
ঋষি কাপুর। বলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চকোলেট বয় থেকে 'অ্যাংরি ইয়ং ম্যান'। দু'বছর আগে মারণরোগ কেড়ে নেয় তাঁকে। শেষ জীবনে দুই সন্তান ও স্ত্রী নিতু কাপুরের সেবা শুশ্রুষাই আঁকড়ে ধরেছিলেন তিনি। সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন কিন্তু 'শর্মাজি নমকিন' ছবির মাঝপথে রেখেই মারা যান ঋষি। বুঝতে পেরেছিলেন হাতে বেশি সময় নেই। শেষ ইচ্ছে জানিয়েছিলেন পরিবারকে। অথচ ভাগ্যের কী পরিহাস! ঋষির শেষ ইচ্ছে অপূর্ণই রয়ে গেল তাঁর জীবৎকালে। যা চেয়েছিলেন তা আর হল না। এমনকি শেষের দিকে নাকি এক ভয়ঙ্কর অপরাধবোধও গ্রাস করত তাঁকে। কেন?

'শ্রী ৪২০' ছবিতে শিশুশিল্পীর ভূমিকায় প্রথম আবির্ভাব হয় স্ক্রিনে। অভিনয় করেছেন 'মেরা নাম জোকার' ছবিতেও। ২১ বছরে ডেবিউ হয় বলিউডে। খুঁজে পান নিতু কাপুরকে। করেন বিয়েও।

কাপুর পরিবারের রীতি অনুযায়ী ঝকঝকে কেরিয়ার ছেড়ে দিয়েছিলেন নিতু শুধু ঋষির ভালবাসায়। দুই সন্তানের জন্মও দেন তাঁরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হিরো নিতু ক্রমশ পরিণত হন চরিত্রাভিনেতাতে।

ভালবাসতেন ইন্টেরিয়ার ডিজাইন। কিন্তু ২০১৮ সালে হঠাৎই ধরা পড়ে লিউকোমিয়া। অর্থাৎ ব্লাড ক্যানসার। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। সে সময় ছেলে রণবীর কাপুর মুম্বইয়ে নিজের কাজ ছেড়ে ছিলেন বাবার কাছে। বাবাকে দেখাই একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল তাঁর। সঙ্গে ছিলেন নিতু কাপুরও।

পরবর্তীকালে রণবীর জানিয়েছেন সে সময়েই নাকি অসম্ভব এক অপরাধবোধ কাজ করত ঋষির মনে। মনে হত ছেলের কেরিয়ার ধ্বংসের পিছনে তিনিই দায়ী। মুম্বইয়ে সব কিছু ছেড়ে বাবার কাচ্ছে-- অভিনেতা বাবা এ যন্ত্রণা যেন কিছুতেই নিতে পারতেন না। বারবার ছেলেকে নাকি বলতেন, 'ফিরে যাও'। কিন্তু ছেলে কি তা পারে? রণবীর পারেননি। ছবি হাতছাড়া হয়েছে। তিনি মেনে নিয়েছেন নিয়তি ভেবেই।

ঋষির সাধ ছিল ছেলের সঙ্গে আলিয়ার বিয়ে দেখে যাবেন। তা আর হয়নি। ছেলে বিয়ে করেছেন এই এপ্রিলে। তার বছর দুয়েক আগেই আরও এক এপ্রিলের শেষ দিনে চলে যান ঋষি কাপুর, রেখে যান শূন্যতা।