরিকল্পনা এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অনুভূতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

নিয়মমাফিক সকলকে নিজের বার্ষিক আয়ের একটা অংশ সরকারকে ট্যাক্স হিসাবে দিতে হয়। তবে আপনি কি জানেন, ভারতে এমন একটি রাজ্য রয়েছে, যেখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের কোনও কর দিতে হয় না।

সিকিম হল ভারতের একমাত্র আয়কর-মুক্ত রাজ্য। সংবিধানের ৩৭১(এফ) অনুচ্ছেদ এবং আয়কর আইনের ধারা ১০(২৬এএএ) এর অধীনে, এই রাজ্যের বাসিন্দাদের কোনও আয়কর দিতে হয় না। ১৯৭৫ সালে ভারতের সঙ্গে সিকিম যুক্ত হওয়ার সময়, জনগণের অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশেষ বিধান চালু হয়েছিল।

মনে রাখবেন, ২৬ এপ্রিল, ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সিকিমে বসবাসকারী যেসব ব্যক্তির সঠিক নিয়ম মেনে সিকিমের বাসিন্দা হওয়ার বৈধ প্রমাণ রয়েছে, কেবল তাঁদেরকেই আয়কর দিতে হয় না। ভারতীয় সিকিউরিটিজ এবং মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার সময় সিকিম বাসিন্দাদের PAN নম্বরের প্রয়োজন হয় না।

সিকিম সাবজেক্ট রেগুলেশন, ১৯৬১-এর অধীনে সিকিমের বাসিন্দা হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত সব ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে আয়কর ছাড় পেয়ে থাকেন। কেবল নিয়মিত উপার্জনই নয়, সুদ, অনান্য লভ্যাংশ এবং অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়ের জন্য কোনও আয়কর দিতে হয় না। সিকিম ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে কোনও আয়কর দিতে হয় না।

ভারতের অনান্য সব রাজ্যের নাগরিকদের নির্দিষ্ট আয়কর স্ল্যাবের অধীনে কর প্রদান করতে হয়। সেই আয় যদি কোটি টাকা ছোঁয় তাহলে করের হার আরও বেশি। কিন্তু সেই সব কিছুই দিতে হয় না সিকিমের এই বাসিন্দাদের। এমনকি তাঁদের আয়কর রিটার্ন ফাইল জমা করতে হয় না।

করের ক্ষেত্রে এই ব্যপক ছাড় শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সমৃদ্ধিই বাড়ায় না বরং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেকটা সুবিধাজনক। এর ফলে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও সিকিমের বাসিন্দাদের আগ্রহ চোখে পড়ে। (সব ছবি - Getty Images and PTI)